দরিদ্র জনগোষ্ঠির প্রাথমিক চিকিৎসার একমাত্র ভরসা কমিউনিটি ক্লিনিক

মামুন আহম্মেদ

আপডেট : ০৪:৪১ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০১৯ | ২৩০১

কমিউনিটি ক্লিনিক

বাগেরহাট জেলায় অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠির কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো। বিনামূল্যে নানা রোগের চিকিৎসাসহ বিনামূল্যে ঔষুধ সরবরাহ করার ফলে জেলার দরিদ্র মানুষ গুলোর স্বাস্থ্য সেবায় ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়ে এ ক্লিনিক গুলো।

সরোজমিনে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে কথা হয় বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের বৃদ্ধা আয়শা বেগমের সাথে। তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, শরীর অনেক দুর্বল, হাত-পা ঝিমঝিম করে। ক’দিন ধরে পায়খানাও হচ্ছে না। এসব নানা সমস্যা নিয়ে বাড়ির পাশের কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়েছিলাম। এদের সেবার মান অনেক ভালে। আজ কমিউনিটি ক্লিনিক আছে বলেই আমি সহজে চিকিৎসা পাচ্ছি। না হলে টাকা খরচ করে শহরে গিয়ে ডাক্তার দেখাতে হতো। এছাড়া এখান থেকে ফ্রি ঔষুধও দেয়া হয়। তার মত আরও অনেকে জানালেন এ কমিউনিটি কিনিকই আজ তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার একমাত্র ভরসা।

কথা হয় ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের পূর্ব সায়ড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা ঝিমি মন্ডলের সাথে। তিনি এসেছেন চোখের সমস্যা, ডায়াবেটিস, কোমরে ব্যাথা ও শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে। দু’টাকার বিনিময়ে টিকিট কেটে ৩০ টাকার বিনিময়ে ডায়াবেটিস পরীা করেন তিনি। অনেকেই বিনা পয়সায় চিকিৎসা নেন এ ক্লিনিক থেকে। দু’টাকা নেয়া হয় কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রাথমিক মেইনটেন্যান্সের জন্য। সুফিয়া বেগমের ডায়াবেটিস থাকলেও এজন্য কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে কোন ওষুধ দেয়া হয় না। কারণ যে ২৭ প্রকারের ওষুধ কমিউনিটি ক্লিনিকে দেয়া হয় সে তালিকায় ডায়াবেটিসের ওষুধ নেই। এটি একটি বড় সমস্যা বলেও জানালেন ঝিমি মন্ডলসহ অন্যান্য রোগীরা।

‘শেখ হাসিনার অবদান, কমিউনিটি ক্লিনিক বাঁচায় প্রাণ’ এ শ্লোগান নিয়ে বাগেরহাট সদর উপজেলায় বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে ২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক। এজন্য কমিউনিটি ক্লিনিককে শুধু প্রাথমিক চিকিৎসাস্থল নয়, বরং আরও বৃহৎ আকারে বিশেষ করে যাতে একজন মেডিকেল অফিসার পর্যায়ের চিকিৎসক পদায়ন করে আরও বর্ধিত আকারে কমিউনিটি ক্লিনিকের পরিধি বাড়ানো হয় এমন দাবি স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠন বাঁধনের ইয়ূথ গ্রুপের সদস্যদের।

কাড়াপাড়া ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি সুফল কুমার পাল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, মানুষ একটু সচেতন হলেই বেশকিছু রোগ থেকে রা পাওয়া সম্ভব। তার মতে, কমিউনিটি কিনিকে আসা রোগীদের মধ্যে নারীরাই বেশি। কমিউনিটি ক্লিনিকে মেডিকেল অফিসার অথবা উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার পর্যায়ের চিকিৎসক পদায়ন করা হলে সেবার মান আরও বাড়বে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।


বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জি,কে সামছুজ্জামান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কমিউনিটি কিনিক। বাগেরহাট সদর উপজেলায় বর্তমানে ২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক চলমান রয়েছে। এসব কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার) সপ্তাহের ছয়দিন (শুক্রবার বাদে) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান, সম্প্রারিত টিকাদান কার্যক্রম, অসংক্রামক রোগ, পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত