জনসাধারনের ভোগান্তি চরমে

খানাখন্দে ভরা কচুয়া - সাইনবোর্ড আঞ্চলিক মহাসড়ক

মামুন আহম্মেদ

আপডেট : ০৫:১৭ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০১৯ | ৪৮১৭

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার কচুয়া - সাইনবোর্ড আঞ্চলিক মহাসড়কটি এখন জনসাধারনের জন্য ভোগান্তির কারন হয়ে দাড়িয়েছে। বাগেরহাট সড়ক ও জনপথের আওতাধিন সাড়ে সাত কিলোমিটারের এ সড়কটি এখন ছোট-বড় শতাধিক খানাখন্দে ভরপুর। এর ফলে সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয় প্রতিদিন এ সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে পৌছেছে, যার ফলে ছোট-খাটো দূর্ঘটনাও ঘটছে। গত এক বছর ধরেই এ সড়কটির বেহাল অবস্থায় পরে থাকলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে রাস্তা সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে যার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। তবে এলাকাবাসির দাবী দ্রুত এ সড়কটি সংস্কার করা না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের র্দূঘটনা ঘটতে পারে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় শতাধিক বড়বড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরা সড়কটি। একটু বৃষ্টি হলেই পিচঢালা এ রাস্তা পরিনত হয় কাদাময় সড়কে। সাইনবোর্ড থেকে কচুয়ার দিকে যেতে দোবাড়িয়াসহ কয়েকটি স্থানে প্রায়ই ফেসে যায় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও মালবাহী যানবাহন। তখন সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পথচারীদেরও রাস্তার পাশে নেমে চলাচল করতে হয়। কিছু স্থানে কাঁচা রাস্তার মত কাঁদাও রয়েছে। সড়কটির দোবাড়িয়া নামক স্থানে একটি কোম্পানির কাভার্ড ভ্যান ফেসে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। ঘন্টা খানেক চেষ্টার পরে একটি বুলডোজারের সহায়তায় কাভার্ড ভ্যানটিকে ওই জায়গা থেকে সরানো হয়। এছাড়া একটি ইটবাহী ট্রাকও ফেঁসে যায় একই জায়গায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ট্রাকের ইট নামিয়ে ট্রাকটি গন্তব্যে নেয় চালক।

স্থানীয় বেশ কয়েকজন শিার্থী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, স্কুল ও কলেজে যাওয়ার সময় প্রায়ই গর্তের মধ্যে পড়ে ভ্যান উল্টে যায়। কয়েকবার দূর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া ট্রাক ও অন্যান্য মালবাহি গাড়ি যাওয়ার সময় গর্তের পানি ছিটে এসে আমাদের পোশাক নস্ট করে দেয়। রাস্তাটি সংস্কার করা হলে একটু শান্তি মত স্কুল কলেজে যেতে পারতাম।

ইজি বাইক (ব্যটারি চালিত রিক্স) চালক সোহেল শেখ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এই ইজি বাইকটি চালিয়ে আমি জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু সড়কে বড় বড় গর্ত হওয়ার কারনে প্রায়ই উল্টে পড়তে হয়। যার কারনে আমার গাড়ীর বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়। এ কারনে আমি আর্থিক তির সম্মুখীন হচ্ছি।

ট্রাক চালক আসলাম শিকদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, নিয়মিত কচুয়া বাজারে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যেতে হয় আমার। কিন্তু সড়ক এত খারাপ যে মাঝে মাঝেই দূর্ঘটনায় পড়তে হয়। গতকালও আমার ট্রাকটি ফেসে গেছিল।

ব্যবসায়ী প্রদিপ মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ব্যবসা করতে হলে কচুয়া থেকে বাগেরহাটের ব্যবসায়ীদের সাথে সড়ক পথে মালামাল আনা নেওয়ার জন্য সব সময় যোগাযোগ করতে হয়। কিন্তু সাইনবোর্ড থেকে কচুয়া রাস্তার যে অবস্থা গাড়ীর চেয়ে পায়ে হেটে চলাচল করা আরো ভালো।

কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা.সোহানা সুলতানা মৌ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, প্রসুতি মায়েদের আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে অন্যত্র পাঠিয়েছি, রাস্তার বেহালদশার কারনে সন্তান ভুমিষ্ঠ হয়েছে। দুর্ভোগ লাঘবে কচুয়া হাসপাতাল থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত রাস্তাটির দ্রুত মেরামতের দাবী জানান।

বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাইনবোর্ড থেকে কচুয়া পর্যন্ত সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়ক সংস্কার, সম্প্রসারণ ও কচুয়া বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে নতুন সেতু নির্মান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স কাজ শুরু করছে। ২০২০ সালে ৩০ জুন পর্যন্ত এ কার্যাদেশের মেয়াদ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষের আশা প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়া বালু ও ইটের খোয়া ফেলে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করার জন্য ইতিমধ্যেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত