বাগেরহাটে ইউপি চেয়ারম্যান নির্দেশে

তরুনীকে গনধর্ষণ, থানায় মামলা

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৫:০৫ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট ২০১৭ | ১৬২৩

তরুনীকে গনধর্ষণ

বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিন এর নির্দেশে (২৪) বছর বয়সী এক তরুনীকে গনধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাতে সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের রনজিতপুর গ্রামের একটি বাগানে নিয়ে চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার সহযোগীরা ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। পরে খবর পেয়ে রাত একটার দিকে পুলিশ ধর্ষিতা ওই তরুণীকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

বৃহষ্পতিবার সকালে বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহদাৎ হোসেন ও বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাতাব উদ্দিন হাসপাতালে ধর্ষিতা ওই তরুণীকে দেখতে যান এবং তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। দুপুরে ধর্ষিতার ডাক্তারী পরীক্ষা বাগেরহাট সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাতে মারধর ও ধর্ষণের শিকার হওয়া এক তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে গাইনী ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।


এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগেরহাট মডেল থানায় ধর্ষিতার বড় বোন (আদুরী বেগম) বাদী হয়ে আওয়ামীলীগ নেতা চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। তবে পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।


হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন তরুণী বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের কাছে বলেন, গত শুক্রবার আমি বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের উত্তর খানপুর গ্রামের ভগ্নিপতি তায়েব আলীর বাড়িতে বেড়াতে আসি। বুধবার সন্ধ্যায় আমার বড় বোন আদুরী বেগমের সাথে ঈদের কেনাকাটা করতে পাশ^বর্তি ফয়লাহাট বাজারে যাই। সেখানে কেনাকাটা করে ভ্যানযোগে বাড়ি ফেরার পথে রনজিতপুর গ্রামের কাছে পৌছলে তিনটি মোটরসাইকেলে চেয়ারম্যানসহ আটজন আমাদের ভ্যানটি গতিরোধ করে। তারা আমার বড় বোন ও আমাকে মারধর করে আমাকে ভ্যান থেকে নামিয়ে পাশের একটি বাগানে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে চেয়ারম্যান দাঁড়িয়ে থেকে তার সহযোগিদের আমাকে ধর্ষণ করতে বললে তারা তিনজনে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে চলে যায়। আমি চেয়ারম্যান ছাড়া অন্য কাউকে চিনতে পারিনি। পরে আমার বোন স্থানীয় লোকজন নিয়ে আমাকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ সেখানে এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।


বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাৎ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ রাতেই খবর পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। বৃহস্পতিবার সকালে আমরা হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছি এবং তার জবানবন্দি গ্রহণ করেছি। হাসপাতালে তার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মেয়েটির বড় বোন বাদী হয়ে থানায় ইউপি চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।


অভিযোগ অস্বীকার করে বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমি বুধবার রাতে আমার লোকজন নিয়ে ওই পথ দিয়ে আসছিলাম। এসময়ে আমার গ্রামের তায়েব আলীর স্ত্রী আদুরী বেগম ও তার বেড়াতে আসা শ্যালিকা মাহমুদাকে ভ্যানযোগে আসতে দেখি। তায়েব আলীর পরিবারের কারনে আমার গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তাই ভ্যানচালককে ওদের ভ্যানে না নিতে গালমন্দ করলে ওরা চলে যায়। এরপর আমি বনজিতপুর গ্রামের চায়ের দোকানে আমার লোকদের নিয়ে চা খেয়ে বাড়ি চলে আসি। পরে আমি জানতে পারলাম আমার রাজনৈতিক দলের প্রতিপক্ষরা আমাকে ও আমার সমর্থকদের ফাঁসাতে মিথ্যা ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত