ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবি

সাড়ে তিন মাসেও সন্ধান মেলেনি  দুবলার শুঁটকি পল্লীর ৯ জেলের

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৫:৫০ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | ১৫৮

বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ হওয়ার সাড়ে তিন মাসেও সন্ধান মেলেনি দুবলার চরের শুঁটকি পল্লীর ৯ জেলের। গত বছরের ১৭ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় মিধিলির আঘাতে ১৪ জেলেসহ এফবি আল্লাহর দান নামে একটি ফিশিং ট্রলার ডুবে যায়। ওই সময় সাগরে ভাসমান অবস্থায় ৬ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। কিন্তু ৯ জেলের সন্ধান মেলেনি আজও।


এদিকে, পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরের শুঁটকি মৌসুমও প্রায় শেষের পথে। আগামী ২৮ মার্চ শেষ হবে শুঁটকি পল্লীর কার্যক্রম। সবকিছু গুটিয়ে নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাবেন জেলে, মহাজন ও বহাদ্দরা। কিন্তু সাগরে হারিয়ে যাওয়া জেলেদের পরিবারকে কি জবাব দেবেন সেই চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিখোঁজ জেলেদের মহাজনরা।


নিখোঁজ জেলেরা হলেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আমিলিশ গ্রামের করিম আকনের ছেলে কালু আকন, একই গ্রামের হরিসন্ন দাসের ছেলের হরিরঞ্জন দাস, চকরিয়া উপজেলার টেইটং গ্রামের সেনায়াত আলীর ছেলে আমির হোসেন, একই উপজেলার ফাইসা আলী গ্রামের হামিনি জলদাসের ছেলে সুধাংসু জলদাস, বাঁশখালী উপজেলার শেখেরখীল লালজীবন গ্রামের ইসলাম মিয়ার ছেলে নুরুল আবছার, একই গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে নেছার, হাবিবুর রহমানের ছেলে আবুল কাসেম, জামাল মিয়া (পিতা অজ্ঞাত) এবং নুরুল ইসলাম (পিতা অজ্ঞাত)।

নিখোঁজ জেলেদের মহাজন দুবলার চরের অফিস কিল্লার শুঁটকি ব্যবসায়ী ইসাহাক বহদ্দার ও আবুল কালাম বহদ্দার জানান, গত বছরের ১৭ নভেম্বর তাদের এফবি আল্লাহর দান ট্রলারে ১৪ জন জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরছিলেন। এমন সময় ঘূর্ণিঝড় মিধিলির ঝড় শুরুর হয়। ঝড়ের মধ্যে কূলে ফেরার সময় ট্রলারটি ডুবে যায়। ওই সময় নিকটবর্তী অন্য একটি ট্রলারের জেলেরা ভাসমান অবস্থায় ৬ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করে। কিন্তু বাকি ৯জনকে তারা উদ্ধার করতে পারেনি।


এই বহদ্দাররা জানান, নিখোঁজের পর থেকে তারা বাংলাদেশ এবং ভারতের উপকূলীয় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাদের কোনো সন্ধান করতে পারেননি। এখন তারা জীবিত আছেন না মরে গেছের তা বলতে পারছেন না। তাদের পরিবারও উৎকণ্ঠায় পড়েছেন। এক মাস পরই তাদের শুঁটকি মৌসুম শেষ হবে। এলাকায় ফিরে সেসব পরিবারকে কি বলে শান্তনা দেবো তা-ই ভেবে পাচ্ছি না।


এব্যাপারে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, জেলে নিখোঁজের বিষয়টি তখন আমাদের কেউ জানায়নি। ঘূর্ণিঝড় মিধিলির পরে বনবিভাগের পক্ষ থেকে দুবলার শুঁটকি পল্লীর প্রত্যেকটি চরে মাইকিং করে জেলে নিখোঁজ বা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়। কিন্তু তখন এসব জেলে নিখোঁজের বিষয়টি মহাজনরা আমাদের বলেনি। এখন আমাদের কিছুই করার নেই।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত