চাহিদা থাকলেও ব্রী-৫২ জাতের বীজ সরবরাহ কম

শরণখোলায় অবিক্রিত বীজ নিয়ে বিপাকে ডিলাররা

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০২:৪৮ পিএম, সোমবার, ৯ জুলাই ২০১৮ | ১০০৬

শরণখোলায় বিএডিসি’র উচ্চ ফলনশীল (উফশী) বীজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ডিলাররা। উফশী জাতের ধানের বীজতলা তৈরীর সময় শেষ হলেও বিক্রি না হওয়া ৪ মেট্রিকটন বীজ এখন ডিলারদের গলার কাটায় পরিনত হয়েছে। অবিক্রিত বীজ সিদ্ধ করে চাল হিসেবে বিক্রি করলেও মোটা অংকের লোকসান গুণতে হবে বলে ডিলাররা জানান।


একদিকে, জলাবদ্ধতার কারণে ব্রী-৫২ জাতের ধানের চাহিদা থাকলেও তা সরবরাহ খুবই কম। অন্যদিকে ব্রী-৪৯ জাতের বীজ পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও তা চাষীদের অনাগ্রেহের কারনে এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ ও ডিলারদের সূত্রে জানা গেছে।


উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শরণখোলায় এবছর ৯ হাজার ২৫০ হেক্টর জমির মধ্যে ৪হাজার হেক্টর উচ্চ ফলনশীল জাত চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী উপজেলার চারটি ইউনিয়নে নিযুক্ত চার জন ডিলারের মাধ্যমে কৃষকদের বিআর-৫২, ব্রী-৪৯ ও ১১ জাতের বীজ সরবরাহ করে বিএডিসি।

শরণখোলার বিএডিসি’র ডিলার স্বপন কুমার নাগ, মো. সরোয়ার হোসেন ও শহিদুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এবছর কৃষকদের চাহিদা ব্রী-৫২, কিন্তু সরবরাহ পাওয়া গেছে খুবই কম। এদিকে, চলতি মৌসুমে ৪৯ জাতের এ ধানের বীজতলা তৈরীর সময় জুন মাসেই শেষ গেছে। কিন্তু তাদের গুদামে এখনও ৪ মেট্রিকটন বীজ অবিক্রিত রয়ে গেছে। ওই বীজ এবছর আর কোনো কাজে আসবে না। বাধ্য হয়ে এখন এই বীজধান চাল বানিয়ে বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এর পরও তাদের মোটা অংকের লোকসান গুণতে হবে।


উপজেলার রাজৈর গ্রামের চাষী বাবুল হাওলাদার, আমড়াগাছিয়ার জামাল হাওলাদার, উত্তর রাজাপুরের আলামীন ও তাফালবাড়ির মিলন হালদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইস গেটগুলো বন্ধ থাকায় মাঠে পানি জমে রয়েছে। যার কারণে পুরাতন ব্রী-৫২ জাত ছাড়া জলাবদ্ধতায় উফশী জাতের ধান চাষাবাদ সম্ভব না। তাই তারা উফশী জাত না কিনে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫২ জাত সংগ্রহ করে বীজতলা তৈরী করেছেন।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র সরকার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, জলাবদ্ধতার কারণে এবছর চাষিরা ব্রী-৫২ জাতের মোটা ধান চাষে আগ্রহী হওয়ায় উচ্চ ফলনশীল ৪৯ জাতের কিছু বীজ ডিলারদের কাছে অবিক্রিত রয়েছে।


বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. লিয়াকত আলী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, সরকার চাষীদের সরকার চাষীদের উচ্চ ফলনশীল নতুন নতুন জাত চাষে উদ্বুদ্ধ করছে। ব্রী-৫২ জাতের ধান বেশি পানিতে ভালো ফলন হয়। শরণখোলায় এবছর ৫২ জাতের চাহিদা বেশি থাকায় ৪৯ জাতের বীজ অবিক্রিত রয়ে গেছে। তবে, ধীরে ধীরে পুরাতন বিআর-১১ বীজ সরবরাহ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত