মোংলায় মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করে চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগ

প্রভাবশালীর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে কৃষক পরিবার

মাসুদ রানা, মোংলা

আপডেট : ১২:১৯ এএম, রোববার, ২১ জানুয়ারী ২০২৪ | ১৬৫

মোংলায় মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করে মালিকানা একটি চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ ঘটনা নিয়ে কয়েক দফা মালিশ বৈঠক হলেও কোন সুরাহ মেলেনি। ফলে চিংড়ি ঘেরটি দখল নিয়ে হামলা-মামলায় জড়িয়েছে বিবাদমান দু’গ্রুপ। উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রামে ওই মৎসা ঘেরটি নিয়ে চরম উত্তেজনে বিরাজ করছে। এলাকার প্রভাবশালী চাপের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ওই অসহায় পরিবারটি। উদ্ভুদ এমন পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার দুপুরে মোংলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক উজ্জাল ও তার পরিবার। অভিযোগ পৈত্তিক সম্পত্তি জবর দখলকারীদের প্রাণনাশের হুমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পরিবারের সদস্যরা।

লিখিত বক্তব্যে কৃষক উজ্জল মজুমদার বলেন, সাতঘরিয়া গ্রামে তার পৈত্তিক ৬ বিগা জমিতে একটি চিংড়ি ঘের রয়েছে। তার বাবা বিধান মজুমদারের কাছ থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর হতে এ চিংড়ি ঘেরটি ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ বছরের জন্য প্রতিবেশী কালাম শেখেকে ধান ও মাছ চাষের বার্ষিক (হাঁড়ি) ইজারা প্রদান করেন। ২০১৯ সালে বিধান মজুমদারের মৃত্যু বরণ করে এবং ২০২০ সালে ইজারা চুক্তি শেষ হলেও ২০২১ সাল পর্যন্ত মৎস্য ঘেরটির জোর পুর্বক জবরদখল করে রাখে কালাম শেখ ও লোকজন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠকে ২০২২ সালের মৎস্য ঘেরের মালিকানা ফেরৎ পায় পূত্র উজ্জল ও তার পরিবার। অভাব অনাটনের কারনে মৎস্য ঘেরটি জনৈক অন্তর রায় ও বিপুল মন্ডলের কাছে ৩বছর মেয়াদী ইজারা প্রদান করে কৃষক উজ্জল পরিবার। তারা ২ বছর ধরে চিংড়ি ঘের ভোগ দখল করলেও হঠাৎ গত ১১ জানুয়ারি মৃত বিধান মজুমদারের স্বাক্ষর জাল করে চিংড়ি ঘেরটি জবর দখলে নেয় পূর্বের ইজারা গ্রহীতা কালাম শেখ সহ একটি প্রভাবশালী মহল। একই সঙ্গে মৎস্য খামারের কর্মচারীদের মারধর ও মাছ লুট সহ ভাংচুর করা হয় ঘর-স্থাপনা। এ ঘটনায় গত ১৪ জানুয়ারি বিপুল মন্ডল থানায় মামলা দায়ের করলেও দখলদারদের কবলে রয়েছে মৎস্য খামারটি।
অপরদিকে মামলার বাদি ও কৃষক পরিবারের সদস্যদের নানভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। প্রভাবশালী এ মহলটির প্রতিনিয়িত হুমকি-ধাকেিত বাড়ি ছেড়ে এখন অন্যাত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। এ সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী কৃষক পরিবারের সদস্যরা সহ প্রতিবেশীরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে এ প্রসঙ্গে কালাম শেখ বলেন, বিধান মজুমদারের কাছ থেকে ২০২১ সালের ২১ মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পূনরায় মৎস্য খামারের ইজারা চুক্তি নিয়েছেন। কিন্তু বিধান মজুমদারের মৃত্যুর ২ বছর পর কিভাবে পূনরায় ইজারা চুক্তি সহ চিংড়ি ঘেরের দখলে নিয়েছেন তা স্পস্ট করতে পারেননি।
এ প্রসঙ্গে মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম আজিজুল ইসলাম জানান, ঘের দখলের বিষয়টি নিয়ে মামলা রয়েছে এবং পুলিশ এ বিষয় তদন্ত করছে। পুনরায় এ ঘের সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কেউ সদস্যার সৃষ্টি করে এবং তদন্তে প্রমানিত হয় তবে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানায় তিনি ।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত