পশুর চ্যানেল ড্রেজিংয়ের সুফল,

সাড়ে ৮ মিটার গভীরতার জাহাজ মোংলা বন্দর জেটিতে নোঙ্গর

মাসুদ রানা, মোংলা

আপডেট : ০১:১৫ এএম, শুক্রবার, ৪ আগস্ট ২০২৩ | ২৭৩

মোংলা সমুদ্র বন্দরে এই প্রথমবারের মতো সাড়ে ৮ মিটার গভীরতা সম্পন্ন কন্টেইনারবাহী জাহাজ “এমভি মাস্ক নুসানতারা” নঙ্গর করেছে বন্দর জেটিতে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাহাজটি ৯ নম্বর জেটি এসে ভিড়ে। এ বারের চালানে ৪শ ৮৯ টিউজ কন্টেইনার নিয়ে আসে এ বানিজ্যিক জাহাজটি। এর আগে গত ২৫ জুন ৮ মিটার গভীরতার একটি কন্টেইনারবাহী জাহাজ এই বন্দরে এসেছিল।
মোংলা বন্দর কর্তৃপরে সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, গত ২৫ জুন বিকাল ৪টায় সর্বশেষ বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে পানামার পতাকাবাহী ১৭২ মিটার দৈর্ঘ্যের এমভি ফিলোটিমো (গিয়ারলেস জাহাজ) জাহাজটি নোঙ্গর করেছিল। জাহাজটিতে ৭৫০ টিইউজ কন্টেইনার বোঝাই করে সরাসরী মোংলা বন্দরের জেটিতে এসে পৌছায়৷ এর মধ্যে ২১১টি ৪০ ফিট কন্টেইনার এবং ৩২৮টি ২০ ফিটের কন্টেইনার ছিল। আর ২০২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর এবং ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ এবং ২৫ জুন কন্টেইনারবাহী ৮ মিটারেরও বেশী গভীরতা সম্পন্ন জাহাজ বন্দরের জেটিতে আগমন করেছিল।
আর বর্তমানে “এমভি মাস্ক নুসানতারা” নামে সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের একটি বানিজ্যিক জাহাজ মোংলা বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে এসে নঙ্গর করেছে। ওই জাহাজ থেকে বিকালের পালায় ৪৮৯ টিইউজ কন্টেইনার খালাস করা হবে। এছাড়া মোংলা বন্দর থেকে আরো ২৬৩ বক্স অর্থাৎ ৩শ ৬৭ টিইউজ রপ্তানী যোগ্য কন্টেইনার বোঝাই করা হবে বলে জানায় তিনি।
মোংলা বন্দর কর্তৃপরে উপ-সচিব মাকরুজ্জামান বলেন, বন্দরের জেটি এলাকায় প্রতিনিয়ত ম্যান্টেনেজ ড্রেজিং চলমানের ফলে মোংলা বন্দরের জেটিতে এখন বেশী ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে আর কোন সমস্য হচ্ছে বলেই আমাদের সাফল্য অর্জিত হয়েছে। পশুর চ্যানেলে ও জেটি ফ্রন্টে ড্রেজিংয়ের ফলে এখন ৮ থেকে সাড়ে ৮ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো অনায়াসে সম্ভব হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দণি-পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। তার মধ্যে মোংলা বন্দর কর্তৃপ অন্যতম। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকা সহ এর আশপাশ জেলাগুলো ব্যাবসায়ীরা এখন মোংলা বন্দর ব্যাবহার করতে শুরু করেছে। ফলে আগের তুলনায় এ বন্দর দিয়ে তৈরী করা গার্মেন্টস পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য রফতানি অনেক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপরে সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, মোংলা বন্দর জেটিতে সাড়ে আট মিটার গভীরতা সম্পন্ন জাহাজ ভেড়ায় বন্দরের জন্য একটি নতুন অধ্যায় সূচিত হলো। বন্দরের সমতা বেড়েছে কয়েকগুণ। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলেই এই বন্দর এখন বিশ্ব বাজারে একটি আধুনিক ও লাভ জনক বন্দরে রূপান্তরিত হয়েছে। এছাড়া, ৯০ দশকে এক সময় মৃত মোংলা বন্দর এখন এখন কর্মমুখর বন্দরে পরিনত হয়েছে। অধিকাংশ ব্যাবসায়ীরা মোংলা বন্দর ব্যাবহার করতে আগ্রহী হচ্ছে। তাদের আমদানী-রপ্তানী যোগ্য বেশীর ভাগ পন্য এখন মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস-বোঝাই করা হচ্ছে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে এ বন্দর হবে বিশ্বের বানজ্যিক বাজারে একটি পরিবেশ বান্ধব লাভ জনক বন্দরের রুপান্তিত হবে বলে জানায় বন্দরের এ কর্মকর্তা।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত