বাগেরহাটে আদালতে মামলা থাকা অবস্থায় অবৈধভাবে নিয়োগ 

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ১২:১৮ এএম, মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট ২০২২ | ৫১০

প্রতিকী ছবি

আদালতে মামলা থাকার পরেও নিয়ম বহির্ভুতভাবে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বিকে মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের তিন পদে নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার ও প্রধান শিক্ষক মীর নজরুল ইসলাম ঘুষ গ্রহনের মাধ্যমে এই নিয়োগ দিয়েছেন। কমিটির শিক্ষানুরাগী সদস্য মোঃ মতিয়ার রহমান খান এমন অভিযোগ করেছেন।

বিকে মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও বাগেরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরসহ বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া কাগজপত্রে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নৈশপ্রহরী ও নিরাপত্তাকর্মী পদে নিয়োগের জন্য ২৯ জুন একটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। এই তিনটি পদে নিয়োগের জন্য প্রধান শিক্ষক মীর নজরুল ইসলাম ও সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন তিনজন প্রার্থীর কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা গ্রহন করেছেন এমন অভিযোগ এনে ০৩ আগস্ট শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দেন শিক্ষানুরাগী সদস্য মোঃ মতিয়ার রহমান খান। ০৪ আগস্ট জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একই অভিযোগ দেন তিনি। পরে ৮ আগস্ট নিয়োগের নামে অর্থ বানিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ এনে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতের জন্য বিদ্যালয়ের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক এবং খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালককে বিবাদী করে শরণখোলা সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন মোঃ মতিয়ার রহমান খান। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া কেন অবৈধ এবং স্থগিত ঘোষনা করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন আদালত। এসবের পরেও ২৭ আগস্ট বাগেরহাট শহরের খানজাহান আলী কলেজে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।


শিক্ষানুরাগী সদস্য মোঃ মতিয়ার রহমান খান বলেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার ও মীর নজরুল ইসলাম তিনটি পদে নিয়োগ প্রদানের জন্য ঘুষ ১৫ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহন করেছে। যার কারণে আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই তারা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। এছাড়া জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদনসহ আদালতে মামলা করার কারণে তারা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকী ধামকী দিচ্ছে। আমাকে মেরেও ফেলতে পারে তারা। এই অবস্থায় এই নিয়োগ বাতিলের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।


এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মীর নজরুল ইসলাম বলেন, সব নিয়ম-কানুন মেনেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এর থেকে বেশি জানতে হলে সভাপতির সাথে কথা বলুন।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, আদালত আমাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। তাই আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। কারণ দর্শানো নোটিশের বিষয়ে আইনগতভাবে মোকাবেলা করব।

বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাড. মুজিবুল হক বলেন, আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিকে বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন। এছাড়া শরণখোলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক এবং খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালককে সোমন দিয়েছেন। এই অবস্থায় আইনগত ভাবে তারা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে না। এটা আদালত অবমাননার শামিল।


বাগেরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, আদালতে মামলা থাকা অবস্থায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত হয়নি। যেহেতু আদালতে বিষয়টি বিচারাধিন রযেছে। সেই কারণে তাদের অপেক্ষা করা উচিত ছিল। এ বিষয়ে আদালতের কাছে তাদের জবাবদিহিতা রয়েছে।


তিনি আরও বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সভাপতি প্রধান ভূমিকা পালন করে। ক্ষমতাবান হয়ে থাকে সভাপতি, এজন্য তারা তাদের মত সব কাজ করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত