পদ্মা সেতুর উদ্বোধন

দেশের অর্থনীতিতে মোংলা বন্দরকে কেন্দ্র করে সূচনা হচ্ছে এক নতুন অধ্যায় 

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৬:৫৮ পিএম, শনিবার, ১১ জুন ২০২২ | ৩৭১

প্রমত্তা পদ্মার বুকে এখন দৃশ্যমান ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৫ জুন সেতুটি উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। এরপরই পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হবে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোকে রাজধানী ঢাকার সাথে সংযুক্ত করেছে পদ্মা সেতু। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সেতুটি উদ্বোধনের পর দেশের অর্থনীতিতে সূচনা হবে এক নতুন অধ্যায়ের। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে খুলে যাবে অর্থনীতির নতুন দুয়ার। পাল্টে যাবে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান। সেতুটি চালুর পর রাজধানী ঢাকা থেকে সব কাছের সমুদ্র বন্দর হবে মোংলা বন্দর। ফলে আমদানী ও রপ্তানি কারকরা ব্যবসায়ীক স্বার্থে মোংলা বন্দর দিয়ে বিনিয়োগ করবে বলে প্রত্যাশা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষের।


মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে মোংলা বন্দরের কর্মব্যস্ততা কয়েকগুন বেড়ে যাবে। গতি আসবে আমদানি-রপ্তানি কাজে। বন্দরের আশপাশে গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্পকারখানা। এতে চাপ বাড়বে বন্দরের। এ কারনে গত কয়েকবছর ধরে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের মাধ্যমে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে কয়েকগুন।


মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের বর্তমান সক্ষমতা
বর্তমানে মোংলা বন্দরে ৬টি জেটি, ৩টি মুরিং বয়া, ২২টি এ্যাংকোরেজ এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ১১টি প্রতিষ্ঠানের জেটির মাধ্যমে মোট ৪২টি জাহাজ একসাথে হ্যান্ডেল করা সম্ভব। ৪টি ট্রানজিট শেড, ২টি ওয়ার হাউজ, ৪টি কন্টেইনার ইয়াড, ২টি কার ইয়ার্ড এর মাধ্যমে বার্ষিক ১ কোটি মেট্রিক টন কার্গো এবং ১ লক্ষ টিইউজ কন্টেইনার এবং ২০,০০০ টি গাড়ি হ্যান্ডলিং এর সক্ষমতা রয়েছে।

মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প
মোংলা বন্দরের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধিতে বর্তমানে ৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। চলমান এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।


১. ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যায়ে “স্ট্র্যাটেজিক মাস্টার প্ল্যান ফর মোংলা পোর্ট” শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে।

২. সমুদ্রগামী জাহাজ, বন্দর অফিস ও আবাসিক এলাকাসহ মোংলা বন্দর সংলগ্ন বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থাসমূহের সুপেয় পানির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ২৪ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যায়ে সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন” শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে।

৩. মোংলা বন্দরের কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪শ ৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যায়ে মোংলা বন্দরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ” শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে।



৪. নিরাপদ চ্যানেল বিনির্মাণ, সমুদ্রগামী জাহাজ সুষ্ঠভাবে হ্যান্ডলিং এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জরুরী উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৭শ ৬৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যায়ে মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ” শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ চলছে।

৫. বন্দর এলাকায় চলাচলকারী বিভিন্ন জলযান এবং শিল্পকারখানা হতে সকল ধরণের বর্জ্য সংগ্রহ করে পরিবেশ সম্মত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য ৪শ এক কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যায়ে “মোংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা” শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে।

৬. ইকুইপমন্টেসহ কন্টেইনার টার্মিনাল, হ্যান্ডলিং ইয়াড, ডেলিভারী ইয়ার্ড, সার্ভিস ভেসেল, মেরিন ওয়ার্কসপ কমপ্লেক্স, মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ কমপ্লেক্স, ওভারপাস, বন্দরের সংরক্ষিত এলাকা ও বন্দর ভবন সম্প্রসারণ এবং ৮টি জলযান সংগ্রহের লক্ষ্যে ৬ হাজার ১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যায়ে “আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট” শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে।

৭. মোংলা বন্দরের জেটি পর্যন্ত ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং এর সুবিধা সৃষ্টির জন্য ইনার বার এলাকায় ৭শ ৯৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা ২১৬.০৯ লক্ষ ঘনমিটার ড্রেজিং এর জন্য “পশুর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং” শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ চলছে।

৮. মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ইকুইপমেন্টসহ ২টি অসম্পূর্ণ জেটি নির্মাণ কাজ সম্পন্নের লক্ষ্যে পিপিপি'র আওতায় ৪শ ১২ কোটি টাকা ব্যায়ে মোংলা বন্দরের ২টি অসম্পূর্ণ জেটি নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ চলছে।


পদ্মা সেতু চালু হলে বৃদ্ধি পাবে গাড়ীর ব্যবসা

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আহসান আরজু বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, বর্তমানে আমরা আমদানী করা গাড়ী ঢাকাতে নিতে আরিচা ফেরীঘাট ব্যবহার করি। যার কারনে মোংলা থেকে একটি গাড়ী ঢাকাতে নিতে কমপক্ষে ৭ ঘন্টা সময় লাগে। পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে মোংলা থেকে ঢাকায় একটি গাড়ি নিতে ৩ ঘন্টা সময় লাগবে। ফলে আমরা যেদিন গাড়ির অর্ডার পাব, সেই দিনই ক্রেতার হাতে গাড়ী দিতে পারব। যার ফলে সময় বাঁচার পাশাপাশি গাড়ি প্রতি এক থেকে দুই হাজার টাকা সেভ হবে ব্যবসায়ীদের। তিনি আরও বলেন, আমাদের সংগঠনের প্রায় ৩শ সদস্য মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি করেন। কম সময়ে গাড়ি খালাস ও রাখার পর্যাপ্ত জায়গা থাকায় ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ী আমদানী করতে বেশি পছন্দ করছেন। পদ্মা সেতু চালু হলে মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ী আমদানিতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ আরও বাড়বে। ফলে গাড়ীর ব্যবসা আরো সুগম হবে।


মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ী আমদানি শুরু হয়। ওই বছর গাড়ী এসেছিল মাত্র ২৫৫ টি। তবে চলতি অর্থ বছরে (২০২১-২২) মে মাস পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে দেশে গাড়ী আমদানি করা হয়ে ২০ হাজার ৯টি।


মোংলা কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, মোংলা বন্দর দিয়ে সরকার যে পরিমান রাজস্ব পায় তার ৫২ শতাংশ আসে গাড়ী আমদানির কর থেকে।

পদ্মা সেতু চালুর পর রেকর্ড পরিমান রাজস্ব আয়ের লক্ষমাত্রা

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হিসাব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০-৯১ অর্থ বছর থেকে ২০০১-০২ অর্থ বছর পর্যন্ত বন্দরটি ধারাবাহিক ভাবে লাভজনক ছিল। তবে ২০০২-০৩ থেকে ২০০৬-০৭ অর্থ বছর পর্যন্ত লোকসানের শিকার হয় বন্দরটি। এরপর ২০০৭-০৮ অর্থ বছর থেকে আবারও লাভের মুখ দেখে মোংলা বন্দর। সর্বশেষ গত চার বছর ধরে এ বন্দর থেকে ১০ হাজার লাখ টাকার বেশি লাভ হচ্ছে।

মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মূসা বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, চলতি অর্থ বছরে মে-২০২২ পর্যন্ত এই বন্দরে জাহাজের আগমন হয়েছে ৮২৮টি ও নির্গমন হয়েছে ৮৩০টির। এতে বন্দরের মোট আয় হয়েছে ৮০৩০.৫৫ লাখ টাকা। এ অবস্থায় পদ্মা সেতু চালু হলে আগামী অর্থ বছরে আমরা রেকর্ড পরিমান রাজস্ব আয় করতে পারবো বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।


মোংলা কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, চলতি অর্থ বছরের আমাদের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা। তবে ১১ মাসে (মে -২০২২ পর্যন্ত) আমাদের রাজস্ব আয় হয়েছে ৪ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আমরা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বেশি রাজস্ব আদায় করতে পেরেছি। আমাদের রাজস্ব আয়ের গ্রোথ ২৪ শতাংশ ও প্রবৃদ্ধি ২৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। পদ্মা সেতু চালু হলে কম খরচ ও কম সময় ব্যয় করে ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর থেকে ঢাকাতে পণ্য নিতে পারবেন। তখন বন্দরে বেশি আমদানি রপ্তানি হবে, সরকারের রাজস্বও আরও বাড়তে থাকবে।

যা বলছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মূসা বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, ইতোমধ্যে বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ আমার সাথে এসে বৈঠক করেছেন। কয়েকটি বড় বড় পোষাক কোম্পানিও পদ্মা সেতু চালুর সাথে সাথে পণ্য রপ্তানিতে এই বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ব্যবসায়ীদের এমন আগ্রহের মূল কারন হচ্ছে পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে এ বন্দরের দূরত্ব হবে ১৭০ কিলোমিটার। অপরদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ঢাকার দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার এবং পায়রা বন্দর থেকে ঢাকার দূরত্ব ২৭০ কিলোমিটার। ফলে আমদানি-রপ্তানিকারকরা বাণিজ্যিক স্বার্থে মোংলা বন্দর ব্যবহার করবে।


তিনি আরও বলেন, এছাড়া পদ্মা সেতুকে সামনে রেখে গত কয়েকবছর ধরে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সংগ্রহের মাধ্যমে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। যাতে করে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বন্দরের যে কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পাবে সেটি সামাল দেয়া যায়। এছাড়া বন্দরের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধির জন্য বর্তমানে ৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এই কাজ গুলো শেষ হলে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব আয় কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।


বিনিয়োগ বাড়ছে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলে

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক নিরঞ্জন কুমার মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, গত চার অর্থ বছরের পরিসংখ্যান ও চলতি অর্থ বছরের পরিসংখ্যান দেখলে সহজে বোঝা যাচ্ছে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়ছে। এটা মুলত পদ্মাসেতু ও মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা এ অঞ্চলে ব্যবসা করতে আগ্রহী হচ্ছেন।


বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্যমতে, খুলনা বিভাগে ২০১৬-১৭ থেকে ২০১৯-২০ অর্থ বছর পর্যন্ত মোট বিনিয়োগ করেছেন ১০৩ টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এতে ২৩৪৬০.৬৮৩ মিলিয়ন টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে চলতি অর্থ বছরে বিনিয়োগ করেছেন ৩১ টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এতে বিনিয়োগ করা হয়েছে ১৩৪৫২.৭৯১ মিলিয়ন টাকা।


বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি লিয়াকত হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে বাগেরহাট জেলার উন্নয়নের জন্য বাইরে থেকে টাকার প্রয়োজন হবে না। কারন পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হলে এ অঞ্চলের অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী হবে। পদ্মা সেতু চালুর পর মোংলা বন্দর থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে। সব চেয়ে বেশি উপকার পাবে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। কারন ঢাকা থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্ব অনেক কম। যে কারনে ব্যবসায়ীরা এ বন্দর ব্যবহার করে ব্যবসা করতে বেশি আগ্রহী হবে। বর্তমানে মোংলা বন্দর এলাকায় ছোট-বড় মিলে ৩৮৬ টি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শুধুমাত্র পদ্মা সেতুর কারনে আরও বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান এখানে জমি ক্রয় করেছেন। তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজ চলমান রয়েছে। যার ফলে এ অঞ্চলে শিল্প বিপ্লব শুরু হবে। বেকারত্ব দূর হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে কয়েক লাখ মানুষের।


অনুমোদনের অপেক্ষায় ছয় লেন প্রকল্প

পদ্মা সেতু ঘিরে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাশাপাশি বন্দর কেন্দ্রিক ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিলো খুলনা-মোংলা মহাসড়ক সিক্স লেনে উন্নতিকরণ। ব্যবসায়ীদের দাবীর প্রেক্ষিতে বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফরিদ উদ্দিন বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, খুলনা-মংলা জাতীয় মহাসড়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে হাজার হাজার ভারি যানবাহন চলাচল করে। এ সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে ওভারলোড। ১৯৮৪ সালে সড়কটি নির্মাণ হওয়ার পর থেকে পুনরায় নির্মাণ বা প্রশস্তকরণ করা হয়নি। এমন অবস্থায় আগামী ২৫ তারিখ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এ সড়কটিতে যানবাহনের চাপ আরও বাড়বে। সে কারনে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির বাগেরহাট অংশের সাড়ে ৩০ কিলোমিটার রাস্তা সিক্স লেনে উন্নতিকরন এখন সময়ের দাবী। ইতিমধ্যেই প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে সিক্স লেনের একটি প্রকল্প মন্ত্রনালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পটির ডোনারের মাধ্যমে করা যায় কিনা সে ব্যাপারে মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চিন্তাভাবনা করছেন। ইতিমধ্যে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের সাথে মন্ত্রণালয়ের বৈঠক হয়েছে বিষয়টি নিয়ে।

তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ওই সড়কটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে। এমন অবস্থায় যত দ্রæত সম্ভব গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় এ মহাসড়কটি সিক্স লেনে উন্নীত করা হবে, তত দ্রæত এই সড়কের সুফল অত্র অঞ্চলের ব্যবসায়ীসহ সাধারন মানুষ অনুভব করবে। আশা করছি দ্রæতই এই প্রকল্পটি অনুমোদন পাবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত