সাবধান নতুন ব্লু হোয়েল ‘মমো’, সতর্কতা জারি

তৈয়বুর রহমান টনি নিউ ইর্য়ক

আপডেট : ১২:৩১ পিএম, বুধবার, ১ আগস্ট ২০১৮ | ১০৩৯

ব্লু হোয়েল গেম নিয়ে আমাদের আতঙ্কের কোনো সীমা ছিল না ধ্বংসাত্নক এই গেমটি কেড়ে নিয়েছিল অনেক কিশোর-কিশোরীর জীবন। সেই শঙ্কা এখন অনেকটাই কেটে গেছে। কিন্তু এবার হোয়াটস্অ্যাপ মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে এমন আরেকটি গেম মমো লাতিন আমেরিকাতে এরই মধ্যে

এই গেমটিরবিরুদ্ধে সতর্কতা জারি হয়েছে।

গেমটি এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে ছড়িয়েছে। আর বিশেষজ্ঞরা এই গেমকে তুলনা করছেন সেই ভয়ঙ্কর‘ব্লু হোয়েলের’ সঙ্গে। তারা মনে করছে এই গেমটিও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। মমো দেখতে বেশভয়ংকর। গায়ের চামড়া ফ্যাকাসে। চোখে অশুভ হাসি এবং বাইরের দিকে প্রসারিত লাল লাল চোখ।হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তার চেহারা বিখ্যাত হয়ে উঠেছে সারাবিশ্বে।

মমো’র অজানা

মমো সম্পর্কে অবশ্যই জেনে রাখা ভালো। কারণ ধরুন হঠাৎ করেই কম্পিউটারের স্ক্রিনে ভেসে আসতেপারে মমোর ছবি। গেমে অংশ নিতে আপনাকে প্রলুব্ধ করাও হতে পারে।

লাতিন আমেরিকায় জনগণকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, এ গেম মেসেজের মাধ্যমে অন্যকে যেন না দেওয়া হয়।কারণ এই অনলাইন গেম এর ফলাফল ভালো নাও হতে পারে।

মেক্সিকো পুলিশ থেকে জানানো হয়েছে, এটা শুরু হয়েছে ফেসবুকে। একদল লোক একে অন্যকে একটিঅপরিচিত নম্বরে কল দেওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করে সতর্কতা থাকার পরেও। তারা আরও জানায়, অনেকব্যবহারকারী বলছে, মমোতে বার্তা পাঠানোর পর সে সহিংস ছবি পাঠাবে। অনেকে হুমকিমূলক বার্তা পেয়েছেনবা ব্যক্তিগত তথ্যও ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। মমো এখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।

স্পেনেও টুইটারে সচেতনতা চলছে। তারা জনগণকে এই খেলায় নিরুৎসাহিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে।হ্যাশট্যাগ ইগনোর ননসেন্স দিয়ে প্রচারণা চলছে, যাতে বলা হচ্ছে ‘ডোন্ট অ্যাড মমো টু ইওর কন্টাক্টস’।

মমো’র উদ্ভব

কোত্থেকে এলো এই মমো, এই প্রশ্ন সবার। অনলাইন প্লাটফর্ম রেডিট বলছে, তাদের সর্বোচ্চ পড়াপোস্টগুলোর একটি হলো ‘হোয়াটসঅ্যাপ বালিকা মমো কি ও কে?’ তারা বলছে, ‘এটি সম্পর্কে একটি ভিডিওপেয়েছি এবং এটি ভীতিকর’। সেখানে একটা উত্তর ছিল এমন, স্প্যানিশভাষী কোনো দেশ থেকে একজনইনস্টাগ্রাম থেকে একটি ছবি নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। লোকজন সেখান থেকে একটিকন্টাক্ট নম্বর পায় ও গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে কেউ একে স্পর্শ করলে সে তাকে গ্রাফিক ছবি ও বার্তা দেবে।অনেকে বলেন যে, ব্যবহারকারীর সব ব্যক্তিগত তথ্যে তার প্রবেশাধিকারের সুযোগ আছে।

১১ জুলাই ইউটিউবার রেইনবট এ বিষয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করে। ভিডিওটি ইতোমধ্যে ১৫ লাখেরও বেশিদেখা হয়েছে। কিন্তু তিনিও আসলে জানেন না কে এই মমোর স্রষ্টা। অর্থাৎ মমো কে তৈরি করেছেন সেটিতারও জানা নেই।

তবে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে, হোয়াটসঅ্যাপ গেমটি জাপানের কোড সম্বলিত তিনটি ফোন নম্বরের, কলম্বিয়ার কোড সম্বলিত দুটি আর মেক্সিকোর কোড সম্বলিত আরেকটি নম্বরের সঙ্গে সংযুক্ত। আরছবিটি নেওয়া হয়েছে টোকিও’র একটি প্রদর্শনী থেকে। গেমটি কোত্থেকে এলো তা জানা মুশকিল আসলেই।

মমোর ভীত মুখ একটি পাখি মানবীর মূর্তিকে তুলে ধরে।২০১৬ সালে টোকিওতে ভ্যানিলা গ্যালারিতে একটিপ্রদর্শনীর অংশ ছিল এটি।দু’বছর আগে আরেকটি প্রদর্শনীতে মমো ছিল বিশেষ আকর্ষণ। অনেকেই মমোর সঙ্গে পোজ দিয়ে ছবি তুলেছে এবং এমন বহু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিতহয়েছে।

মেক্সিকোর পুলিশের দাবি, কেউ ইনস্টাগ্রাম থেকে ওই অনুষ্ঠানের ছবি নিয়ে সেটাকেই কেটেকুটে এইআদল দিয়েছে।

গেমটিকে বিপজ্জনক ভাবা হচ্ছে কেন?

এই গেমটির দ্বারা ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হতে পারে, সহিংসতা, এমনকি আত্মহত্যায় প্রলুব্ধ করতে পারে, ব্যবহারকারী হয়রানির শিকার হতে পারে, ব্যবহারকারী চাঁদাবাজির শিকার হতে পারে, ব্যবহারকারী মানসিকও শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, অনিদ্রা আক্রমণ করতে পারে।

মমো শুধু হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়ালেও এটি শিশুদের অনলাইন গেম মাইনক্রাফটেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবহারকারীদের এ ধরনের বার্তা অনুসরণ করা উচিত নয় এবং কোনো অপরিচিত নম্বরের

সঙ্গে সংযোগ করা ঠিক না।


সূত্র: বিবিসি বাংলা

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত