হাত বাড়ালেই মিলছে মাছ শিকারের বিষ

সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে চলছে মাছ শিকারের মহোৎসব

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৫:৪৬ পিএম, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০১৭ | ৩৬১৫

কীটনাশক

পূর্ব সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের চলছে মহোৎসব। এক শ্রেনীর অসাধু জেলে ও বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের কারনে কোন ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না বিষ দিয়ে মাছ শিকারের এ উৎসবকে। আর এর প্রভাবে হুমকীর মুখে পড়েছে সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ। শুধু মৎস্য সম্পদই নয় মাছ শিকারের জন্য ব্যবহৃত এসব কীটনাশকের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্রও। হাত বাড়ালেই মাছ শিকারের ওষুধ বা বিষের সহজ লভ্যতার কারনে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের এ উৎসবকে ঠেকানো যাচ্ছে না বলে মনে করা হচ্ছে। মূলক কৃষি কাজে ব্যবহার করা কীটনাশক বা বিষ দিয়ে ধরা হয় সুন্দরবনের মাছ। আর বিষ দিয়ে শিকার করা মাছ খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারন মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বেশি মুনাফার আশায় সুন্দরবনের আম্বারিয়া, ঝাপসি, মরাপশুর ও জোংড়াসহ বিভিন্ন খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করার জন্য বন সংলগ্ন বাজার গুলোর কীটনাশকের দোকান থেকে সহজে এ বিষ সংগ্রহ করছে অসাধু এক শ্রেনীর জেলেরা। সুন্দরবনের ৩১ দশমিক এক ৫ ভাগ এলাকা জুড়ে রয়েছে বিশাল । এখানকার অসংখ্য খালে আছে প্রায় তিন শতাধিক প্রজাতির মাছ। সুন্দরবন পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগের চারটি রেঞ্জের আওতাধীন ১৮টি খালে সব ধরনের মাছ ধরার জন্য নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এসকল খাল গুলোকেই বিষ দিয়ে মাছ শিকারের জন্য বেছে নেয় জেলেরা। বিভিন্ন সময় এসব খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের অপরাধে একাধিক জেলে আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হলেও আইনের ফাক-ফোকর দিয়ে বেড়িয়ে এসে পুনরায় তারা একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।


কৃষি কাজে ব্যবহারের কীটনাশক দিয়ে মাছ শিকারের বিষয়ে মংলা উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ফাইটার, সাইপারগার্ড, কট ১০ইসি, রিপকর্ড এবং পেসিকল নামের কীটনাশক কৃষিকাজের জন্য চাষীরা ব্যবহার করে। এসকল কীটনাশক দিয়েই অসাধু জেলেরা সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে প্রয়োগ করে মাছ শিকার করে থাকে। এই কীটনাশকের অপব্যবহার বন্ধে আমি একাধিকবার আইনশৃংখলা সভায় প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার অনুরোধ করেছি।

এসকল কীটনাশকের যত্রতত্র ব্যবহার বন্ধে করনীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা গুলোতে যে কয়টি সার বা কিটনাশকের দোকান রয়েছে তাদের মালিকদের এ কীটনাশকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করা যেতে পারে। পাশাপাশি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এ বিষ বা কীটনাশকের ব্যবহার যাতে খারাপ কাজে না হয় সে জন্য শুধুমাত্র সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় এ কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতিপত্র ব্যবহার করা যায় সে ক্ষেত্রে এ কীটনাশকের অপব্যবহার অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

poison

বিষ দিয়ে শিকার করা মাছ খেলে মানবদেহের জন্য কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে সে বিষয়ে বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. অরুন চন্দ্র বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, বিষ দিয়ে শিকার করা মাছ মানবদেহের জন্য মারাতক তিকর। বিষাক্ত পানির মাছ খেলে মানুষের কিডনি ও লিভারে জটিলতা দেখা দিতে পারে।

এ বিষয়ে বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ মাহামুদুল হাসান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের ক্ষেত্রে বনবিভাগ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোন অসাধু জেলে যদি বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত