ক্রেতাদের মূল্য বৃদ্ধির অভিযোগ

চিতলমারীতে জমেনি ঈদের বাজার ॥ ব্যবসায়ীরা হতাশ

এস এস সাগর, চিতলমারী

আপডেট : ০২:৩৩ পিএম, বুধবার, ৬ জুন ২০১৮ | ২২৯১

‘দেখতে দেখতে ২০ টি রোজা পেরিয়ে গেল। আর মাত্র ক’দিন পরেই পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। ঈদকে সামনে রেখে এবারের নতুন কালেকশান সব দোকানেই রয়ে গেল। বিক্রি হলো না প্রায় ১০-১২ লাখ টাকার কাপড়-চোপড়।’-বুধবার (হাটেরদিন) দুপুরে বাগেরহাটের চিতলমারী শেরে বাংলা সুপার মার্কেটে নিজের দোকানে বসে এমনটাই বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানালেন ছিট কাপড় ব্যবসায়ী টিটন সাহা (৩৫)।

তিনি আরও জানান, এ উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস। এছাড়া পার্শ্ববর্তী ৩-৪ টি উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা লোকজনও চিতলমারী সদর বাজার থেকে কেনাকাটা করে থাকেন। আর এই কেনাবেঁচাকে কেন্দ্র করে এখানে একটি বড় মাপের বানিজ্য কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। প্রতি বছর ঈদ ও পূজাকে কেন্দ্র করে এ বাজারের দোকান গুলো জমজমাট হয়ে ওঠে। কিন্তু অন্যসব বছর এমন সময় ব্যবসায়ীদের বিক্রির ধুম পড়ে যায়। এ বছর তার ছিটে-ফোঁটাও লাগেনি। মোকাম থেকে কেনা মালামাল দোকানেই রয়ে যাচ্ছে। তাই এ বাজারের ব্যবসায়ীরা চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন। শুধু টিটন সাহা নয়। একই কথা জানিয়েছেন বস্ত্র ব্যবসায়ী সনজিৎ হাজরা, হরবিলাস মন্ডল, দিপক সাহা, অশোক সাহা ও গৌর সাহা।


এবারের ঈদে দর্জি পাড়ার অবস্থা আরও নাজুক। বাজারের বড়মাপের দর্জি আবুল শেখ, বিবেক বিশ্বাস, শান্ত বিশ্বাস, শেখর দাস, বাবু বসু ও মনু মন্ডল জানান, গত বছরও তারা এরকম সময় রাতদিন আনন্দের সাথে কাজ করেছেন। কিন্তু এবছর তাদের দুঃচিন্তায় কাটছে। কারণ বছরের একটি বড় মাপের আয় তাদের এ ঈদের সময়ই হয়ে থাকে।


বাজারের পাদুকা (জুতা) ব্যবসায়ী লিটন শেখ ও তুহিন শেখ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, অন্য সব বছর এ রকম সময় তাদের দু’তিন বার মোকাম করা হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর তা হচ্ছে না।

চিতলমারী সদর বাজারে লুঙ্গি-কাপড় ব্যবসায়ী কমলেশ সাহা ও সোনা সাহা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এবারের ঈদে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সামান্য কিছু কেনাবেঁচা হলেও কাপড় বিক্রি তুলনামূলক হচ্ছে না।


গার্মেন্টস ব্যবসায়ী অরুপ সাহা, সায়েদুল হক, শংকর কর্মকার ও এমাদুল হক বিশ্বাস বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বেচা-বিক্রি একেবারে কম। বেশীর ভাগ খরিদ্দারই দাম শুনে চলে যাচ্ছে।


ঈদের বাজার করতে আশা আকবর শেখ, মোকিম মোল্লা, সাজেদুর রহমান, রোকেয়া সুলতানা ও শ্রাবণী আক্তারসহ অনেকে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুন দামে কাপড়-চোপড় বিক্রি হচ্ছে। তাই অনেক ক্রেতাই চিতলমারীর বাইরে থেকে মার্কেট করছেন।


তবে চিতলমারী উপজেলার তরুণ সমাজ সেবক দেবাশিষ বিশ্বাস ও সাংবাদিক তাওহিদুর রহমান বাবু বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এ বছর মানুষ বোরো ধানের ভাল দাম পায়নি। তাছাড়া সবজি চাষের মৌসুম চলছে। তাই ঈদে বিক্রি কিছুটা কম হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত