সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রির পরও জরিমানা

বাগেরহাটে ভ্রাম্যমান আদালতের বিরুদ্ধে খামখেয়ালীপনার অভিযোগ ব্যবসায়ীদের

এস এম সামছুর রহমান

আপডেট : ০১:৪১ পিএম, বুধবার, ৬ জুন ২০১৮ | ১৭৩৮

বাগেরহাটে জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালতের বিরুদ্ধে খামখেয়ালীপনার অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রির পরও জরিমানা, ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিট্রেটের সাথে থাকা জেলা প্রশাসনের কিছু নি¤œপদস্থ্য কর্মচারী ও পুলিশ সদস্যদের অসৌজন্যমূলক আচারণসহ নানা রকম হয়রানী বন্ধের দাবী তুলেছেন তারা। ব্যবসায়ীদের সব ধরনের হয়রানী বন্ধের দাবীতে বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি কার্যালয়ে মিলিত হয়ে মঙ্গলবার রাতে এক প্রতিবাদ সভা করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।


এসময় তারা ভ্রাম্যমান আদালতের বিরুদ্ধে খামখেয়ালীপনার কারণে বাগেরহাট জেলা সদরের সকল দোকানপাট বন্ধ রাখার ঘোষনা দেন। পরে বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি লেয়াকত হোসেন লিটন জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করে বিষয়টি সমাধান করবেন এমন আশ্বাসের পর ব্যবসায়ীরা তাদের কর্মসূচী থেকে সরে আসে। সকালে বুধবার ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাসের সাথে স্বাক্ষাত করেছেন।


ব্যবসায়ীরা জানান, মঙ্গলবার বাগেরহাট বাজারের খাঁন মিট হাউজে ৪৭০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় খাঁন মিট হাউজের মালিক আঃ সালাম জেলা বাজার কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত মূল্য তালিকা দেখালেও তা গ্রাহ্য করেননি ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিট্রেট মোঃ শাহরিয়ার মুক্তার।


বাগেরহাট ক্ষুদ্র বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোমিন মোল্লা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, জেলা প্রশাসনের কিছু কর্মচারী বাজারে এসে নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা দাবী করে। সুবিধা না পেলে তারা ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিট্রেটের সাথে এসে নানা ধরনের উস্কানিমূলক কথা বলে ভ্রাম্যমান আদালতকে প্রভাবিত করে। ভ্রাম্যামান আদালতের সাথে থাকা কিছু অতিউৎসাহী পুলিশ সদস্য ব্যবসায়ীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।


জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, গরু পরিবহন খরচ যশোর ও খুলনা থেকে বাগেরহাটে একটু বেশি। একারণে চেম্বার সভাপতির অনুরোধে জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে ৪৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তারপর কেন ওই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হলো এটা আমি বুঝতে পারছি না।


বাগেরহাট চেম্বার মিলানায়তনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায়, অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, বাগেরহাট ক্ষুদ্র বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোমিন মোল্লা, মিষ্টি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়দেব ঘোষ, প্রসাধনী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অমিও দেবনাথ, সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম, চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পরিতোষ কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক মেখ মকবুল হোসেন, মুদি মনোহরি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অমল সাহা, কোষাধ্যক্ষ আলম পাইক, মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আঃ সালাম, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর শেখ প্রমুখ।


বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি লেয়াকত হোসেন লিটন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, আমরা ভ্রাম্যমান আদালতের বিরুদ্ধে নই। ব্যবসায়ীরা কোন অন্যাই করলে চেম্বার কখনও তাদের পক্ষে কথা বলবে না, প্রশাসনকে সহায়তা করবে। তবে অযৌতিক কারনে কারো সাজা দিলে ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করবে এটাই স্বাভাবিক। মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের অযৌতিক ভাবে সাজা দেয়া ও অসৌজন্য আচারনের কারণে প্রতিবাদ সভা করে কঠোর কর্মসূচীর ঘোষনা দেয়। কিন্তু পবিত্র রমজান ও ঈদের কথা বিবেচনা করে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানাই। বুধবার সকালে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাসের সাথে দেখা করে বিষয়টি তাকে জানিয়েছি। তিনি আমাদের ব্যবসায়ীদের হয়রানি যাতে না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।


বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, বুধবার সকালে ব্যবসায়ীক নেতৃবৃন্দ দেখা করেছেন। তারাও মোবাইল কোর্টের বিরুদ্ধে নন। তবে অতিরিক্ত জরিমানা না করার দাবী জানিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত