করোনা মহামারীর মধ্যেও গত অর্থবছরে

মোংলা কাস্টম হাউসের রাজস্ব আয় ৩ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৯:২৮ পিএম, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১ | ৬৩৬

বিশ্বজুড়ে করোনার প্রভাব বাড়তে থাকায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সবগুলো সেক্টরেই কমবেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। করোনার থাবায় আমদানি- রপ্তানি বাণিজ্যেও নেমে আসে স্থবিরতা। এমন দুর্যোগকালীন সময়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের নিরলস পরিশ্রম ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণের কারনে বিদায়ী অর্থবছরে লাভের মুখ দেখেছে প্রতিষ্ঠান দুটি।
বিদায়ী ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মোংলা বন্দরের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৪০ কোটি ২৩ লাখ ১২ হাজার টাকা এবং মোংলা কাস্টমস হাউসের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকারও বেশি। গত ২০১৯- ২০ অর্থবছরের তুলনায় এবার ৮২৬ কোটি বেশি আয় করেছে মোংলা কাস্টম হাউস।
প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে করোনার প্রভাব না থাকলে মোংলা কাস্টমস হাউজের আয় আরও বাড়তো। তারা আরো জানান, করোনা না থাকলে এবার রাজস্ব আয় ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি হতো।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা জানান, বিশ্ব অর্থনীতিতে করোনার মারাত্বক প্রভাব থাকা সত্বেও আমাদের বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং কাস্টমস কর্মকর্তারা সমন্বিতভাবে বন্দরের আমদানি- রপ্তানিসহ অন্যান্য অপারেশনাল কার্যক্রম ২৪ ঘন্টা সচল রেখেছি। আমাদের সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এবার দুটি প্রতিষ্ঠানই লাভের মুখ দেখেছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ মোস্তফা কামাল জানান, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে রিকন্ডশন্ড গাড়ি আমদানি হয় ১৪ হাজার ৪৭৪টি। বর্তমানে বন্দরে গাড়ি রয়েছে দুই হাজার ৫৬৩টি। করোনা পরিস্থিতির কারনে বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা থাকলেও বন্দরে আগের তুলনায় গাড়ি আমদানি কিছুটা বেড়েছে। মোট আমদানির ৬০ শতাংশ রিকন্ডিশন্ড গাড়ি মোংলা বন্দর দিয়েই খালাস করা হয়। তবে গাড়ি আমদানির যে লক্ষ্যমাত্রা আমরা নির্ধারন করেছিলাম সেটি এবার সম্ভব হয়নি।
মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ হোসেন আহম্মেদ বলেন, করোনার প্রভাব পড়েছে বিশ্ব বাজারে। যে কারণে চীন নির্ভর আমদানি-রফতানি কমেছে। এছাড়া আমদানি করা রিকন্ডিশন গাড়ি রাজস্ব আয়ের অন্যতম খাত। আমদানিকারকদের গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ায় নতুন করে গাড়ি আমদানি খুব বেশি হচ্ছে না। তাই গাড়ির খাতে ভাটা পড়ায় এই খাতে যে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা আমরা নির্ধারন করেছিলাম সেটি অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, মোংলা বন্দরে আসা আমাদানি-রফতারি পণ্যে (বাল্ব কার্গো) সিমেন্ট, কিংকার এলপিজি গ্যাসের কাঁচামাল ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ি এবং কন্টেইনার জাত পণ্যের ওপর নির্ভর করে। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে মোংলা কাস্টমস হাউজের পাঁচ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা। এর আগে করোনা শুরুর বছর ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে চার হাজার ৬৯২ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছিলো তিন হাজার ১৪৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে এই আয় ছিলো তিন হাজার ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। বিগত অর্থ বছরগুলোর তুলনায় গেলো অর্থ বছরে বেড়েছে রাজস্ব আয়। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব আয় এবং মুনাফা নির্ভর করে মোংলা সমুদ্র বন্দরে আমদানি ও রফতানি পণ্যের ওপর।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত