কচুয়ার বাধাল সহ ৫০টি গ্রামে পানি সংকট,বাঁধ কেটে দিয়েছে এলাকাবাসী

শুভংকর দাস বাচ্চু, কচুয়া

আপডেট : ০৯:১৫ পিএম, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪ | ১৪৭

কচুয়ার বাধাল সহ ৫০টি গ্রামে পানি সংকট,বাঁধ কেটে দিয়েছে এলাকাবাসী

বাগেরহাটের কচুয়ায় বাধাল সহ ৫০টি গ্রামে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। বিপাকে পড়েছে কৃষক ও মৎস্য চাষিরা। পানির আশায় বুধবার (আজ) এলাকার হাজার হাজার নারী পুরুষ বিষখালী নদী (খাল) এর বলেশ্বরের মুখের বাঁধ সহ ১০/১২ বাঁধ কেটে দিয়েছে।


কচুয়ায় উপজেলার গোপালপুর, রাড়িপাড়া ও বাধাল ইউনিয়নের মসনী, বাধাল, রঘুদত্তকাঠী, সাংদিয়া, শাখারিকাঠী, আলোকদিয়া, কলমিবুনিয়া, বিলকুল গ্রাম ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বিষখালী বলভদ্রপুর রামচন্দ্রপুর,কাঠিপাড়া,নরুল্লপুর সহ অন্তত ৫০টি গ্রাম পানি সংকটে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে পানির প্রয়োজন না হলেও শুষ্ক মৌসুমে খাল থেকেই পাম্প মেশিন দিয়ে সেচ দিয়ে কাজ চালিয়ে থাকেন তারা।


বিষখালী ও পানগুছি নদী থেকে অন্তত ৪০টি চারা খাল বাধাল,রাড়িপাড়া, গোপাপুর ,বনগ্রাম ও রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। অধিকাংশ খাল শুকিয়ে গেছে। ফলে জমি মালিকরা সময়মতো সেচ দিতে পাছে না। বিষখালী ও পানগুছি নদীর পানি এসে চারা খালে প্রবেশ করে। সেখান দিয়ে জমিতে সেচ দেয় কৃষক।


উপজেলার বাধাল ইউনিয়নে ৮০০ হেক্টর জমিতে মৎস্য চাষ করা হয়ে থাকে। এবছর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ২১ টি ব্লকে হাইব্রীড জাতের ৬ হাজার ৮শ হেক্টর এবং উফশী জাতের ১ হাজার ৯শ হেক্টর জমি বোরো ধান চাষের লক্ষ্য মাত্রা আছে।


বাধাল এলাকার কৃষকরা জানিয়েছেন, চলতি বোরো মৌসুমে পানি সংকটে পড়েছে কৃষক ও মৎস্য চাষি। বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষক। শুকিয়ে যাচ্ছে ধান গাছের গোড়া। মাটি ফেটে চৌচির, দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক তার পরিবার। শুকিয়ে গেছে খাল ও মৎস্য ঘের। সম্প্রতি পানিউন্নয়ন বোর্ড বিষখালী ও পানগুছি নদীতে বাঁধ নির্মান করে ২৫ কিলোমিটার নদী পূর্ন খননের কাজের ধীরগতির কারনে ৫০টি গ্রামে পানি সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলছেন কৃষকরা।


কৃষক শাহাজান শেখ জানান, মাঘ মাসের শেষ ও ফালগুন মাসের প্রথম নাশিত নাগরম এসময় মৎস্য ঘেরে ও পুকুরে বাগদার চিংড়ির রেনু পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময়। পানির সংকটে মৎস্য উৎপাদন ব্যাহত হবার আশঙ্কা মৎস্য খামারিদের।


কৃষক রঞ্জন দাস বলেন, এখন ধান গাছে মুকুল আসার সময় ফাল্গুনের ভরা মৌসুমে ধানক্ষেতে বেশি পানি দরকার কিন্তু জমিতে পানি দিতে পারছে না। পানির অভাবে ধান, ভুট্রা সহ বিভিন্ন ফসলের ফলন ভালো না হলে তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষক। ধান ক্ষেতের মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। সেচ না দিতে পারলে লাভতো দূরের কথা খরচের টাকাই উঠবে না।


বিপুলা বালা দাস বলছেন, এখন ধান গাছে মুকুল (থোড়) আমার সময় এখন পানি অভাবে ধান ফলছে না। ধান ও ভুট্রা সহ ফসলের জমিতে পানি দিতে না পারলে তাদের ফসল ঘরে উঠবে না। এখন এই আমাবশ্যার জোয়ারের পানি জমিতে দিতে পারলে ধান ফলবে।


উপজেলা আ.লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তো বলেন, আমার চাই আমাদের কৃষকদের বাঁচিয়ে নদী খনন হোক, আমাদের নদী খাল প্রয়োজন আছে। আবার এলাকার জনগণের দিকটাও দেখতে হবে।


সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রনব কুমার বিশ্বাস বলেন, নদীখাল খননের ফলে সাময়িক একটু সমস্য হচ্ছে। তবে খনন কাজ হয়ে গেলে নদী ও খাল উন্মুক্ত করে দিলে এ অঞ্চলে মৎস্য ও কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত