বিদেশী কিটনাশক সহ ৩ জেলে আটক, চাদপাই ষ্টেশন কর্মকর্তার অস্বীকার

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৯:৪৩ পিএম, রোববার, ২ এপ্রিল ২০২৩ | ৫৪২

সুন্দরবনের ঘাগড়ামারী এলাকা থেকে বিদেশী কিটনাশক (বিষ) সহ ৩ জেলে দুর্বৃত্তকে আটক করেছে বন বিভাগ। শনিবার রাতে তাদের নাম ঠিকানা আড়াল করা ও কৌশলে ছেড়ে দেয়ার জন্য রোববার সকাল ১১টা পর্যন্ত এ বিষয় অস্বীকার করে আসছিল চাদপাই ষ্টেশন কর্মকর্তা খলিলুর রহমান।


তবে ৩জনকে আটকের খবর প্রকাশ হলেও জেলেদের সাথে থাকা বড় বেব্দিজাল, নৌকা ও অন্যান্য সরঞ্জামাদীর কোন হদিস মিলছে না। বন বিভাগের এক কর্মীর সাথে এসকল জেলেদের সখ্যতা থাকার কারণেই এমন নাটকীয়তা দেখিয়েছেন বন বিভাগ বলে দাবী এলাকাবাসীর।

ষ্টেশন কর্মকর্তা বলছে, সবে মাত্র বনবিভাগ থেকে বৈধভাবে ঝাঁকিজাল দিয়ে মাছ ধরার অনুমতি নিয়ে বিষ এবং নিষিদ্ধ বেহুন্দি জাল নিয়ে সুন্দরবনে রওনা হয়েছিলেন এসকল জেলে। উদ্দেশ্য সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ছোট ছোট খালে বিষ দিয়ে সব মাছ শিকার করা। এসময় তাদের কাছে অবৈধভাবে মাছ শিকারের জন্য বিষ ও সামান্য কিছু জাল পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বন বিভাগ জানায়, শনিবার (১ এপ্রিল) রাত ১১টায় সুন্দরবনের ঘাগড়ামারী এলাকার একটি খাল থেকে তিন জন জেলেকে আটক করা হয়। এরা হলেন, বেল্লাল খাঁন (৩২), আজিজ গাজী (২৫) ও ইস্রাফিল গাজী (৩৪)। এদের সবার বাড়ী খুলনা জেলার দাকোপ ও কয়রা উপজেলায়। তারা বন বিভাগ থেকে পাশ (অনুমতি) নিয়ে কৌশলে বিষ দিয়ে মাছ শিকারে যাচ্ছিলেন বনের অভ্যন্তরে। এমন খবর আসে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মাহবুব হাসান এর কাছে।

তিনি বলেন, আটক জেলেদের কাছে বৈধভাবে সুন্দরবনের ভেতরে মাছ ধরার জন্য বৈধ অনুমতি পত্র ছিল। কিন্তু তারা এই বৈধতার আড়ালে অবৈধভাবে মাছ শিকারের জন্য প্রস্তুত হয়ে বিষ ও নিষিদ্ধ জাল নিয়ে রওনা হন। তবে গোপনে এ খবর পেয়ে তাদেরকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে বনরক্ষীরা। পরে তাদের কাছে পাওয়া বনবিভাগ কর্তৃক যে জেলের নামে অনুমতি পত্র ইস্যু করা হয়েছে সেই জেলে মিজানুর রহমানসহ ছয়জনকে আসামি করে বন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জেলে আটকের এমন খবর চাদপাই ষ্টেশন কর্মকর্তা খলিলুর রহমান’র কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেনা, বিষয়টি ঢাংমারী ষ্টেশন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন । তবে ষ্টেশন কর্মকর্তা নিজে গ্রেফতার করে তথ্যটি গোপন করার বিষয়টি সন্দেজনক বলে মনে করেন অনেকেই।

মামলার অন্য আসামীরা হচ্ছেন, আমিন মৃধা, জুয়েল বিশ্বাস সহ ৬জন। এদিকে আটক তিন জেলেকে রবিবার দুপুরে খুলনার জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বন কর্মকর্তা মাহবুব হাসান।

চিলা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবার হোসেন বলেন, সুন্দরবনের অভ্যান্তরে যতগুলো খাল রয়েছে, সকল খালে কেউ না কেউ মাছ শিকার করছে কিন্ত সকল খবরই বন বিভাগের নখদর্পনে রয়েছে। আর যখন এ তিন জেলেকে আটক করেছে তাদের সাথে নৌকা বড় বেব্দিজাল ও অন্যান্য মালামালও ছিল কিন্ত তা গোপনে আড়াল করা হয়েছে। তবে সংবাদ কর্মীদের কাছে তথ্য না দেয়া মানে কিছু একটা গোপন করেছে বন বিভাগ। এরকম বহু বিষ দস্যু জেলে সেজে রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে যার খবর বন বিভাগের কাছে আছে বলে জানায় এ জনপ্রতিনিধি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত