আজ ডাকরা গণহত্যা দিবস, একদিনে হত্যা করা হয় ছয় শতাধিক মানুষকে

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৬:৫২ পিএম, শনিবার, ২১ মে ২০২২ | ৪১৬

ডাকরা গণহত্যা দিবস

১৯৭১ সালের ২১ মে দুপুর একটা। বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার কুমারখালী নদী দিয়ে দুটি নৌকায় ২৫-৩০ জন লোক ডাকরা হাইস্কুল দিকে আসেন। একটি নৌকা ডাকরা হাইস্কুলের পুর্ব পাশে কুমারখালী খালে ঢোকে, অন্যটি একটু পশ্চিমে এগিয়ে মাদারতলী খালের মধ্যে ঢুকে ডাকরা বাজারে থামায়। নৌকার লোকগুলো দ্রুত সমতল ভূমিতে নেমে যায়। মুহুর্তের মধ্যে ডাকরা বাজারের পাশে থাকা শতবর্ষী কালি মন্দিরে পূর্ব থেকে আশ্রয় নেওয়া নিরিহ মানুষদের লক্ষ করে গুলি ছুড়তে থাকে। বন্ধুকের গুলি থেকে বেঁচে যাওয়া অনেককে জবাইও করা হয়। এদিন রাজাকার কমান্ডার রজ্জব আলী ফকিরের নেতৃত্বে অন্তত ৬ শতাধিক মানুষকে হত্যা করে ডাকরায়। এরপর শুরু হয় লুটপাট আর অগ্নিসংযোগ।

রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের ডাকরা গ্রামে সেদিন এভাবেই ব্যাপক গণহত্যা ও লুটতরাজ চালানো হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় এটিই ছিল জেলার সবচেয়ে বড় হত্যাকান্ডের ঘটনা। সেদিন ভাগ্যের জোড়ে বেঁচে যাওয়া ভীত সন্ত্রস্ত লোকগুলো আজও আতকে ওঠেন সেই দিনের কথা মনে করে।

গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী শিশির মজুমদার বলেন, ভারতে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের সহস্রাধিক লোক ডাকরা এলাকায় নোয়া ঠাকুরের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। কিন্তু রাজাকার রজ্জব আলী ফকিরের রাজাকার বাহিনী দুই দিক থেকে নৌকায় এসে এলাকায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। শুধু হত্যা করেই থেমে থাকেনি তারা ধর্ষণ ও মূল্যবান সম্পদও লুট করেছিল সেদিন রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা। সেদিনের ঘটনা মনে পড়লে আজও গা শিওরে ওঠে। কষ্টে চোখে জল চলে আসে।

বাগেরহাট ৩ আসনের (রামপাল-মোংলা) সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহার বলেন, বর্তমান প্রজন্মের অনেকে মনে করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সহজেই চলে এসেছে। এজন্য কাউকে কোন ত্যাগ বা মূল্য দিতে হয়নি। আসলে স্বাধীনতা অর্জন যে আমাদের জন্য কত কঠিন ছিল, শুধু মক্তিযোদ্ধা নয়, সাধারণ মানুষকেও স্বাধীনতা অর্জনের জন্য কত মূল্য দিতে হয়েছে, তা চিন্তার বাইরে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত