উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জনবল সংকট

রামপালে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

এম,এ সবুর রানা, রামপাল

আপডেট : ০৮:২৬ পিএম, বুধবার, ৭ মার্চ ২০১৮ | ১৪৩৩

রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন নিজেই স্বাস্থ্যহীন হয়ে পড়েছে। ৯৪টি পদের মধ্যে ৭৭টি পদই শুন্য রয়েছে। ৩২ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও তার বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ৬ জন চিকিৎসক । শৈল্য বিভাগের চিকিৎসক মোঃ মাসুদ সাত্তার সপ্তাহে ৩ দিন নিজ কিনিকে সময় কাটান। স্বাস্থ্য সহকারীদের দিয়ে চলে স্বাস্থ্য সেবা। এতে চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগীরা নানাভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। খোজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ৩২ জন চিকিৎসকের বিপরীতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা, জুনিয়র কনসালট্যান্ট শৈল্য, এ্যানেসথেসিয়া, জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট অর্থ, মেডিকেল অফিসার ২ জন, সহকারী সার্জনসহ ৬ জন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে সদ্য যোগদানকৃত শৈল্য বিভাগের চিকিৎসক মোঃ মাসুদ সাত্তার সপ্তাহে ৩ দিন অফিসে না এসে খুলনার রূপসাস্থ তার কিনিকে সময় কাটান। গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট শিশু, জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট মেডিসিন, জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট গাইনি, জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট অর্থোপেডিক, জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট কার্ডিওগ্রাপি, জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট চক্ষুসহ ২৪টি পদে চিকিৎসক শুন্য রয়েছে। নার্সিং বিভাগে ২৬টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ১২ জন। শুন্য পড়ে আছে ১৪টি পদ। ৩য় শ্রেণীর কর্মকর্তা কর্মচারী পদে ১১৫ জনের বিপরীতে শুন্য রয়েছে ৩৯ জন। বিশেষ করে উপজেলার বিভিন্ন কমিউনিটি কিনিকে কর্মরত ৩৯ জন স্বাস্থ্য সহকারীর বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ১৭ জন। শুন্য পড়ে আছে ২২ টি পদ। এতে তৃনমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।


বেশ কয়েক বছর পূর্বে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। এরপর পুরাতন ভবনটি ২০১৪ সালে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করার পর ওই ভবনের রোগীদের নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হয়। এতে মারাত্বকভাবে স্থান সংকট দেখা দেয়। গড়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগীকে ভর্তি রাখতে গিয়ে মারাত্বকভাবে সেবা দান ব্যহত হচ্ছে বলে কর্মরত চিকিৎসকগণ জানান। কত বছর ধরে এক্স-রে মেশিনটি বন্ধ পড়ে আছে তা কেউ জানেনই না। কর্মকর্তাদের লেখালেখির পর একটি চায়না ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন আনা হলেও সেটাও বিকল পড়ে আছে রেডিওলজিষ্ট এর অভাবে। ইসিজি মেশিনটিও বিকল। সেখানে ও টেকনিশিয়ান নেই। ডেন্টাল বিভাগে কয়েক লক্ষ টাকার যন্ত্রপাতি পড়ে আছে কিন্তু ডেন্টিষ্ট নাই। মেশিন চালনার উপযোগী বিদ্যুৎ ভোল্টেজ ও মেলেনা বলে অভিযোগ রয়েছে।


শৈল্য চিকিৎসক মোঃ মাসুদ সাত্তার সপ্তাহে ৩ দিন অনুপস্থিত থাকেন এ বিষয়ে তার মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেই আমি কর্মস্থলের পরিবর্তে খুলনাতে থাকি। আর সপ্তাহে ৩ দিন কেন আসেন না এমন প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে চেম্বারে এসে দেখা করার জন্য অনুরোধ করেন।


এসব বিষয়ে কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাক্তার মাসুম ইকবালের সাথে। তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, সীমাবদ্ধতা ও জনবল সংকট থাকা সত্বেও আমরা রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছি। উপরে উল্লেখিত বিষয় তার দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি স্থান সংকট, জনবল সংকট, বিভিন্ন মেশিনারিজ বিকলের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি। শৈল্য চিকিৎসক মাসুদ সাত্তারের বিষয়ে বলেন, তিনি ৩ দিন কেন আসেন না এটা আপনারাও একটু খোজ খবর নেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত