ক্রেতা দিমজুর আলী আকবর বলেন, ১১০টাকার পেঁয়াজ এখন ১৫০/১৬০টাকায় কিনতে হচ্ছে। আমরা গরীব মানুষ কিভাবে এতো বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে খাবো। অন্যান্য মালের দামও বেশি, আমাদের পরিবার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
ক্রেতা জাহাজের সাধারণ শ্রমিক হালিম সরদার বলেন, গতকাল শুক্রবার আধা কেজি পেয়াজ কিনেছি ১১০টাকা দরে। আজ শনিবার বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসে দেখি ২০০টাকা কেজি। আজ (শনিবার) আর পেঁয়াজ কিনতে পারিনি।
ক্রেতা মোঃ ফরিদ বলেন, ১১০টাকা টাকার পেঁয়াজ এখন ১৫০টাকা চাইছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, আমদানী বন্ধের কারণে নাকি দাম বেড়েছে।
ক্রেতা গৃহিনী লিপি ও লাইজু বলেন, ১শ টাকা দিয়ে যে পেঁয়াজ কিনেছি তা এখন ১৪০টাকায় কিনছি। তাও আবার ভাল না, বেশির ভাগই নষ্ট, খাওয়া যাবে কিনা জানিনা। আর ভালটার দাম আরো বেশি, সেটা ১৬০টাকা চাইছে।
ক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, ১০৫/১১০টাকার পেঁয়াজ এখন ১৩০থেকে ১৬০টাকা হয়েছে, যা মুলত আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে।
আর বিক্রেতারা বলছেন, বর্ডার বন্ধ, সরবরাহ কম তাই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা আরো বলছেন, খুলনার মোকামে পেঁয়াজ নেই, যা আছে তারও দাম বেশি, আমরা কি করবো!
পেঁয়াজ ব্যবসায়ী/বিক্রেতা রহিম হাসান বলেন, দাম বাড়ায় পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছিনা, ক্রেতারা বলছেন ডাকাতি করছি নাকি। তিনি আরো বলেন, খুলনায় পেঁয়াজের কেজি ১৬০টাকা, আর খরচ মিলিয়ে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে ১৭০টাকায়।
পেঁয়াজ বিক্রেতা মোঃ সেলিম বলেন, গতকাল শুক্রবার খুলনার মোকামে খোঁজ নিলে মহাজনেরা বলেছেন পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪০/৫০টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মহাজনেরা আমাদেরকে বলেছেন ভারত থেকে নাকি পেঁয়াজ আসা বন্ধ রয়েছে। সেই কারণে দাম বেড়েছে। দাম বাড়ায় গতকাল শুক্রবার খুলনা থেকে মোংলায় কোন পেঁয়াজ আসেনি। ফলে বাজারেও পেঁয়াজ কম, তাই দোকানদার ও ব্যবসায়ীরা আগের পেঁয়াজই ১৫০থেকে ১৮০টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।
এদিকে বাজারে পেঁয়াজ থাকলেও দাম বাড়ার অজুহাতে সেগুলো গোডাউনে মজুদ রেখে কম কম বের করে বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা এমন অভিযোগ স্থানীয় ক্রেতা সাধারণের। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাড়তি দামের পেঁয়াজ এখনও মোংলার বাজারে আসেনি, কিন্তু ব্যবসায়ীরা আগের কম দামে কেনা পেঁয়াজ এখন খামখেয়ালীভাবে আমাদের জিম্মি করে চড়া দামে বিক্রি করছেন।
এক রাতের ব্যবধানে নানা অজুহাতে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ঘটনাটি সিন্ডিকেটের কারসাজি উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এইচ এম দুলাল। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখেই হয়তো সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই একটি চক্র এমন কারসাজি করছেন। এটি সরকারের খতিয়ে দেখার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
পেঁয়াজের দামের এ উর্ধগতিতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। পেঁয়াজসহ সকল পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনসহ সরকারের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ক্রেতা সাধারণ।