ভ্রাম্যমাণ খাওয়ার পানি সরবরাহে মানুষের স্বস্তি

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ১০:০০ পিএম, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১ | ৮৬৯

উপকূলীয় উপজেলা বাগেরহাটের শরণখোলায় গত কয়েকমাস ধরে চলছে খাওয়ার পানির তীব্র সংকট। পাশেই বিশাল পানির আধার বলেশ্বর নদ। অথচ মানুষের ঘরে খাওয়ার পানি নেই এক ফোটাও। পুকুরগুলো শুকিয়ে জল গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে। পানির অভাবে পিএসএফগুলোও বন্ধ। চারিদিকে পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। এরই মধ্যে ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়াসহ নানা পানিবাহিত রোগ। এ অবস্থায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে মানুষ।


জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় বুধবার (২১এপ্রিল) বিকেল তিনটা থেকে শরণখোলা প্রেসক্লাবের সামনের পুকুরে ‘মোবাইল ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’ বসিয়ে শুরু হয়েছে ভ্রাম্যমাণ পানি সরবরাহ কার্যক্রম। উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজার ও আশপাশের শত শত মানুষ কলস,বালতি, ড্রাম যার যা আছে তাই নিয়ে ছুঁটছেন প্লান্টের কাছে। লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন একটু পানির আশায়। অবশেষে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে হাসিমুখে ফিরছেন তারা।

পানির জন্য অপেক্ষমান রায়েন্দা বাজারের বাসিন্দা কামাল তালুকদার, নূর জাহান বেগম, কল্পনা রাণী, রেনু বেগমরা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, পানি কিনে খাওয়ার মতো সামর্থ তাদের নেই। একেতো রমজান মাস, তার ওপর করোনার লকডাউন। ঘরে খাওয়ার পানি নেই। পুকুরের পানি ফিটকিরি দিয়ে খেতে হয় তাদের। এমন পরিস্থিতিতে একটু বিশুদ্ধ পানি যেনো তাদের কাছে মধুর সমান।


উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মেহেদেী হাসান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, মোবাইল ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে ঘন্টায় ৬০০লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব। কোনোরকম কেমিক্যাল ছাড়াই এই প্লান্টের মাধ্যমে ঘোলা পানি স্বচ্ছ, জীবাণু এবং লবণাক্ততামুক্ত শতভাগ বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়। এই প্লান্টের যাবতীয় খরচ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ বহন করবে বলে জানান তিনি।

শরণখোলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রায়হান উদ্দিন শান্ত ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই উপজেলার সর্বত্র সুপেয় পানির সংকট চলছে। একারণে এলাকায় ডায়রিয়াসহ নানা রকম পানিবাহিত রোড় ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদের জরুরী সভার সিদ্ধান্তে পানি সমস্যা সমাধানের জন্য তাৎক্ষণিক এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এতে মানুষের অনেক উপকার হবে। চলমান সংকট নিরসন না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত