সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল: বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত

মোংলা ও সুন্দরবনের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি: ভেরীবাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে এলাকা

মো.মাসুদ রানা, মোংলা

আপডেট : ০৬:৩০ পিএম, শনিবার, ২২ আগস্ট ২০২০ | ৪৫০

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবন উপকুলে থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাতসহ ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এ কারনে বন্দরে অবস্থানরত বানিজ্যিক জাহাজ সমূহের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। বিরাজ করছে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। এ দিকে মোংলা বন্দরের পশুর ও সুন্দরবনের নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ। রাত ও দিনের দু’ফার জেয়ারের পানিতে সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্র সহ প্লাবিত হয়েছে বনাঞ্চলের নি¤œাঞ্চল। ফলে বাঘ-হরিন সহ বণ্যপ্রানীরা গভীর বনের উচু স্থানে অবস্থান করতে দেখাগেছে বলেও জানায় বনকর্মীরা।

সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ভরাকাঠালের প্রভাবে জেয়ারের পানি বৃদ্ধির ঘটনা বিরল। গত ২০ বছরের মধ্যে সুন্দরবনের নদী ও খালে জোয়ারের পানি বৃদ্ধির রেকর্ড ভেঙ্গেছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রজনন কেন্দ্রের কুমির,হরিন,কচ্ছপ ও বানর সহ সকল প্রাণীকে বেড়ীগেট দিয়ে নিরাপদে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করেই টিকে আছে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ও প্রাণীকুল। তাই জোয়ারের প্লাবন ও বনের অভ্যন্তরের পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রাণীকুলের বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিতে পারে। তবে নদীর পানী এখনও মিস্টি থাকায় বনের অভ্যান্তরে পুকুর গুলোতে তেমন সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে বণ্যপ্রানীর ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য সার্বিক বিষয় নজরদারী ও শংকায় রয়েছে তারা।

এদিকে, উপজেলার কানাইনগর এলাকায় ঘুর্নিঝড় আম্পানে ভেঙ্গে যাওয়া ভেরীবাঁধ সংস্কার করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। মাত্র এক মাসের ব্যাবধানে নির্মান করা নতুন ভেরীবাঁধ পুনরায় ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে যায় পুরো এলাকা। পানি উঠে তলিয়ে যায় ঘরবাড়ী ও পুকুরসহ অনেক স্থাপনা। সেখানকার মানুষের অপুরনীয় ক্ষতি হয়েছে, ভেসে গেছে পুকুরে থাকা মাছ ও ঘরের আসবাব পত্র ও মুল্যবান মালামাল।


অপরদিকে, সুস্পষ্ট আকারে অবস্থানরত লঘুচাপটি দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এ কারনে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ উপকুলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দর সমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে সমুদ্র বন্দর সমুহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। সমুদ্র উত্তাল থাকায় তীরে ফিরছে সমুদ্রগামী জেলেরা। এ কারনে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নৌকা ও ট্রলার সমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকুলের কাছাকাছি সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত