নৌযান শ্রমিকদের ২৯ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতীর হুমকি

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৯:৫৮ পিএম, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৯ | ৫০২

সন্ত্রাস,চাঁদাবাজী ও হয়রানী বন্ধসহ ১১ দফা দাবীতে দেশের অন্যান্য জায়গায় নৌ-যান শ্রমিকদের কর্ম বিরতী চললেও মোংলা বন্দরে তার কোন প্রভাব পরেনী। বন্দরের বহিঃনঙ্গর, হারবাড়িয়া ও জেটি এলাকায় দেশী-বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজে কার্যক্রম চলছে যথা নিয়মে। এ বন্দরে ২২টি বানিজ্যিক জাহাজ অবস্থানরত থাকায়, যাতে কার্গো-বার্জ ও লাইটার জাহাজগুলোতে পন্য খালাস ও বোঝাই চলছে বলেও জানায় বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ। তবে ২৯ নভেম্বর থেকে পুনরায় লাগাতার ধর্মঘাটের হুশিয়ারী নৌযান সংগঠনের নেতৃবৃন্দের।

এদিকে নৌযান শ্রমিক সংঘঠনের মোংলা শাখার কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, নৌ-শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা কর্মবিরতিতে অংশ নিতে প্রায় ২০ হাজার নৌযানের (কার্গো, কোস্টার, বার্জ, বাল্কহেড, লঞ্চ, ট্যাংকার) প্রায় ২ লাখ শ্রমিক রয়েছে। দীর্ঘ দিন নৌ-যান শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি না মেনে কাল ক্ষেপন করছেন মালিক পক্ষ। এর ফলে তারা বাধ্য হয়ে ১১ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করতে যাচ্ছে। এজন্য মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল ও মোংলা নদীতে পণ্য বোঝাই ও খালি কার্গো জাহাজগুলো যে যেভাবে থাকবে আগামী ২৯ নভেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে কর্ম বিরতী পালন করবে সবাই। তবে তাদের সবকটি দাবি মানা না হলে কর্মবিরতী অনিদৃষ্টকালের জন্য অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ফেডারেশনের এ নেতা।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোঃ বাহারুল ইসলাম বাহার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানায়, নৌ-যান জাহাজের কর্মরত প্রতেক নৌ-শ্রমিককে মালিকের পক্ষ থেকে খাবারের ব্যাবস্থা করা, নৌ-পথে সন্ত্রাস, চাদাঁবাজী, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাশ, দুর্ঘটনায় মৃত্যু কর্মস্থলে নৌ-শ্রমিকের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরন প্রদান, ২০১৬ সালের ঘোষিত বেতন স্কেলের পূর্ণ বাস্তবায়ন,মাষ্টার/ড্রাইভারদের ইনচার্জ, এনড্রোসমেন্ট ও টেকনিকাল ভাতা পুর্ন নির্ধারন, সমুদ্রবাতা ও রাত্রীকালীন ভাতা, নদীর নাব্যতা রা, নদীতে প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপনসহ ১১ দফা দাবিতে আগামী শুক্রবার রাত ১২টা ১মিনিট থেকে মোংলা বন্দরসহ সারাদেশে নৌযান চলাচল বন্ধ রেখে কর্মবিরতী পালন করবে নৌযান শ্রমিকেরা।

কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আরো জানায়, বার বার সরকার ও মালিক পক্ষ তাদের ন্যায্য দাবী মেনে নেয়ার আশ্বাস দিচ্ছে কিন্ত তা পুরন করছে না। তাই আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে তাদের ১১ দফা দাবী না মানা হলে এদিন রাত ১২টা ১মিনিট থেকে দেশ ব্যাপি অনিদিষ্ট কালের কর্মবিরতী পালনের মালিক পক্ষকে হুশীয়ারী জানায় সংঘঠনটির নেতারা। এর আগে ১১দফা দাবী আদায়ে লক্ষে চলতি বছরের ২৪ জুলাই দেশ ব্যাপি অনিদিষ্ট কালের কর্মবিরতী শুরু করেছিলেন নৌযান শ্রমিকরা। পরে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পরবতী ৪৫ কার্য দিবসের মধ্যে মালিক-শ্রমিক বসে সমাধের আস্বাসে কর্মবিরতী প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু এর পর নৌযান মালিকরা শ্রমিকদের দাবী নিয়ে বিভিন্ন বাহানা করে সময় ক্ষেপন করছেন এমন দাবী করে আবারও ২৯ নভেম্বর মধ্য রাত থেকে কর্মবিরতীর ঘোষনাদেন নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ। এদিকে মোংলা বন্দর কতৃপক্ষে হারবার মাস্টার কমডোর ফখর উদ্দিন জানিয়েছেন, নৌযান শ্রমিকরা পুনরায় ধর্মঘট পালন করলে লোকসানের মুখে মোংলা বন্দর এবং ব্যবসায়ীদের। তবে অন্যান্য জায়গায় নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতী পালন করলেও মোংলা বন্দরে অবস্থানরত বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহন কাজ চলছে আগের মতো।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত