নিজেই রোগী হয়ে আছে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি

কচুয়া প্রতিনিধি

আপডেট : ০৪:২৪ পিএম, শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ | ২৭৯৪

কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম শ্রেনীর ২৯টি পদের মধ্যে ২৩টি পদই খালি রয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এ হাসপাতাল ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার পর ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও পায়নি পূর্ণাঙ্গ রূপ। আগের লোকবল দিয়ে চলছে ৫০ শয্যার এ হাসপাতাল। জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনী পদে লোক আছে, তবে তিনি কচুয়ার পরিবর্তে প্রেষণে দায়িত্ব পালন করেন বাগেরহাট সদর হাসপাতালে। চিকিৎসক সংকটের কারণে কচুয়া হাসপাতাল হতে অধিকাংশ সময় রোগীদের বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে ভুক্তভোগীরা জানান।

হাসপাতালের মাসিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দৈনিক গড়ে প্রায় ১০ জন রোগী ভর্তি হয়ে হাসপাতালে গড়ে প্রায় পাঁচদিন অবস্থান নিয়ে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। জরুরী বিভাগ হতে প্রতিদিন গড়ে ২৫১ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। ভূক্তভোগীরা জানান, সরকারী একমাত্র এ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল রয়েছে। এ্যাম্বুলেন্সের মতো রুগ্ন অবস্থা প্যাথলজি ব্যবস্থাপনার। পাম্প মেশিনটি অকার্যকর থাকায় প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ হচ্ছে না। তবে চিকিৎসক সংকটের মতো নানা সমস্যার মধ্যেও ডাঃ মোঃ মনজুরুল আলম এর উদ্যোগে চলছে সিজার, সাধারণ গর্ভপাতসহ অপারেশনের কাজ। এছাড়া হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।


হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের ১২ এপ্রিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেন। সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত ১৬৩টি পদের মধ্যে ১০২টি পদে লোকবল আছে। ৬১টি পদই রয়েছে শূণ্য। প্রথম শ্রেনীর ২৯টির মধ্যে ২৩টি, দ্বিতীয় শ্রেনীর ২৬টির মধ্যে আটটি, তৃতীয় শ্রেনীর ৮৪টির মধ্যে ২৫টি এবং চতুর্থ শ্রেনীর ২৪টির মধ্যে ছয়টি পদ শূণ্য রয়েছে।


এছাড়া জেনারেটর, ইসিজি মেশিন বিকল হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন। ফলে কচুয়ার প্রায় এক লাখ মানুষ যথাযথ স¦াস্থ্যসেবা ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রথম শ্রেনীর গুরুত্বপূর্ণ শূণ্য পদগুলো হচ্ছে- আবাসিক মেডিকেল অফিসার, জুনিয়র কনসালটেন্ট- শিশু, গাইনী, চক্ষু, মেডিসিন, শৈল্য, এ্যানেসথেসিয়া, অর্থো, কার্ডিওলজি, ইএনটি, চর্ম ও যৌন। মঘিয়া ও গোয়ালমাঠ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য দুইজন মেডিকেল অফিসার, প্যাথলজিষ্ট, এ্যানেসথেটিষ্ট, মেডিকেল অফিসার (আয়ুর্বেদিক) এবং গজালিয়া, ধোপাখালী, কচুয়া সদর, গোপালপুর, বাধাল ইউনিয়নের প্রতিটিতে একজনসহ মোট সাতজন সহকারী সার্জন। কচুয়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ১২টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে।

কচুয়া উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান নাজমা সরোয়ার হাসপাতালের নানা সমস্যা সমাধানের দাবী জানিয়ে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন,‘সবার আগে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালের জন্য নতুন একটি এ্যাম্বুলেন্স, সরকারের বরাদ্দকৃত সকল চিকিৎসকসহ লোকবল নিয়োগ জরুরী। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলহাজ¦ মোঃ মনজুরুল আলম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ‘৫০ শয্যার লোকবল পরিপূর্ণভাবে পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। হাসপাতালের কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার ও অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডাঃ জিকেএম সামসুজ্জামান মুঠো ফোনে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি নতুন নিয়োগ হলে সমাধান হবে। সকল অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত