বাগেরহাটে অনলাইন প্রশ্নপত্রে পরিক্ষায় খুশি শিক্ষার্থীরা
আপডেট : ০৪:৫২ পিএম, সোমবার, ১ অক্টোবর ২০১৮ | ১০৬১
যশোর শিক্ষাবোর্ডের প্রশ্নপত্রে একযোগে বোর্ডের আওতাধীন বিদ্যালয়ে এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এই অনলাইন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষায় অংশ নেয়া বাগেরহাটের শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অভিভাবকরাও খুশি এই পদ্ধতিতে।
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় সৃজনশীল প্রশ্ন প্রণয়ণে ত্রুটি, শিক্ষার্থীদের ভীতি ও প্রশ্নপত্র ফাঁস একটি সাধারন বিষয়। এ ত্রুটিগুলি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ২ বছর ধরে কাজ করে চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ যশোর শিক্ষা বোর্ডের অনলাইন প্রশ্ন ব্যাংক দেশে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে যশোর বোর্ডের প্রশ্ন ব্যাংক থেতে প্রশ্ন ডাউনলোড করেই ৯ম -১০ম শ্রেণির পরীক্ষা বাধ্যতবমূলক করেছেন যশোর শিক্ষা বোর্ড।
জানাগেছে, সোমবার (পহেলা অক্টোবর) থেকে অনুষ্ঠিত এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় একযোগে বোর্ডের আওতাধীন সকল বিদ্যালয়ে একযোগে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইডে এ বিষয়ে একটি নোটিশ ও নির্বাচনী পরীক্ষার সময় সুচি দেয়া হয়। এতে ১৭ টি বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বোর্ড কর্র্তৃপক্ষ সরবরাহ করবে এবং সকল স্কুলকে এই সরবরাহকৃত অন-লাইন প্রশ্নে বাধ্যতামূলক পরীক্ষা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বোর্ড কর্র্তৃপক্ষ সকল শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন প্রনয়ন করে আপলোড করার নির্দেশনা দেন। এসএসসি পরীক্ষার মতো এ নির্বাচনী পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট পূর্বেই পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শিক্ষকদের তৈরিকৃত প্রশ্নের মধ্য থেকে প্রশ্ন বাছাই করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয় বলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানান।
বাংলা প্রথম পত্র বিষয়ের পরীক্ষায় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় নিতে দিতে দেখা যায়। এ বিষয়ে চুলকাঠি ঘনশ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশীল কুমার বিশ্বাস বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বোর্ডের সরবরাহকৃত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ায় প্রশ্নের মান ভাল হচ্ছে। বোর্ডের প্রশ্নে ভুল নেই বললে চলে।
অমিত দাশ নামের একজন অভিভাবক বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, প্রশ্ন বা ভাল ফলাফলের লোভ দিয়ে শিক্ষার্থীদের জিম্মি হবার কথা সুযোগ নেই।
বাগেরহাট বিএসসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝিমি মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এবার পরিক্ষা নিতে কোন রকম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। সঠিক সময় সঠিক ভাবে প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করে পরিক্ষা নিতে পেরেছি। বোর্ড কর্তৃপক্ষসহ সকলের আন্তরিকতায় সম্ভব হয়েছে। এতে প্রশ্নপত্র ফাসঁ হওয়ারও সুযোগ থাকে না।
বাগেরহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদা আক্তার কয়েকটি স্কুলের পরীক্ষা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, বোর্ডের সরবরাহকৃত প্রশ্নে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে সাবলীল বোধ করছে এবং শিক্ষার্থীরা বোর্ডের প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে অভ্যস্থ হচ্ছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর এর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, শিক্ষার্থীরা এখন ষ্ট্যান্ডার্ড প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে পারছে। শিক্ষকদের তৈরিকৃত প্রশ্নের মধ্য থেকে মাত্র একদিন আগে প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়ে থাকে। এতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সম্ভাবনা থাকে না। এ ধরণের প্রশ্নে নির্বাচনী পরীক্ষা দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা যেভাবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও মানদন্ডে অভ্যস্ত হচ্ছে, এতে এসএসসি পরীক্ষায় তাদের মধ্যে ভয়ের উপদ্রব থাকবেনা। অনেকক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র বা পরীক্ষার সাজেশনের আশায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কাছে পড়তে বাধ্য হয়। এ ধরণের প্রশ্নে পরীক্ষা হওয়ায় শিক্ষকদের কাছে শিক্ষার্থীদের জিম্মি হবার কোন সম্ভাবনা থাকছে না। ৩০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করাতে প্রশ্ন ফাঁস থাকার কোন সম্ভাবনা নেই।