পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১তলা ভবনটিও বেহাত:শুভদিয়ার ভোলা নদীর চর

ফকিরহাটের খাস জায়গা জবর দখল

পি কে অলোক

আপডেট : ০২:২৮ পিএম, রোববার, ৮ অক্টোবর ২০১৭ | ১২৩৬

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১তলা ভবনটি বেহাত

ফকিরহাটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহনকৃত বিপুল পরিমানের সরকারী জায়গা জবর দখলের প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুদৃষ্টি না থাকায় যে যার মত রাতা রাতি বেড়া দিয়ে ও মাটি কেটে ভরাট করে এসকল সরকারী খাস জায়গা জবর দখল করছে। এতে একদিকে যেমন সরকারের বিপুল পরিমানে খাস জমি বেহাত হচ্ছে,অন্যদিকে মরা ভোলা নদীটি তার গতি হারিয়ে চারণ ভূমিতে পরিনত হচ্ছে। এঅবস্থা চলতে থাকলে আগামী বর্ষা মৌসুমে পানি সরবরাহের পথ বন্ধ হয়ে তিন উপজেলার প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে বন্যার রুপ ধারন করবে। অতিদ্রুত অবৈধ জবর দখলকারীদের উচ্ছেদ পূর্বক আইনগত পদপে গ্রহন করা না হলে রাতারাতি বাকি নদীর চর দখল হয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে, শুভদিয়া ইউনিয়নের শেষ সিমানায় অর্থাৎ গৌরম্ভা বাজারের পার্শ্বে ফকিরহাট সিমান্তের মধ্য দিয়ে মরা ভোলা নদীটি প্রবাহিত। এই নদী দিয়ে এক সময় লঞ্চ ইষ্টিমার ট্রলার বা বড়বড় নৌকা চলাচল করতো। কিন্তু কালক্রমে বিশাল নদীটি মরে গিয়ে বিপুল পরিমানের জমিতে চর জেগেছে। সেই চরের জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ড অধিগ্রহন করেন।

শুধু তাই নয়,নদীটি দিয়ে যাতে সহজে পানি সরবরাহ করতে পারে সে জন্য তৎকালিন সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি সুইচগেট নির্মান করেন। এবং সেই সুইচ গেটটি দেখা শুনা করার জন্য একটি ১তলা পাকাঁ ভবন নির্মান এবং ১জন পাহারাদারও নিয়োগ করেন। এই অবস্থায় দীর্ঘকাল চলার পর বিগত সরকারের আমলে রাতারাতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেই ১তলা ভবনটি দখল হয়ে যায়। সেই সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিপুল পরিমানে সরকারী খাস জায়গা বেড়া দিয়ে ঘিরে ও নদীর পলি মাটি কেটে তা ভরা করে সেখানে স-মিল দোকানপাট ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান করে তা জবর দখলের প্রতিযোগীতা চলছে।

এলাকার একটি কুচক্রি মহল দীর্ঘকাল ধরে সরকারী বিপুল পরিমান জায়গা কোন প্রকার বন্দোবস্তো ছাড়াই দখল করে ফেলেছেন। আর এই জবর দখল করার ফলে একদিকে যেমন সরকারী বিপুল পরিমানে খাস জমি বেহাত হচ্ছে,অন্যদিকে মরা ভোলা নদী তার গতি হারিয়ে চারণ ভূমিতে পরিনত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। স্থানীয় সমাজসেবক জি,এম,মহিবুল ইসলাম, শেখ হায়াত মাসুদ ও ইউপি সদস্য প্রদিশ অধিকারীর সাথে আলাপ করা হলে তাঁরা বলেন, বিগত সরকারের সময়ে এলাকার একটি সুবিধাবাদী গ্রুপ নদীর চর দখল প্রতিযোগীতা শুরু করেন। তার পর হতে রাতা রাতি বেড়া দিয়ে সেখানে একের পর এক বিভিন্ন ব্যাক্তি দখলে নিচ্ছে। এদের কারণে নদীটি সংকুচিত হয়ে ছোট্ট হচ্ছে। অতিদ্রুত এদের উচ্ছেদ করা না হলে ভোলা নদীটি তার নাব্যতা হারিয়ে বিলীন হয়ে যাবে।

শেখ হেলাল উদ্দীন ডিগ্রী মহা-বিদ্যালয়ের অধ্য বটুগোপাল দাশ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ২০০০সালে যখন কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল,তখন কোন দখলকারী ছিলনা। সেটি ছিল পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন। তারাও যে লীজ দিয়েছেন তাও কোন দিন শুনিনী। অথচ রাতারাতি মরা নদীর চর দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করা হচ্ছে। এই ভাবে সরকারী জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মান করা হলে নদীটি তার গতি হারিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য চরম ভাবে নষ্ট হবে।

ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শহীদুল ইসলাম এর সাথে আলাপ করা হলে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, বিগত সরকারের সময় নদীর চর দখল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এদের উচ্ছেদ করা না হলে নদীটি যখন পূনঃ খনন করা হবে তখন বড় ধরনের সমস্যার সম্মূখীন হতে হবে।

এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য সচেতন জনগন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সহ বিভিন্ন উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের আশুহস্তপে কামনা করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত