রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও স্যালাইন সঙ্কট

এম,এ সবুর রানা, রামপাল

আপডেট : ০৭:১০ পিএম, শুক্রবার, ৮ জুন ২০১৮ | ৮৪৭

রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সঙ্কট ও কলেরা স্যালাইনের সঙ্কট প্রকট আকার ধারন করেছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা। তীব্র গরমের কারনে বেশ কিছুদিন ধরে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন রোগীর তুলনায় বরাদ্দের কম থাকায় মারাত্বক ভোগান্তিতে পড়েছে গরীব শ্রেনীর লোকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে মঞ্জুরীকৃত পদের সংখ্যা ১৯৭ টি এর বিপরীতে আছেন ১১২ জন। ১৮৫ টি পদ দীর্ঘ দিন ধরে শূণ্য পড়ে রয়েছে। ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রথম শ্রেনীর মোট ৩২ জন চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র ৬ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এর মধ্যে জুনিয়র কনসালট্যান্ট শিশু বিষয়ের চিকিৎসক ডাঃ এ,বি,এম হাবিবুল্লাহ গত ইং ০৫/০৬/২০১৬ তারিখ থেকে প্রেষনে ঢাকার একটি হাসপাতালে দায়িত্ব পালণ করছেন। অপর জন জুনিয়র কনসালট্যান্ট অর্থপেডিক বিষয়ের চিকিৎসক ডাঃ এ, এম ফরিদ উদ্দিন গত ইং ০৫/০৩/২০১৫ তারিখ থেকে ঢাকার একটি পঙ্গু হাসপাতালে কর্মরত আছেন। কাগজে কলমে ৬ জন ডাক্তার থাকলেও ২ জন রয়েছেন বাহিরে। ডাঃ এ,বি,এম হাবিবুল্লাহ ২ বছর ও ডাঃ এ, এম ফরিদ উদ্দিন প্রায় ৩ বছর কর্মস্থলের বাইরে রয়েছে। একজন শৈল্য চিকিৎসক, একজন মেডিকেল অফিসার ও একজন সহকারি সার্জন দায়িত্ব পালন করছেন। মেডিকেল অফিসার ঝুমুর রানী দাস মহিলা হওয়ায় এবং তার কোলে একজন শিশু থাকায় তিনি নৈশ ডিউটি করতে পাছেন না।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় শুধুমাত্র মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফজলে কবির আবাসিক মেডিকেল অফিসারের দায়িত্বসহ ইনডোর এবং আউটডোরে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, কয়েকজন স্বাস্থ্য সহকারি দিয়ে আউটডোরের রোগীদের দেখা হচ্ছে। এতে আমাদের ভিষন সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরও জানান প্রথম শ্রেনীর ৩২ জন চিকিৎসকের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে ৪ জন চিকিৎসকের। এর মধ্যে ২৮টি পদ শূন্য পড়ে রয়েছে। ২নং শ্রেনীর নার্সিং সুপারভাইজারসহ বিভিন্ন পদের সংখ্যা মোট ২৬টি। এর মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন ১২ জন শূন্য পড়ে রয়েছে ১৪ টি পদ। ৩য় শ্রেনীর ১১৫টি পদের মধ্যে ৭৬ জন কর্মরত আছেন ১৪ টি পদ শূন্য রয়েছে। ৪র্থ শ্রেনীর পদ রয়েছে ২৪ টি এর মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন ১৮ জন শূন্য রয়েছে ৬ টি পদ।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাছুম ইকবাল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, হঠাৎ করে চিকিৎসক সংকট দেখা দিয়েছে। তীব্র তাপদাহের কারনে হাসপাতালে হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগী বেড়ে যাওয়ায় কলেরা স্যালাইন সংকট কিছুটা দেখা দিয়েছে তবে অচিরেই এসব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সমস্যার বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পাল এর দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমি জেলা মাসিক সমন্বয় সভায় হাসপাতালের সার্বিক সমস্যার বিষয়ে তুলে ধরে জেলা প্রশাসক মহোদয় ও সিভিল সার্জন মহোদয়ের কাছে সমস্যা সমাধানের জন্য আবেদন জানিয়েছি। অচিরেই সকল সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চলছে।


চিকিৎসক ও জনবল সংকট এবং কলেরা স্যালাইন সংকটের বিষয়ে বাগেরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ অরুন চন্দ্র মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, চিকিৎসক ও জনবল সংকট সমস্যার সমাধানে আমরা কাজ করছি। আপাতত একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এক মাসের মধ্যে আরও চিকিৎসক দেওয়া হবে আর কলেরা স্যালাইন সংকট সমাধানে এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত