উৎপাত দমনে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি

মোংলায় মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ পৌরবাসী

মাসুদ রানা, মোংলা

আপডেট : ০৯:৫৭ পিএম, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪ | ১২১

মোংলা শহর ও শহরতলী জুড়ে বেড়েছে মশার অত্যাচার। দিনে-রাতে ঝাঁকে ঝাঁকে মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ শহরবাসী। কী অফিস, কী বাসাবাড়ি, কোনো স্থানেই মশা থেকে নিস্তার নেই। সব স্থানেই বেড়েছে মশার অত্যাচার । পৌরসভার পক্ষ থেকে মশা দমনে মাঝে মধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে দাবি করছেন নাগরিকরা। শহরবাসী মশার উৎপাত দমনে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে।



স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে মোংলা শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ মশার উপদ্রব বেড়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকার ড্রেন ও জলাশয়-ডোবা-নালা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এগুলো মশার প্রজণনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ শহরতলীর মিয়াপাড়ার বাসিন্দা আবুল হাসান বলেন, সাধারণত শীত মৌসুমে মশার দাপট কম থাকে । তবে এবার একেবারেই ভিন্ন চিত্র। এই সময়ে দিনের বেলায় মশার উৎপাত কিছুটা কম থাকলেও সন্ধ্যার পর তা বেড়ে যায় কয়েকগুণে। অব্যাহত মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন মানুষ । তিনি বলেন, মশার উপদ্রবে অতিষ্ট এলাকাবাসী। মশার কামড়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি মানুষের দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। কয়েল জ্বালিয়েও রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় দিনে-রাতে ছেলে-মেয়েদের কয়েল বা মশারি দিয়ে পড়াশোনা করতে হচ্ছে।



একই এলাকার একজন গৃহিণী বলেন, পবিএ রমজান মাসে মশার উৎপাতে ভোগান্তি অনেক বেড়েছে। ইফতার ও সেহরীর সময়ে মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠতে হচ্ছে। অনেক সময় নামাজ পড়তে বসলেও মশার কামড় সহ্য করতে হচ্ছে।


পৌরসভার কলেজ এলাকায় বসবাসরত কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক মশার উপদ্রব দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আশপাশ এলাকার ড্রেন-নর্দমার ময়লা নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে মশার প্রজনন বেড়েই চলছে। এজন্য পৌর কর্তৃপক্ষের মশক নিধন কার্যক্রম গ্রহণ না করাকেই দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।

নাগরিকদের অভিযোগ, মাঝে মধ্যে মশা দমনের জন্য কিছু কিছু এলাকায় ওষুধ ছিটানো হলেও তা পর্যাপ্ত হয় না। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছোটবড় বিভিন্ন এলাকার যেসব পুকুর-জলাশয় রয়েছে সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এগুলো মশার প্রজণনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ঠাকুর রানী ও কুমারখালী খালে ময়লা-আবর্জনা পলিথিন ও প্লাস্টিকের বোতল জমে থাকায় এবং পানি ঠিকমতো নামতে না পারায় দূষিত পানিতে মশার জন্ম হচ্ছে। এসব কারণে শহরে মশার উপদ্রব বাড়ছে বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।

মোংলা নাগরিক সমাজের আহবায়ক মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, শুধু অফিস আর বাসাবাড়ি নয়, সব খানেই ঝাকে ঝাকে মশা। কোনো স্থানেই মশার আক্রমন থেকে নিস্তার নেই। সব স্থানেই বেড়েছে মশার অত্যাচার। মশার উৎপাতে পৌরবাসী দারুন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ অবস্থায় পৌর কর্তৃপক্ষের মশা দমনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

খোদ পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় মশার উপদ্রব বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে বলেন, নাগরিকদের সুবিধার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডে একযোগে মশা দমন কার্যক্রম শুরু হবে। এ ছাড়া ঠাকুর রানী খালে ইতিমধ্যে আবর্জনা পরিস্কার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মশা দমনে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছি তবে এক্ষেত্রে নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে ময়লা আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত