শরণখোলায় একদিনে ৩ বাল্যবিবাহ  পন্ড , রক্ষা পেল ৬ কিশোর-কিশোরী 

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ১২:৩৩ এএম, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩ | ৪৪৯

প্রতিকী ছবি

শরণখোলায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে ছয় কিশোর-কিশোরী। বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৪টা থেকে দিবাগত রাত ১টার মধ্যে একদিনেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছিল ৩টি বাল্যবিবাহের প্রস্তুতি।

গোপন সংবাদের মাধ্যমে এসব বাল্যবিবাহের খবর পৌঁছে যায় উপজেলা প্রশাসসেনর কাছে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদুল ইসলাম পর পর তিনটি বিবাহস্থলে উপস্থিত হয়ে তা পণ্ড করে দেন। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ছেলে ও মেয়ের অভিভাবকদের অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের উত্তর সোনাতলা গ্রামে মেয়ের বাড়িতে স্থানীয় একটি মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর (১৪) সঙ্গে একই ইউনিয়নের উত্তর তাফালবাড়ী গ্রামের ওয়ার্কশপে কর্মকর্তা ১৫ বছরের কিশোরের বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। এসময় ইউএনও হাজির হলে যে যার মতো পালানোর চেষ্টা করেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মেয়ের মাকে ৮ হাজার টাকা এবং ছেলের বাবাকে ১০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এর আগে রাত ১০টার দিকে উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের মালিয়া রাজাপুর গ্রামের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর (১৪) সঙ্গে মেয়ের বাড়িতে চরছিল খোন্তাকাটা ইউনিয়নের নলবুনিয়া বটতলা গ্রামের ১৭ বছরের কিশোরের বিয়ের আয়োজন। এই বিবাহটিও বন্ধ করে মেয়ের মাকে ৭ হাজার টাকা এবং ছেলের বাবাকে ৫হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।


এছাড়া ওইদিন বিকেল ৪টার দিকে রায়েন্দা ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্রীর (১৬) সঙ্গে একই ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুর গ্রামের ১৭ বছরের কিশোরের চলছিল বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা। এমন সময় ইউএও বিবাহস্থলে উপস্থিত হয়ে তা পণ্ড করে দেন। এখানেও ভ্রাম্যমাণ আদালমের মাধ্যমে মেয়ের মাকে ৮ হাজার টাকা এবং ছেলের বাবাকে ৭ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, পর পর তিনটি বাল্যবিবাহ সংঘটিত হওয়ার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে এসব আয়োজন বন্ধ করে দিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ২০১৭ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে উভয় পক্ষকে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। এসময় ছেলে ও মেয়ের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ না দেওয়ার অঙ্গিকার করেন।

ইউএনও বলেন, বাল্যবিবাহ মানে সুন্দর দুটি জীবনকে ধ্বংস করে দেওয়ার আয়োজন। সমাজ থেকে বাল্যবিবাহ দূর করতে অভিভাবকসহ সকলকে সচেতন হতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত