আসামীদের মামলা তুলে নিতে হুমকি 

রামপালে ফারুক হত্যা মামলায় নেই কোন অগ্রগতি

এম, এ সবুর রানা, রামপাল

আপডেট : ১১:০৭ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট ২০২২ | ৩৮৩

প্রতিকী ছবি
রামপালে গত চার মাস পূর্বের একটি হত্যা মামলার কোন অগ্রগতি হয়নি। এ মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামীর মধ্যে একজন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন অপরজন উচ আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে । পলাতক আসামীরা বাদী পক্ষকে মামলা তুলে মিমাংশার জন্য মানসিকভাবে চাপ দিচ্ছে।
জানাগেছে, মামলার বাদী উপজেলার উজলকুড় গ্রামের আশিকুল ইসলাম (২৪) এর বাড়ির কাছে একটি ধান ক্ষেতে গত ইং ০৬-০৪-২০২২ তারিখ সকাল ১০টায় হাসে ধানের জমিতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তার মা খুরশিদা বেগম ও ভাই এনামুলের সাথে একই এলাকার মামলার ৪নং আসামী সিদ্দিক শেখের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতির পর্যায়ে গড়ায়। বাদী আশিকুল ইসলামের ভাই মিজানুর রহমান ওই দিন বিষয়টি ইফতারির পর উভয় পক্ষকে ডেকে মিমাংশার উদ্যােগ নেন। তার ওই উদ্যগ অগ্রায্য করে সিদ্দিক আলী তার ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয় স্বজনদের খবর দিয়ে বাড়িত ডেকে এনে জড়ো করেন। পরে তারা বিকাল সাড়ে ৫ টার সময় আশিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায়।
এসময় আশিকুলের ভাই এনামুল অন্যদের সহায়তা চেয়ে চিৎকার করলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। তার চিৎকার শুনে স্থানীয় বাইতুল আমান জামে মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হওয়া মাত্র আশিকুলের ভাই ওমর ফারুক ওরফে আজাবুলকে প্রতিপক্ষের লোকজন ঘিরে ফেলে ধরালো দা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে ফেলে চলে যায়। এতে তার প্রচুর রক্তক্ষরন হয়। ঠোকাতে গেলে তার ভাই মিজানুর রহমানকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে তাদেরকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ফয়লাহাট সুন্দরবন প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখান ওমর ফারুকর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাতেই খুলনা মেডিকল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ওই রাতে সোনাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারন ডায়রি করা হয়। ডায়রী নং ৫২৯।
খবর পেয়ে রামপাল থানা পুলিশ নিহত ওমর ফারুকের ভাই এ মামলার বাদী আশিকুল ইসলামক ডেকে থানায় নিয়ে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর রাখেন। তাকে বলা হয় একদিন পর থানায় মামলা নেয়া হবে। বাদী আশিকুল ইসলাম জানান, ৮-৪-২০২২ তারিখ ওমর ফারুকের লাশ দাফন করে পরদিন ইং ৯-৪-২০২২ তারিখ থানায় মামলা করতে গিয়ে দেখেন তার কাছ থেক পুর্ব স্বাক্ষর নেয়া সাদা কাগজে প্রকৃত দোষীদের বাদ দিয়ে ৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার নং ৬। ওই মামলায় আসামী করা হয় আলী শেখ (২৮), কামাল শেখ (৩৫), জামাল শেখ (৩২), সিদ্দিক শেখ (৬০) ও তার মেয়ে নাছিমা খাতুন (৩২)কে।
বাদী পক্ষের অভিযাগ, এ হত্যার ঘটনার সাথে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিল শামীম শেখ (২৪), মোহাম্মাদ শেখ (২২), ফারুক শেখ (৪৮), লিটন শেখ (৪০), কুলসুম বেগম (৩০) ও আবুল কাশম (৫৫)। পুলিশ এ ৬ অপরাধির নাম আসামীর তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেনি। এ নিয়ে আপত্তি জানানো হলেও কোন কাজ হয়নি। পরবর্তীতে আদালতে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং জিআর ৫৭/২০২২। মামলার ১নং আসামী আলী আদালতে আত্মসমর্পন করে জেল হাজতে আছে। অপর আসামী নাছিমা খাতুন উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসে অন্য আসামীদের জামিনের জন্য জোর তদবীর চালাচ্ছে বলে বাদী অভিযোগ করেছেন।
বাদী আশিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামীদের ধরিয়ে দিতে র‌্যাব-৬ নগদ অর্থ পুরস্কার ঘোষনা করেছে। রামপাল থানা পুলিশ তড়িঘড়ি করে গোপনে মূল অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে আদালতে চার্জসীট দেয়ার জন্য তোড়জাড় চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন তারা। একটি মহল পুলিশকে ম্যানেজ করতে মোটা অংকের টাকার থলে মাথায় নিয়ে মাঠে নেমেছে। এতে তিনি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা করছেন।
এ ব্যাপার রামপাল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামছুদ্দিন বলেন, চার্জসীট এর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত