প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে খুশিতে কাঁদলেন বৃদ্ধা আফরোজা

মামুন আহমেদ

আপডেট : ১০:২১ পিএম, মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল ২০২২ | ৪৩৬

“ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোনদিন দালানে থাকমু স্বপ্নেও ভাবেনি। মোগো প্রধানমন্ত্রী যে ঘর দিছে, তা পাইয়ে আমি খুব খুশি হয়ছি বাবা, বলেই খুশিতে কাঁদতে থাকলেন আফরোজা বেগম। বৃদ্ধা আফরোজা বেগম বাগেরহাট সদরের খানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। শিশু বয়সেই বাবা-মাকে হারান তিনি। বাবা-মায়ের চেহারাও স্মরণ করতে পারেন না। শিশু বয়স থেকেই এতিম আফরোজা চাচা ও প্রতিবেশীর বাড়িতে থেকে মানুষ হয়েছেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। চড়ম দরিদ্রতার সাথে লড়তে থাকা আফরোজাকে একসময় গ্রামের লোকজন মিলে বিয়ে দিয়ে দেয় স্থানীয় শাহাজান মীরের সাথে। শাহাজান মীর পেশায় ভ্যান চালক। থাকেন সরকারী খাল পাড়ে। সেই খালপাড়ে ভ্যান চালক স্বামীর সংসারেই দিনে এনে দিনে খেয়ে দীর্ঘ বছর পাড়ি দেন। একটা সময় আফরোজার সংসারে একে একে আসে চারটি সন্তান যার দুটি সন্তানই প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী দুই সন্তানকে নিয়ে আফরোজা আর তার স্বামী শাহাজানের নিদারূণ কষ্টের সংসার দীর্ঘ বছরের ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে, অবশেষে এই শেষ জীবনে এসে জমিসহ পাঁকা ঘরের মালিক হয়েছেন আফরোজা। আনুষ্ঠানিক ভাবে তার হাতে তুলে দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার নতুন ঘরের চাবি, দলিল ও নামপত্তন।


বৃদ্ধা আফরোজা বেগম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, প্রতিবন্ধী দুই সন্তান নিয়ে শেষ জীবনে হলেও একটু সাচ্ছন্দে বসবাসের সুযোগ করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। পবিত্র রমজান মাসে ঈদুল ফিতরের পূর্ব মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর এই উপহার পেয়ে আমি অনেক খুশি। আমি দু হাত তুলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি যে তিনি যেন দীর্ঘজীবী হন এবং দেশের আরও অনেক উন্নতি করতে পারেন।


বাগেরহাট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানাযায়, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পরেই বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলায় ৬৬২টি নতুন ঘরের চাবি ও জমির দলিল গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধন ঘোষনার পর পর জেলার সকল উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তাগণ উপকারভোগীদের ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর করেন। বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে মোড়েলগঞ্জে ১৮১, মোংলায় ১৪৫, ফকিরহাটে ৮০, বাগেরহাট সদরে ৭০, মোল্লাহাটে ৭০, রামপালে ৬০, চিতলমারীতে ২৮, কচুয়ায় ২৩ ও শরণখোলা উপজেলায় ৫ জন গৃহ ও ভূমিহীন পরিবার এ বাড়ি পেয়েছেন। এর মধ্যে বাগেরহাটে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ১ম ও ২য় পর্যায়ে ১০৭৮টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়। আর ৩য় পর্যায়ে ১০৯২টি ঘরের নির্মাণের বরাদ্দ পাওয়া গেলেও নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় ৬৬২টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীনদের হস্তান্তর করা হয়। বাকী ৪২৯টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ হলে হস্তান্তর করা হবে। প্রতিটি গৃহ নির্মাণে ৩য় পর্যায়ে ২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। সারাদেশে প্রায় ৩৩ হাজার পরিবার প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসাবে দুই শতক জমিসহ দুইকক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ঘর পেয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত