দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে

জমজমাট হয়ে উঠেছে বেতাগা পশুরহাট 

পি কে অলোক,ফকিরহাট

আপডেট : ০৯:২৬ পিএম, মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২ | ৫৮৭

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ পশুরহাট বাগেরহাটের ফকিরহাটের বেতাগা পশুরহাট এখন বেশ জমজমাট হয়ে উঠেতে শুরু করেছে। দেশীয় জাতের পশু উঠেছে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি। দাম ও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকায় পশুরহাট বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে।


পবিত্র রমজান মাসে মাংশের চাহিদা আগের তুলনায় বেশি থাকায় দেশীয় জাতের গরুর কদরও বেড়েছে অনেকগুন। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে কোন প্রকার সমস্যা হবেনা।

জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ পশুরহাট ফকিরহাটের বেতাগায় অবস্থিত। যে পশুরহাটে হাজার হাজার গবাদী পশু ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা সন্তোষ জনক হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতারা এই পশুরহাটের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। কোন প্রকার ঝুট-ঝামেলা ছাড়াই পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে পেরে ক্রেতা-বিক্রেতারা উভয়ই সন্তোষ্ঠি প্রকাশ করেছেন।


সাহিদুল ইসলাম, আমজাদ আলী, নওশের আলী ও আব্দুল জলিল নামের কয়েকজন ক্রেতা জানান, তারা সোম ও শুক্রবার সাপ্তাহিক হাটের দিনে পিরোজপুর মঠবাড়িয়া ও বাগেরহাট থেকে প্রায়ই এই পশুরহাটে পশু ক্রয় করতে আসেন। কারণ এই হাটে আসলে আমাদের চাহিদানুযায়ী বিভিন্ন পশু পাওয়া যায়। সেই পশু নিয়ে আমরা অন্যহাটে বিক্রয় করি। এখানে কোন প্রকার ঝুট-ঝামেলা ছাড়াই পশু ক্রয় করা যায়। তাছাড়া হাটের খাজনা অন্যান্য হাটের চেয়ে অনেক কম।

আজিজুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা ও মশিউর রহমানসহ একাধিক বিক্রেতারা জানান, তারা খুলনার ডুমুরিয়া রুপসা, চালনা ও বাজুয়া হতে গরু নিয়ে এই বেতাগা পশুর হাটে বিক্রয় করতে এসেছেন। মোটামুটি ভাল দামে বিক্রয় করতে পেরে তারা খুশি। তারা বলেন, আমরা প্রতি সোম ও শুক্রবার গভীর রাতে পশু নিয়ে বেতাগা পশুরহাটে আসি। পথে আমাদের কোন ঝামেলা পোহাতে হয় না। আর যদি কোন সময় কোন স্থানে ঝামেলায় পড়ি তাহলে বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটিকে অবগত করলে তারা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করেন। যে কারনে আমরা এই হাটে পশু নিয়ে আসি।


তারা আরো বলেন, এই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য ৫/৬টি সাইকেল গ্যারেজ, ১০/১২টি খাবার হোটেলও রয়েছে। তাছাড়া পুুলিশ, গ্রাম পুলিশ, চৌকিদার ও স্বেচ্ছাসেবক মিলে প্রায় ৫০জন সবসময় নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কোন কারণে ক্রেতা বিক্রেতাদের সমস্যা হলে তারা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহন করেন। যে কারনে আমরা শতশত ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা এই পশুরহাটের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি।

বাজার মনিটরিং কমিটির অন্যতম সদস্য ও ইউপি মেম্বর অসিত কুমার দাশ বলেন, পিরোজপুর মঠবাড়িয়া নাজিরপুর বাগেরহাট রুপসা খুলনার ডুমুরিয়া চালনা বাজুয়া মাদারীপুর ও টেকেরহাটসহ বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন স্থান হতে শতশত ক্রেতা-বিক্রেতারা এই বেতাগা পশুরহাটে পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে আসেন। আমরা তাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে নানা প্রকার সুযোগ সুবিধা প্রদান করি। যা অন্যান্য পশুরহাট গুলিতে আছে বলে মনে হয়না।

এ ব্যাপারে বেতাগা পশুহাট মনিটরিং কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বেতাগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আনন্দ কুমার দাশ বলেন, আমরা পবিত্র রমজান মাসে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নানা সুবিধার কথা চিন্তা করে বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা গ্রহন করেছি। যাতে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া আগামী পবিত্র ঈদুল ফিতর এর সময় ক্রেতা-বিক্রেতাদের বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধাও প্রদান করা হবে বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, আমরা বেতাগা পশুরহাটের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য প্রতি ঈদের ন্যায় এবারও পশুরহাটে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের মাধ্যমে অসুস্থ্য হয়ে পড়া প্রাণীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার জন্য জাল টাকা সনাক্তের মেশিন এবং অতিরিক্ত পুলিশ প্রশাসন এর ব্যবস্থা গ্রহন করতে যাচ্ছি। যাতে বাজারে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত