প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও রামপালে বোরো আবাদ বেড়েছে 

এম, এ সবুর রানা, রামপাল

আপডেট : ০৯:১৪ পিএম, সোমবার, ২১ মার্চ ২০২২ | ৫১৬

প্রতিকূল পরিবেশ ও তীব্র লবণাক্ততার মধ্যেও রামপালে বোরো ধানের আবাদ বেড়েছে। লবন সহিষ্ণু জাত, উন্নত বীজ, কৃষকদের প্রশিক্ষণ, সঠিক বীজ নির্বাচন ও সেচ ব্যবস্থা সহজিকরণ করার ফলে এ উপজেলায় উত্তরোত্তর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ উপজেলার জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদার বিপরীতে উদ্বৃত্ত খাদ্যের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৩৯১ মে. টান।
রামপাল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে মোট বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ৩৭৪ হেক্টর জমিতে, তা বৃদ্ধি পেয়ে আবাদ হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। গৌরম্ভা ইউনিয়নে ৫৩৫ হেক্টর। উজলকুড় ইউনিয়নে ২ হাজার ২৮০ হেক্টর। বাইনতলা ইউনিয়নে ১ হাজার ২০ হেক্টর। রামপাল সদর ইউনিয়নে ৪৩০ হেক্টর। রাজনগর ইউনিয়নে ৬০ হেক্টর। হুড়কা ইউনিয়নে ৮ হেক্টর। পেড়িখালী ইউনিয়নে ২ হেক্টর। ভোজপাতিয়া ইউনিয়নে ২ হেক্টর। মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নে ৫০ হেক্টর ও বাঁশতলী ইউনিয়নে ১২ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক মারুফুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আবাদ খুবই ভালো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সার্বিকভাবে আবাদ ভালো হয়েছে, পোকামাকড় দেখা যায়নি কিন্তু ইঁদুরের উপদ্রব রয়েছে। গাছ কেটে দিচ্ছে। একই কথা বলেন, মানিকনগরের মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, এবার আবহাওয়া ভালো। পোকায় ধরেনি। এমন থাকলে ভালো ধান পাবো।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণা রানী মন্ডল বলেন, বিভিন্ন কারণে এ বছর বোরো'র আবাদ বেড়েছে। এর মধ্যে প্রধান কারণ গুলো হলো, গত বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলনের কারণে কৃষক উদ্বুদ্ধ হয়েছে। সব ইউনিয়নে আবাদ সম্প্রসারণ কারা হয়েছে। প্রণোদনা পুনর্বাসনের মাধ্যমে কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার সহায়তা দেয়া হয়েছে এবং কৃষককে হাইব্রিড ধানের বীজ দেয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। লবণ সহিষ্ণু জাতের ধান ব্রি-৬৭ ও বিনা ধান ১০ জাত সরবরাহের বৃদ্ধি, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের উপর আস্তা বৃদ্ধি, সার, বীজ সঠিক সময়ে সরবরাহ, ন্যায্য মূল্য ও কৃষি যান্ত্রিকিকরণের ফলে আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষক যাতে বেশি করে ফলন বৃদ্ধি করতে পারেন সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সবকিছু করা হবে।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কবীর হোসেন জানান, সরকারের দিক নির্দেশনায় আমরা মাঠ পর্যায়ে বোরো আবাদ বৃদ্ধির জন্য সব কিছু করছি। সার, বীজ ও কৃষিতে যান্ত্রিকিকরণ করা হয়েছে। এ উপজেলায় দায়িত্ব গ্রহণের পর কৃষকদের সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। প্রশিক্ষণসহ সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। আশা করি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, গত ২০২১ অর্থ বছরে বোরোর আবাদ হয়েছিল ৪ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে। ২০২২ সালে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪ হাজার ৩৮০ হেক্টরে যা গত বছরের চেয়ে ৩৫ হেক্টরের বেশি। চাল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৩৭৪ মে. টন। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ১৮ হাজার ৫৮৫ টন। যা বেড়ে লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৮৯ মে.টনে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশানুরূপ ফলন হতে পারে বলে কৃষি সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত