ভয়শূণ্য এখন মোংলার মানুষ

মাসুদ রানা,মোংলা

আপডেট : ১০:২৪ পিএম, শনিবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২২ | ৭৬১

মোংলায় সাধারণ মানুষের মাঝে নেই কোন করোনার ভয়,মানছে না কোন বিধিনিষেধ। কিছুদিন আগে যেখানে মুখে মাস্ক ছাড়া মানুষের দেখা মিলত না। এখন সেখানে মাস্ক লাগানো মানুষ খুব একটা মিলছে না। সামাজিক দূরত্ব মানার চিহ্নও নেই। দেখেই মনে হচ্ছে করোনা নিয়ে মোংলার মানুষ এখন ভয়শূণ্য। করোনা বলতে কোন কিছুই নেই মোংলায়।
এদিকে করোনা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ধারনা সাধারণ মানুষের সম্পূর্ণ বিপরীত। শুক্রবার সকালে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) ১৮ জনের করোনা পরীক্ষায় নয় জনের করোনা শনাক্ত হয়ছে। করোনা শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ( গত দুই বছরে) করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৭০ জন মানুষ। এরপরও সাধারণ মানুষের মাঝে নেই কোন সচেতনতা। এ নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জীবিতেষ বিশ্বাস।
তিনি বলেন, দুই দফায় করোনার ভয়াবহতা দেখার পরও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সচেতন হচ্ছে না। আবার অনেকে টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে বেপরোয়া ভাব দেখাচ্ছে। তারা মনে করে টীকা নিয়েছে তাই তাদের করোনা আর হবে না। স্বাস্থ্য বিধি মেনে আর কি লাভ। মোংলায় এ পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন এক লাখ ১৭ হাজার মানুষ। বাকি রয়ে গেছে আরও ১৫ হাজার মানুষ।
ডাঃ জীবিতোষ বিশ্বাস আরও বলেন, গত এক সপ্তাহে মোংলায় ৬১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৫৪ দশমিক। এপর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছে ৯৮০ জন।
মোংলা উপজেলা হাসপাতাল সুত্র জানায়, সংক্রমণ উদ্বেগজনক থাকার পরও জীবিকার কথা চিন্তা করে সরকার গত ১৯ আগষ্ট থেকে বিধিনিষেধ শিথিল করে। এরপর স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসনের কঠোর হওয়ার কথা। কিন্তু প্রশাসনের কড়াকড়ি আগের মতো চোখে পড়ছেনা। শাস্তির ভয় না থাকায় মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা বেড়েছে। মাস্ক ছাড়াই সামাজিক দূরত্ব না মেনে ঘরের বাইরে আসছে মানুষ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কমলেশ মজুমদার বলেন, ‘আমরা দু’ একদিনের মধ্যে অভিযানে নামবো। আর কোনও অযুহাত মানবো না।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, মোংলা শহরের মামার ঘাট, চৌধুরী মোড়, কলেজ মোড়, হাসপাতাত রোড, উপজেলা রোড, শেখ আব্দুল হাই সড়ক , (মেইন রোড) ও শাহাদাৎ মোড় এলাকাসহ বাজার এলকায় মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছে মানুষ। শপিং মার্কেটেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছেনা।
শপিং করতে আশা সনি বেগম নামে একজন বলেন, এখন আর করোনা নাই। তাই আর মুখে মাস্ক পড়া লাগে না। তাছাড়া আমার টীকা দেওয়া আমার মাস্ক না পড়লেও কোন সমস্যা নাই।
বাজার করতে আশা ইউনুছ আলী বলেন, আমার মাস্ক আছে পকেটে। আমি মাস্ক পড়ে কথা বলতে পারি না। ছুটির দিনে বাজার করতে আসছি তো তাই মাস্ক খুলে পকেটে রেখেছি।
এছাড়া আরো কয়েকজন জনের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আল্লাহ যেদিন ডাক দেবেন সেদিন কেউ আর ধরে রাখতে পারবে না। মাস্ক পড়ে আর কি লাভ।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত