স্বপ্নার মায়ের স্বপ্ন, মেয়ের মাথা গোঁজার ঠাঁই

এস এস সাগর

আপডেট : ০৫:৩০ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১৫৯৮

স্বপ্না বৈরাগী (৪০)। স্বামী শচীন বৈরাগী। শচীন বিশ বছর ধরে নিরুদ্দেশ। স্বপ্না ও শচীন দম্পতির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে মিতালী বৈরাগী (২২) ও ছোট মেয়ে রিতা বৈরাগী (২০)। বড় মেয়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। শাররিক প্রতিবন্ধী তাই বিয়ে দিতে পারছেন না। ছোট মেয়ে এসএসসি পাশ। বিয়েও হয়েছিল। কিন্তু সংসার টেকেনি। এখন মায়ের ঘাড়ের বোঝা। স্বপ্নাদের কোন মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। তাই তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন চিতলমারী উপজেলার হিজলা ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে বৃদ্ধ মা-বাবার বাড়িতে।

স্বপ্নার মায়ের নাম ইলাবতী বৈরাগী (৬১)। বাবা রবীন্দ্র নাথ বৈরাগী (৭৬)। বয়সের ভারে বাবা এখন আর কাজ করতে পারেন না। মা বাবুগঞ্জ বাজারের ঝাড়ুদারের কাজ করেন। সপ্তাহে দুই হাটেরদিনে কিছু শাক-সবজি ও নগদ ৮০-৯০ টাকা পান। স্বপ্না চিতলমারী বাজারে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে দুই হাজার টাকা বেতনে ঝাড়ুদারের কাজ করেন। বড় মেয়ে মিতালী বৈরাগী প্রতিমাসে প্রতিবন্ধী ভাতা পান ৭০০ টাকা। বাবা বয়স্ক ভাতা পান ৫০০ টাকা। এ দিয়ে চলে তাঁদের ৫ সদস্যর সংসার।

স্বপ্না বৈরাগী বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, স্বামী ফেলে রেখে যাওয়ার পর দুটি সন্তানকে নিয়ে মা-বাবার আশ্রয়ে আছি। মা-বাবার তেমন কোন ঘর ছিলনা। তাই ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড ভিশন থেকে মাকে একটি ছোট টিনের ঘর দিয়েছিল। সেই টিনের ঘরেই আমরা বাস করে আসছি। কিন্তু বর্তমানে সেই ঘরের অবস্থা ভাল না। তা ছাড়া মেয়েরাও বড় হয়েছে। তাই আমাদের একটি ঘরের খুব প্রয়োজন। আমাদের জন্য মা-বাবাকে ঘরের বাইরে থাকতে হয়।

স্বপ্নার মা ইলাবতী বৈরাগী কান্নাজড়িতকণ্ঠে বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, আমাদের নিজেরদের দুই কাঠা জায়গা থাকলেও ঘর বাধার সামর্থ নেই। আমার মেয়ে ও নাতনি স্বামী পরিত্যাক্তা। আমি মরে গেলে ওদের কি হবে। তাই আমি বেঁচে থাকতে ওদের একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই ‘বসতঘর’ দেখে যেতে চাই।

এ ব্যাপারে হিজলা ইউনিয়নের সদস্য মোঃ বাদশা শেখ বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, ঘরের জন্য আমার ওয়ার্ড থেকে অনেকের নাম দিয়েছিলাম। কিন্তু কেউই পাননি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত