থানায় মামলা দায়ের

মায়ের সম্মান বাচাঁতে সন্ত্রাসী হামলায় আহত ছেলে

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৯:৫২ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৫৯৯

মোংলায় জমি নিয়ে পুর্ব শত্রুতার জের ধরে মাকে গাল-মন্দ ও শ্লীলতাহানীর প্রতিবাদ করায় হত্যার উদ্দেশ্যে এক যুবককে বাড়ীর গেট আটকিয়ে মেরে রক্তাক্ত জখম করেছে মহিদুল গ্রুপ নামের এক দল সন্ত্রাসীরা। পৌর শহরের মোড়শেদ সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটলে তার মায়ের আর্তনাদে ওই সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রাজু নামের যুবককে উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী।


প্রথমে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসারত অবস্থায় অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার ৬জনসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে মোংলা থানায় মামলা দায়ের করেছে রাজুর মা নুরুননাহার বেগম। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।


প্রত্যাক্ষদর্শী ও মামলা সুত্রে জানা যায়, মোংলা পোর্ট পৌর শহরের মোড়শেদ সড়কের বাড়ীর এক খন্ড জমি নিয়ে দীর্ঘদিন দন্দ্ব চলে আসছিল সন্ত্রাসী মহিদুল গ্রুপের সাথে নুরুননাহার বেগমের। এ জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ইতি পুর্বে মহিদুলের সাথে কয়েকটি মামলাও রয়েছে আদালতে বিচারাধীন। ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মহিদুল তার দলবল নিয়ে খলিল নামের অন্য একটি শরিকের জমি দখল করতেছিল। এসময় রাজুর মা নুরুন নাহার বেগম বাজার থেকে এসে বাসায় ঢুকতে গেলে মহিদুলসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী তাকে অকথ্য ভাষায় গাল মন্দ ও পিছন থেকে বোড়কা ও ওড়না ধরে টানা হেছড়া করে শ্লীলতাহানী ঘটায়। চিৎকার শুনে মায়ের সম্মান বাচাঁতে বাড়ীর ভিতর থেকে ছুটে এসে মাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করে ছেলে রাজু। সন্ত্রাসীরা মাকে ছেড়ে দিয়ে ছেলেকে টেনে হেছড়ে মহিদুলকে বাড়ীর গেট দিয়ে ভিতরে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র দা, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বলে মামলায় উল্লেখ করেন।

সন্ত্রাসী মহিদুল গ্রুপের হামলা ও মারধরে মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং শরীরে বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত জখম করে ্এছাড়া ছেলে রাজুর গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করে বলে জানায় মামলার বাদী নুরুন নাহার। পরে মায়ের চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রাজু (২২) কে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। চিকিৎসারত অবস্থায় রাজুর অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নুরুননাহার বাদী হয়ে মহিদুল মিস্ত্রী, মোঃ জাকির ধোপা, মোঃ রনি মিস্ত্রী, জনি মিস্ত্রী, জিয়া ধোপা ও মনি বেগমসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে (যার মামলা নং-১৯)।

মামলার বাদী নুরুন নাহার বেগম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, মহিদুল ও তার সন্ত্রাসী দলবলের ক্ষমতার দাপটে বিভিন্ন লোকদের জমি দখল করে বেড়ায়। আমার সাথেও জমি নিয়ে দন্দ্ব চলছে বহু দিন থেকে, মামলা চলছে আদালতে। গত বৃহস্পতিবার সকালে দিকে আমাকে মারধর ও সম্মানহানী করে। এসময় ছেলে বাচাঁতে আসলে তাকেও মেরে রক্তাক্ত জখম করে। খুলনায় চিকিৎসায় রয়েছে, নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে তার অবস্থা গুরুতর। আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে, তাদের আটক করছে না পুলিশ।

অভিযুক্ত মহিদুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, আমার ক্রয়কৃত এক খন্ড জমি জোর পুর্বক আটকে রেখেছে নুরুন নাহারসহ তার লোকজন। ওই দিন আমাকে দেখে গালাগালী করছে এবং আমাদের লোকজনকে মারধর করেছে নুরুন নাহার ও তার ছেলে রাজু।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুল ইলাম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, শহরের মোরশেদ সড়ক এলাকায় মারামারীর ব্যাপারে ৬জনের নামে মামলা নেয়া হয়েছে। আহত রাজু খুলনায় চিকিৎসাধীন রয়েছে, তার খোজ খবর নেয়া হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানায় পুলিশের এ কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত