সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদীর দুষণ ও দখল মুক্ত করতে
মোংলায় নদীকৃত্য দিবস পালন
আপডেট : ০২:০৩ পিএম, রোববার, ১৪ মার্চ ২০২১ | ৯২৮
সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদীর দূষণ ও দখল রুখতে মোংলায় মানববন্ধন পালিত হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১১টায় মোংলা বন্দরের পশুর নদীর পাড়ে সদ্য ডুবে যাওয়া কয়লা বোঝাই কার্গো ডুবির স্থানে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং পশুর রিভার ওয়াটারকিপার আয়োজিত আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষ্যে মানববন্ধন পালন করা হয়েছে।
এসময় বক্তারা বলেন, মুনাফালোভী ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বেপরোয়া শিল্পায়নের দ্বারা আক্রান্ত পশুর নদী। প্রতিনিয়ত পশুর নদীতে তেল-কয়লা-সার ভর্তি কার্গো ও জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটলে দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় না। ব্যাপক হারে প্লাস্টিক দূষণ দ্বারাও বিপর্যস্ত পশুর নদীর প্রাণ বৈচিত্র্য। অন্যদিকে ফারাক্কা বাঁধের বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় পর্যাপ্ত মিষ্টি পানির প্রবাহ না থাকায় পশুর নদী এবং সুন্দরবন তার যৌবন হারাচ্ছে। পানির কোন বর্ডার নেই এই কথা মনে রেখেই ধরিত্রী বাঁচাতে জাতীয়-আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কাজ করতে বক্তারা আহবান জানায়।
সরকার এক দিকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে নদী ও খালের আবহমান ধারা অব্যাহত রাখতে খনন করছে। আবার পুনরায় সেই নদীর পাড়ে সরকারের লোকজন দ্বারাই দখল ও নদী দুষণ করছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।
কারা এ নদী ও খাল দখলদার এবং দুষণকারী তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিচারের সম্মুখীন করারও আহবান জানানো হয় এ মানববন্ধনের মাধ্যমে।
এছাড়াও, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় সরকারি প্রবাহমান নদী-খালে বাঁধ দিয়ে চিংড়ি চাষ এবং দখল করে অবকাঠামো নির্মান করার ফলে প্রাণ-প্রকৃতিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্ঠি হয়েছে। অবিলম্বে নদী-খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বক্তারা সুন্দরবনের বাপার জোন এলাকার মধ্যে পশুর নদীর পাড়ে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন গড়ে ওঠারও সমালোচনা করেন।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মোংলার আহ্বায়ক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার নেতা মোঃ নূর আলম শেখ’র সভাপতিত্ব বক্তব্য রাখেন, বাপা নেতা সাংবাদিক এম এ সবুর রানা, গীতিকার মোল্লা আল মামুন, কমলা সরকার, আব্দুর রশিদ হাওলাদার, রাকেশ সানা, পশুর রিভার ওয়াটাকিপার ভলান্টিয়ার মাহারুফ বিল্লাহ, মেহেদী হাসান বাবু, শুক্লা হালদারসহ স্থানীয় জনসাধারন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
উল্ল্যেখ্য, ১৯৯৭ সালের ব্রাজিলে এক সমাবেশে নদীর প্রতি দায়বদ্ধতা মনে করিয়ে দিতে এ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সমাবেশে সমবেত হয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের বাঁধের বিরুপ প্রতিক্রিয়ার শিকার জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিরা। ওই সম্মেলন থেকেই ১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস পালনের ঘোষণা হয়।