ভুল চিকিৎসায় রামপালে  আবারও গরুর মৃত্যু

রামপাল প্রতিনিধি

আপডেট : ০৮:৪৩ পিএম, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১ | ৮৬৮

ফাইল ফটো

রামপালে ভুল চিকিসায় গরু মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যপারে ক্ষতিপূরণ দাবী করে মৃত গাভীর মালিক বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রামপাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে একটি পক্ষ জোর তদবির চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


জানা গেছে, রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের কুমলাই গ্রামের খামারী আব্দুল আলিম খাঁ এর একটি উন্নত জাতের গাভী গত ১৭ ফেব্রুয়ারী বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসার জন্য ডাকা হয় ওই ইউনিয়নের তেলিখালী গ্রামের আব্দুল মাজেদ শেখ (কথিত পশু ডাক্তার) কে। মাজেদ এসে অসুস্থ গাভীটির সঠিক রোগ নির্নয় না করে শুধুমাত্র রোগের লক্ষণ দেখে ৩টি ইনজেকশন গাভীর দেহে পুশ করেন। ইনজেকশন পুশ করার পর আস্তে আস্তে গাভীটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এরপর আব্দুল মাজেদকে অসুস্থ হওয়ার খবর জানালেও তিনি দেখতে না এসে পার্শ্ববর্তি ফয়লা বাজারে তার দোকান থেকে ঔষধ আনার জন্য খামার মালিক আব্দুল আলিমকে পরামর্শ দেন।

খামার মালিকের অভিযোগ তিনি ঔষধ নিয়ে বাড়ীতে ফিরে দেখতে পান তার গাভীটি মারা গেছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ ও ইনজেকশন পুশ করায় গাভীটির মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এবিষয় নিয়ে তিনি রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস এর কাছে আব্দুল মাজেদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

খোজ নিয়ে জানাগেছে, আব্দুল মাজেদ প্রকৃতপক্ষে কোন পশু চিকিৎসক নয়। তবুও তিনি দীর্ঘ দিন ধরে নিজেকে পশু চিকিৎসক দাবী করে হর হামেশাই গবাদি পশুর চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। উল্লেখ্য এ ঘটনার কিছু দিন আগে তার ভুল চিকিৎসায় উপজেলার মানিকনগর এলাকার এক ব্যক্তির দুটি গবাদি পশু মারা যায়।


এ ব্যপারে অভিযুক্ত আব্দুল মাজেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে ঘটনার দিন সকাল ৮ টার দিকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যান আব্দুল আলিম। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে গাভীটির রোগের লক্ষন দেখে ৩টি ইনজেকশন পুশ করে আমি চলে আসি। ওই দিন দুপুরে আমাকে জানানো হয় গাভীটি জাবর কাটছে না। তার মুখ থেকে লালা ঝড়ছে। এ অবস্থায় আমি একটি ঔষধ দিয়ে গরম পানির সাথে খাওয়ার পরামর্শ নিই। পরে রাত ১২ টার দিকে আমাকে জানানো হয় গাভীটি মারাগেছে। তিনি আরো বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ইনামুল নামের একজন ডাক্তারকে দেখতে পাই। তিনি কোন চিকিৎসা দিয়েছেন কিনা তা আমি জানিনা।

এ ব্যপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, মাজেদ কোন পশু চিকিৎসক নয়। তার চিকিৎসা সম্পর্কিত কোন কাগজপত্র নেই। গরুর মালিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছে। আমাকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে। তিনি এ ব্যপারে ইউনিয়ন পরিষদে আব্দুল মাজেদের বিরুদ্ধে ক্ষতি পূরণের অভিযোগ করে মামলা করলে উপজেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর ক্ষতিপূরন আদায়ে খামার মালিক আব্দুল আলিমকে সর্বাত্নক সহযোগীতা দেবে। তার কোন সার্টিফিকেট নেই। খামার মালিক আব্দুল আলিম যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিকে নজর রাখা হবে। আব্দুল মাজেদের মতো আর যারা পশু চিকিৎসক না হয়েও পশুর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে তাদের বিরুদ্ধে যে কোন সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত