চিতলমারী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৪:৫২ পিএম, সোমবার, ৩ আগস্ট ২০২০ | ২৬৩১

চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীমের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। জোরপূর্বক বালু ভরাট ও ভবন নির্মানের এক পর্যায়ে জমির মালিক দাবিদার মোঃ জাহিদুল ইসলাম তাপসের অভিযোগে সোমবার সকালে চিতলমারী থানা পুলিশ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। চিতলমারী উপজেলার কিসমত পিপড়াডাঙ্গা মৌজার কালিগঞ্জ বাজার সংলগ্ন উপর ৬০ শতক জমি নিয়ে এ বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগকারী মোঃ জাহিদুল ইসলাম তাপস বলেন, ১৯৫৫ সাল থেকে আমার দাদা নাজিম উদ্দিন শেখ কিসমত পিপড়া ডাঙ্গা মৌজার কালিগঞ্জ বাজার সংলগ্ন তিনটি স্থানের মোট ৬০ শতক জমি ভোগদখল করেন। দাদার মৃত্যুর পরে আমার্ পিতা আবুবকর শেখ ও চাচাগণ এই জমি যথারীতি ভোগ দখল করা শুরু করেন।কিন্তু ২০১৬ সালে হঠাৎ করে চিতলামী উপজেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীম আমাদের জমির উপর বালু ফেলা শুরু করেন। আমরা বাঁধা দিলে বলেন সামান্যকিছু দিনের জন্য বালু গুলো থাকুক, পরে আবার নিয়ে যাব। কিন্তু তিনি বালু তো নেয় না, বরং আমাদের জমি দখলের পায়তারা শুরু করেন। পরবর্তীতে আমরা আদালতের সরনাপন্ন হলে আদালত ওই জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করেন। কিন্তু দখলবাজ মুজিবুর রহমান শামীম রাতের আধারে তার লোকজন নিয়ে জমিতে ঘর নির্মানের উদ্ধত হয়। আমরা বাঁধা দিলে মারপিটের ভয় দেখায়। চেয়ারম্যোনের কাছে গেলে বলে জমি তোমাদের, জমির কাগজ তোমাদের কিন্তু জমি তোমরা খেতে পারবা না। জমি ভোগদখল করব আমি।এক পর্যায়ে রেবিবার রাতে এসে ওই জমিতে আবারও ঘর নির্মান শুরু করেন চেয়ারম্যান ও তার লোকেরা। আমরা বাঁধা দিলে তারা আমাদের উপর চড়াও হন। পরে আমরা থানায় জানালে পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে দেয়। তার কাগজপত্র নিয়ে থানায় দেখা করতে বলেন।

অভিযোগকারী মোঃ জাহিদুল ইসলাম তাপসের ভাই জহিরুল ইসলাম বলেণ, চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীম শুধু আমাদের জমি নয়। স্থানীয় অনেকের জমি জোর দখল করে ভোগ করছেন। অনেকের জমি দখলের জন্য হুমকী ধামকিও দিচ্ছেন। পৈত্রিক সম্পত্তি সুষ্ঠভাবে ভোগ দখল করার জন্য বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। স্থানীয় আব্দুস সোবহান বালী বলেণ, আমি একজন হতদরিদ্র মানুষ। চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীম জোর করে আমার ২২ শতক জমি ভোগ দখল করছেন। আমি কোথাও গিয়ে বিচার পাচ্ছি না।দেলোয়ারের জমিও দখল দিয়েছেন মুজিবুর রহমান শামীম। ভ্যান চালক মোঃ ফারুক শেখ বলেন, ১৯৯৭ সাল থেকে বাজার সংলগ্ন ২৭ শতক জমিতে বাড়ি করে বসবাস করে আসছি। কিন্তু গেল বছর একটি রান্না ঘর তৈরি করতে গেলে চেয়ারম্যানের লোকেরা বাঁধা দেয়, বলে এই জমি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীমের। পরে আমি আর রান্নাঘর তৈরি করতে পারিনি। যেখানে যাই কেউ তার উপরে কথা বলে না।

এসব বিষয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন নিউজ করার মত কোন ঘটনা ঘটেনি। যা মিডিয়া প্রকাশ হওয়ার মত ঘটনা ঘটেনি।জমির ব্যাপারে আমি কোন কথা বলব না।

চিতলমারী থানার এসআই সঞ্জয় দে বলেন, মোঃ জাহিদুল ইসলাম তাপসের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিবাদপূর্ণ ওই জমিতে আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। ৮ আগস্ট দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। দুই পক্ষের সাথে কথা বলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করব।

প্রকাশিত সংবাদ এর প্রতিবাদ করেছেন মুজিবর রহমান শামীম সাবেক চেয়ারম্যান, চিলতমারী উপজেলা পরিষদ


০৫ আগষ্ট,তিনি প্রতিবাদ লিপিতে লিখেছেন,গত ০৩ আগষ্ট আপনার অনলাইন পত্রিকায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে যে, প্রতিবেদন টি প্রকাশিত হয়েছে সেটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই রিপোর্ট টি ভূয়া, ভিত্তিহীন, তঞ্চকতাপূর্ন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে সমাজে আমার ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন, ব্যবসায়িকভাবে হেয় করার জন্য করা হয়েছে।


অভিযোগকারী জাহিদুল ইসলাম তাপস যে ৬০ শতাংশ জমি দাবি করেন তাহা তার বাবা আবু বকর ও চাচারা আমি সহ বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট বিক্রয় করিয়া দেয়, উল্লেখ্য যে, তার বাবা আবু বকর ও চাচা আলি আকবর প্রতারক ছিলেন। তারা যে জমি ভাগে পেয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি জমি মানুষের কাছে বিক্রয় করিয়া বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারনা করেছেন। তার চাচা আলি আকবর সন্তোষপুর ইউনিয়ন বিএনপি এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি থাকায় মানুষ প্রতিবাদ করেও কোন প্রতিকার পায় নাই। তার বেশি জমি বিক্রির প্রমান সরুপ তার বিক্রি করা জমির দলিলের কপি আমার কাছে আছে, জাহিদুল ইসলাম তাপস গং একটি ভূয়া ডিগ্রি তৈরি করে জমি দখলের পায়তারা করে ব্যর্থ হয়, কোর্ট থেকে বর্তমানে কোন ১৪৪ ধারা জারি করেন নাই। উক্ত রিপোর্ট এ উল্লেখ করা হয়েছে সোবহান বাওয়ালীর ২২ শতাংশ জমি দখল করে বিল্ডিং করেছি, এটি মিথ্যা অভিযোগ, আমি ২২ শতাংশ জমি দখল করেছি প্রমান করতে পারলে বাজারে আমার যত সম্পত্তি আছে সব সম্পত্তি কোন কন্ডিশন ছাড়াই মালিকানা ত্যাগ করবো।


কালিগঞ্জ বাজারে আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তি পৌনে আট শতাংশ এবং সরকার থেকে লিজ নিয়ে ডি.সি. আর মূলে ৫০ শতাংশ জমি আমি দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগ দখল করে আসতেছি, উল্লেখ্য যে আমার এই জমির কিছু অংশ আমি গ্রামের বাড়িতে বসবাস না করার সুযোগে কিছু জমি অভিযোগকারী গং জোর পূর্বক ভোগ দখল করার চেষ্টা করে। আমার জমি দখলের কোন প্রশ্নই আসে না। আমার ভোগদখলীয় জমিতে বিগত ০৩-০৮-২০২০ তারিখে কাজ করতে গেলে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নোটীশের মাধ্যমে অভিযোগের বিষয়টি জানায়, এবং আগামী ০৮-০৮-২০২০ তারিখ ২(দুই) পক্ষকে কাগজ পত্র নিয়ে থানায় উপস্থিত হতে বলেন।

প্রতিবেদকের বক্তব্য:- রিপোর্টটি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের বক্তব্য ও লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তৈরী করা। এখানে ব্যাক্তিগত কোন আক্রোশ বা কাউকে ব্যাক্তিগত ভাবে আঘাত করা নয়। রিপোর্টে মুজিবর রহমান শামীম, সাবেক চিতলমারী উপজেলা চেয়ারম্যানের তাৎক্ষনিক দেয়া বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। যাহার প্রমান প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত