সরকারী খালে জালপাটা দিয়ে পানি সরবরাহের পথ বন্ধ করায়

ফকিরহাটে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে মৎস্য ঘের ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন

পি কে অলোক, ফকিরহাট

আপডেট : ০৯:৪৪ পিএম, সোমবার, ২৯ জুন ২০২০ | ৭৫৩

বাগেরহাটের ফকিরহাটের মাসকাটা সাব প্রজেক্টের প্রবাহমান সরকারী খালে জল পাটা ঘুনি ও চাড়ে পেতে মাছ ধরায় ১০টি বিলের পানি নিচেই সরবরাহ হতে পারছে না। যে কারনে বিল গুলিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে মৎস্য ঘের ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তিন ইউনিয়নের শতশত কৃষক মৎস্য চাষি ও ঘের মালিকরা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন সুফল পাইনী। ফলে নিরবে মুখ বুজে সব কিছুই মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

সরেজমিনে অনুসন্ধ্যান করে জানা গেছে,উপজেলার পিলজংগ ইউনিয়নের শ্যামবাগাত গ্রামের শেষ প্রান্ত দিয়ে প্রবাহমান মাসকাটা সাব প্রজেক্টের সরকারী খালটি লখপুর ইউনিয়নের খাজুরা ৬গেটের উপর দিয়ে রুপসার ভৈরব নদীতে গিয়ে মিশেছে। এই খালের দুই পাশের্^ প্রায় ১৫টি বিল রয়েছে। যে বিল গুলিতে কয়েক হাজার কৃষক কৃষি ফসল রোপন করে ও ঘের মালিকরা সারা বছর মৎস্য চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। সেই সরকারী ৭কিলোমিটার খালে ২শতাধিক ব্যাক্তি নাগানী জল পাটা ঘুনি ও চাড়ে পেতে মাছ ধরায় কাজে নিয়োজিত রয়েছে। যে কারনে প্রবল বর্ষনে জমে থাকা বৃষ্টির পানি নিচেই সরবরাহ হতে পারছে না। ফলে বিল গুলিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে কৃষি ফসল নষ্ট ও মৎস্য ঘেরের মাছ ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ৭কিলোমিটার লম্বা খালের ভিতর ২০/৩০/৪০ ও ৫০হাত অন্তর অন্তর নাগানী জল পাটা ঘুনি ও চাড়ে পাতা হয়েছে। এই অবস্থায় খাল দিয়ে পানি সরবরাহ করা কোন ক্রমেই সম্ভাব হয়ে উঠছে না।

লখপুরের ৬নং ওয়ার্ডের কৃষক আলতাপ হোসেন ও ধনপোতা ৩নং ওয়ার্ডের শফিকুল ইসলাম সহ অর্ধশতাধিক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ধনপোতা গ্রামের আলামিন শেখ, জোয়াদ শেখ, মোজাইদ শেখ, আব্দুল্লাহ শেখ, আলমগীর মোড়ল, জাহাংগীর মোড়ল, জিল্লুর রহমান, হুমায়ুন মোড়ল, জাহিদ শেখ, আজগার শেখ, মুজিবুর রহমান ও তগরুল শেখ সহ প্রায় ২ শতাধিক ব্যাক্তি সমগ্র খালে জাল পাটা দিয়ে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত থাকায় পাটার নিচেই প্রচুর পরিমানে ছাদলা ও ময়লা জমে পানি সরবরাহের পথ পুরোপুরী বন্ধ হয়ে গেছে। এতে খলের উপরে অবস্থিত শ্যামবাগাত বিল, গোউখালী বিল, বাজার খোলা বিল, খড়িবুনিয়ার বিল, ১৪ কুড়োর বিল, মাসকাটা বিল ও জাড়িয়া বিল সহ বিভিন্ন বিল গুলিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে হাজার হাজার বিঘায় ধান চাষ করা অসম্ভাব হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, শতশত মৎস্য ঘের ভেসে যাওয়ারও উপক্রম হয়েছে। প্রশাসনকে বারবার বলার পরেও তাঁরা কোন কাজ করছে না।

লখপুরের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ আরিদ হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে বহুবার ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক মিটিংয়ে রেজুলেশন করা হলেও কোন কাজ হয়নী। কোন এক অদৃষ্ট শক্তির বলে মাত্র ২শতাধিক ব্যাক্তি সরকারী খালে জাল পাটা ও ভেশাল দিয়ে পানি সরবরাহের পথ বন্ধ করে রেখেছে। তাদের কাছে শ্যামবাগাত ধনপোতা মাসকাটা জাড়িয়া মাইট কুমরা ও ভবনা গ্রামের কৃষক ও ঘের মালিকরা চরম অসহায় হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে মাসকাটা সাব প্রজেক্ট পানি সরবরাহ সমবায় সমিতির সভাপতি সমরপন দাশ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন জাল পাটা ভেশাল দেওয়া ব্যাক্তিরদের স্বঃ স্বঃ উদ্যোগে সরিয়ে নেওয়ার জন্য একাধিকবার বলা হলেও তারা তার কোন তোয়াক্কাই করছে না।

বেতাগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুস আলী শেখ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমি বহুবার তাদেরকে সরকারী খাল হতে জাল পাটা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলেছি কিন্তু তারা তাতে কোন কর্ণপাত করছেনা। এব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সরকার বিশষজ্ঞ স্বপন দাশ এর সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন প্রশাসনের মাধ্যমে অচিরেই অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ জাল পাটা অপসরণ করা হবে বলেও তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত