বাগেরহাটে সোনালী ফসলের হাতছানি,তবুও শঙ্কিত কৃষক

জোবায়ের ফরাজী

আপডেট : ০২:৫০ পিএম, সোমবার, ২০ এপ্রিল ২০২০ | ৭৭৪

বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কৃষি। তাই,প্রতি বছরই সোনালি ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন নিয়ে বিলের জমি জুড়ে বোরো ধান চাষ করেন কৃষকরা। চলতি বছরও অনেক আশা নিয়ে জমি আবাদ করেছিলেন তারা। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু পাকা ধানের মধুর ঘ্রাণে মাতোয়ারার পরিবর্তে সোনালী ফসল ঘরে তোলা নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে যানবাহন বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা আসতে পারছেন না ফলে বাগেরহাটসহ সমগ্র দক্ষিনাঞ্চল জুড়ে শ্রমিকদের তীব্র সংকট রয়েছে। নগদ টাকা সঞ্চয় না থাকা,ধান কাটায় ব্যবহৃত কাচি মেরামতের জন্য কামারের দোকান বন্ধ থাকায় ধান কাটার উপকরণের সংকট রয়েছে। পাশাপাশি বৈরী আবহাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। ফলে ঘরে ধান তোলা নিয়ে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলার কয়েক হাজার কৃষকের।

কৃষকেরা বলছেন, “প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধান কাটার জন্য শ্রমিক আসে কিন্তু তারপরও তীব্র শ্রমিক সংকট দেখা দেয়। এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে কোনো অঞ্চল থেকেই শ্রমিক আসতে চাচ্ছে না। আগামী ৭ দিনের মধ্যে জমির পাকা ধান কাটতে না পারলে বন্যায় ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে। বৈশাখ মাসেই ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে,জমিতে পানি জমা হবে ফলে পাকা ধান আর কেটে ঘরে আনা যাবে না। ফলে তির পরিমান হবে প্রায় কয়েক কোটি টাকা”।

স্থানীয় কৃষক ইশারাত আলী হায়দার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, “অতীতের তুলনায় এ বছর ফসল ভালো হয়েছে। আমন আবাদে ধান পাকার পরেও ধান কাটতে হাতে কিছু সময় পাওয়া যায়। কিন্তু ইরি-বোরো মৌসুমে নানান রকম প্রাকৃতিক দূর্যোগ লেগেই থাকে। পরবাসী শ্রমিকের সংকট, আবার এলাকার শ্রমিকও সংক্রমণ ভয়ে কাজ করতে চাচ্ছে না”। সরকার যদি উপজেলার কৃষকদের ধান কাটার যন্ত্র দেন, তাহলে তারা নিজেরাই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রঘুনাথ কর বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, “বাগেরহাট জেলায় বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। তাই,আমরা শ্রমিক ও ধান কাটার যন্ত্রপাতিগুলো প্রস্তুুত করেছি। যাতে আগামী মে মাসের পনের তারিখের মধ্যে ধান কেটে কৃষকরা ঘরে তুলতে পারে। এবছর ৫২ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড বোরো আবাদ হয়েছে। যার ল্যমাত্রা ২ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিকটন ধান”। ল্যমাত্রার চেয়েও এবার বোরো ফসল বেশী সুতরাং এতো চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান এ কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত