মোংলায় ব্যবসায়ীর কাছে কোটি টাকা চাঁদা দাবী

মোংল প্রতিনিধি

আপডেট : ০৫:১৮ পিএম, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৬০৯

অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোংলা বন্দরের এক ব্যবসায়ীকে কোটি টাকা চাঁদা চেয়ে হুমকি দিয়ে প্রভাবশালী প্রতারক চাঁদাবাজ চক্র। রফিকুল ইসলাম বাবলু নামের ওই চাঁদাবাজ চক্রটি বিভিন্ন সময় ওই ব্যাবসায়ীর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু নতুন করে আরও এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস নুরু এন্ড সন্স কোম্পানীর ম্যানেজারকে আগ্নেয়াস্ত্র¿ দেখিয়ে ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। এঘটনায় মোংলা বন্দর ব্যাবহারকারী মের্সাস নুরু এন্ড সন্স কোম্পানীর ম্যানেজার সাধন কুমার চক্রবর্তী বাবলুকে আসামী করে চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস নুরু এন্ড সন্স কোম্পানীর মালিক এইচ এম দুলাল তার ব্যবসা-বাণিজ্য ইতিমধ্যে আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। এতে ঈশ্বান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষ ব্যবসায়ীরা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার স্বরজন্ত্র চালাতে উঠে পড়ে লাগে। সম্প্রতি মোংলা বন্দর জেটির সম্মুখভাগ থেকে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার নদী খননের আর্ন্তজাতিক ভারতী ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রায়তিকুশাল সি ঈগল ড্রেজিং জেভি’র সাথে ফুয়েল (জ¦ালানী তেল) সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ করেন ব্যাবসায়ী এইচ এম দুলাল। তাদের চুক্তি অনুযায়ী এবং ড্রেজিং কোম্পানীর চাহিদা মোতাবেক তেলও সরবরাহ করেন এইচ এম দুলাল। কিন্তু তেল সরবরাহের মূল্য হিসেবে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রায়তীকুশাল সি ঈগল ড্রেজিং জেভি’র কাছে মের্সাস নুরু এন্ড সন্স কোম্পানী এর মালিক এইচ এম দুলাল প্রায় ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা পাওনা হন। এরই মধ্যে পাওনা টাকার ৩৬ লাখ ২২ হাজার ৮০০ এবং ১ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক দেয় প্রায়তীকুশাল সি ঈগল ড্রেজিং জেভি। কিন্তু ওই চেকের টাকা ছাড় করাতে বাঁধা হয়ে দাড়ায় প্রায়তীকুশাল সি ঈগল ড্রেজিং জেভি’র (ডিসিআই) বাংলাদেশের স্থানীয় এজেন্ট খুলনাস্থ সিগমা শিপিং লাইন্সের মালিক রফিকুল ইসলাম বাবলু। সে ওই টাকা ছাড় করাতে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে বলে মোংলা থানায় রুজু করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের দাবী কৃত চাঁদার ওই টাকা দিতে অস্কৃতি জানায় মের্সাস নুরু এন্ড সন্স কোং এর মালিক এইচ এম দুলাল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৬ আগষ্ট প্রকাশ্যে মোংলা বন্দরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিল্ডিং চত্বর এলাকায় মের্সাস নুরু এন্ড সন্স কোম্পানীর ম্যানেজার সাধন কুমার চক্রবর্তীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে বাবলুসহ তার বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা। এ সময় সাধনের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে বাবলু তার বাহিনী নিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে।

পরে মের্সাস নুরু এন্ড সন্স কোং এর ম্যানেজার সাধন কুমার চক্রবর্তী এ ঘটনায় বাগেরহাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রফিকুল ইসলাম বাবলুকে আসামী করে চাঁদাবাজীর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে মোংলা থানা পুর্লিশকে নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশে মোংলা থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে বলে জানিয়েছেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী।

তিনি জানান, থানায় চাঁদাবাজী মামলা রেকর্ড হলেও মামলার আসামী বাবলু পলাতক রয়েছে। তবে এ মামলার অভিযুক্ত আসামী বাবলুকে আটকে পুলিশের তৎপরতা চলছে। এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বাবলুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত