কলা-কচু ব্যবসায়ীর ও রক্ষা নেই 

চিতলমারীর হাট-বাজারে ইজারার নামে চাঁদাবাজি

চিতলমারী প্রতিনিধি

আপডেট : ০৬:৩৬ পিএম, বুধবার, ১৯ জুন ২০১৯ | ৫৩৪১

চিতলমারীতে হাট-বাজারে প্রভাবশালী ইজারাদারদের ইজারা (খাজনা) আদায়ের নামে চাঁদাবাজিতে সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। ওই ইজারাদাররা (খাজনা আদায়কারী) সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বছরের পর বছর সকল স্তরের ব্যবসায়ীদের কাছ নির্ধারিত ইজারার থেকে কয়েক গুণ বেশি ইজারা গ্রহণ করছেন। তাদের হাত থেকে কলা-কচু ব্যবসায়ীরাও রেহাই পাচ্ছে না। ইজারাদারদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এ সকল অভিযোগ তুলে ধরে জনসাধারনের পক্ষে মোঃ মতিয়ার রহমান শেখ নামের এক ব্যাসায়ী, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, চিতলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।


চিতলমারী বাজারের মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী মোঃ মতিয়ার রহমান শেখ স্থানীয় বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, প্রতি বছর এলাকার প্রভাবশালী ইজারাদার মোঃ নজরুল ইসলাম ও তার দোসররা হাট-বাজার ইজারা আদায়ের নামে প্রতিটি আড়ৎ থেকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আদায় করে আসছে। তারা সরকারি সব নিয়ম নীতিকে উপেক্ষা করে যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে। তাদের হাত থেকে কলা-কচু ব্যবসায়ীরাও রক্ষা পাচ্ছে না। এ উপজেলার নীরিহ ধান, চিংড়ি, সাদা মাছসহ সবজি চাষি ও কৃষকদের রক্ত চুষে নিতে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা মানুষকে ফাঁকি দিতে বাজারে খাজনা আদায়ের কোন রেট চার্ট টানায়নি। মানুষজন বাড়িতে বসে মালামাল বিক্রি করলেও ইজারাদারের সন্ত্রাসী বাহিনী দানবের মত সেখানে গিয়ে হাজির হয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে আসে। শুধু তাই নয় ওই সকল ইজারাদাররা বেশী দামের হাট-বাজার কম ইজারায় ডেকে নিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। তারা মানুষকে ঠকিয়ে নিজেরা ভোগ বিলাসের জীবন-যাপনে মত্ত হয়ে উঠেছে। গত বছর ৩৭ লাখ টাকা হাটের ডাক হলেও এ বছর ২৯ লাখ টাকা দিয়ে চিতলমারী হাট ডেকে তারা কয়েক কোটি টাকা ইজারা আদায়ের মিশনে নেমেছেন। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনে দিনে চিতলমারী উপজেলার মানুষ ফুঁসে উঠছে। এই ইজারার নামে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে যে কোন সময় সাধারন মানুষ ও ইজারাদার বাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

বুধবার বিকেলে চিতলমারী সদর বাজারের ফুটপাতের কয়েকজন কলা-কচু ব্যবসায়ী নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, সপ্তাহে শনিবার ও বুধবার হাটের দিন ইজারা নেওয়ার কথা থাকলেও ফুটপাতের দোকানদারদের কাছ থেকে প্রতিদিন ইজারার টাকা আদায় করা হয়। এ সকল ব্যবসায়ীরা ইজারাদার কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন এমপি’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


চিতলমারী সদর বাজারের হাট-বাজারের ইজারাদার মোঃ নজরুল ইসলাম ইজারার নামে চাঁদাবাজি করার বিষয়টি অস্বীকার করে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, সরকারি নিয়ম মেনেই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইজারার টাকা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেও তিনি দাবি করেন।


তবে চিতলমারী উপজেলার নবাগত নির্বাহী অফিসার মোঃ মারুফুল আলম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, অভিযোগ পত্রটি এখনও হাতে পাননি। পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত