দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়ার মধ্যেও

পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত সুন্দরবন

মাসুদ রানা, মোংলা

আপডেট : ১২:৫৫ পিএম, শুক্রবার, ৭ জুন ২০১৯ | ১০০৭

টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সুন্দরবনের করমজলসহ বিভিন্ন আকর্ষনীয় স্থান। দূর্যোগপুর্ন আবহাওয়া আর বৃস্টির মধ্যেও ৫ দিনের ছুটির জন্য সুন্দরবনে আসতে শুরু করে দেশী-বিদেশী পর্যটকরা। কিন্তু ঈদের ছুটি আর বৈরী আবহাওয়া মৌশুম অতিবাহিত হলেও কয়েকদিন পরেই শুরু হবে মুষলধারার বৃষ্টি। তার মধ্যেও বুধবার থেকে রোববার পর্যন্ত একটানা পাঁচ দিনের ছুটি পেয়েছে দেশ বিদেশী পর্যটকরা। দুর্যোগপুর্ন আবহাওয়া আর গুরি গুরি বৃস্টিতে এখন বন জুড়ে রয়েছে পর্যটকদের ঢল। আর পর্যটকদের টানা এই আনাগোনা থাকবে আরো বেশ কয়েকদিন বলে জানিয়েছেন বনবিভাগ।


করমজল বন্যপ্রানী সংরক্ষন আর পর্যটন কেন্দ্রের কর্মকর্তা ফরেষ্টার আজাদ কবির বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, শীত মৌশুম হলো সুন্দরবনে পর্যটকদের ঘুরে দেখার সময়। কিন্তু এখন গরম মৌসুম তার মধ্যে পবিত্র ইদুল ফিতরের টানা ছুটি। আর এই ছুটিতে এখানে প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪ সহস্্রাধিক পর্যটক করমজল পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে আসছে। এছাড়া বনের হাড়বাড়িয়া, হিরণপয়েন্ট, কটকা, কচিখালী ও দুবলাচর সহ বিভিন্ন স্পটেও প্রচুর দর্শনার্থী ভ্রমনের সুযোগ থাকলেও প্রচুর বৃস্টি হওয়ায় সেখানে যেতে পারছেনা ভ্রমন পিপাশুরা, আর তাই এ ভিরটা করমজল অফিসকেই সামাল দিতে হচ্ছে।


প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী চাপ সামলাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বল্প সংখ্যক বনের কর্মচারীদের। তারপরও পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিরলস কাজ করছে তারা। এছাড়াও ঈদুল ফিতর উপল্েয করমজল পর্যটন কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটিও বাতিল করে তাদের ঈদ করা হয়েছে অফিসে।

দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সুন্দরবন ভ্রমনে আসা পর্যটকরা সাধারণ মোংলা হয়েই বনে প্রবেশ করে থাকেন। আর মোংলা থেকে সবচেয়ে কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান হলো সুন্দরবনের করমজল। এখানে রয়েছে কুমির বন্য প্রানী প্রজনন কেন্দ্র। যাতে রয়েছে মায়াবি হরিন,বানর, ৭/৮ সাইজের লবন ও মিস্টি পানির কুমির। এগুলো দেখার পরেও উপভোগ করে বনের হরেক রকম সৌন্দায্য। যেসব পর্যটকরা অধিক ব্যয়ে বনের গহীনে যেতে পারেন না তারা স্বল্প খরচেই করমজল ঘুরে দেখেন। করমজলে পর্যটক স্পটে সম্প্রতি গড়ে উঠেছে আরো একটি কচ্ছপের প্রজনন কেন্দ্র। এছাড়া রয়েছে কৃত্রিম পদ্ধতি তৈরি ছাড়া হরিণ ও বানরের আবাসস্থল, সুউচ্চ ওয়াচটাওয়ার, ফুট টেইলারসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থাপনা। এছাড়া বনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-পালা, পশু-পাখি, বন্যপ্রাণী দেখে দর্শনাথীরা তাদের তৃপ্তি মিটিয়ে থাকেন। তবে সুন্দরবনের এ সকল পর্যটন ষ্পটগুলোকে আরো বেশি আকর্ষনীয় করে গড়ে তোলা হলে দিনকে দিন পর্যটকের সংখ্যা আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে।


মোংলা সিঙ্গাপুর হোটল ব্যাবসাযী মোঃ হিরো মিয়া বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এবারের ঈদে একটানা পাঁচ দিনের ছুটিতে আমাদের হোটেল গুলো বেশ জমজমাট। প্রতিটি হোটেলে এক সপ্তাহ আগ থেকে বুকিং করা শুরু হয়েছে। বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দুর দুরান্ত থেকে অনেক পর্যটক এসে ফিরে গেছে। আমার হোটেলে শতাধিক ছিট আগে থেকেই খালী ছিলোনা।


মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) তুহিন মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এবারের ঈদে সরকারী ছুটির কারনে সুন্দরবন পর্যটকদের আনাগোনা অনেক তুলনায় বেড়ে গেছে। সরকারী উচ্চ পর্যয়ের কর্মকর্তরা এই ছুটিতে সুন্দরবনের সৌর্ন্দয্য দেখতে এখানে আসে, আর তাদের নিরাপত্তার দেয়ার জন্য আমাদের পুলিশ সদস্যদের সাথে দিতে হয়। সল্প সংখ্যক সদস্য থাকার পরেও পর্যটকদের প্রতিনিয়ত পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিয়ে আসছে। তার পরেও আমরা আনন্দিত,যতই দিন যাচ্ছে সুন্দরবনের পর্যটকদের পদচারনা আরো বারছে। তবে বন বিভাগের উচ্চ মহলের নজরদারীটা একটু বাড়ালে বনের এ পর্যটক ক্ষাত থেকে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত