আজ ৭ ডিসেম্বর
মোংলা ও সুন্দরবন এলাকা মুক্ত দিবস
আপডেট : ১০:৩৯ এএম, শুক্রবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৯৫১
আজ ৭ ডিসেম্বর মোংলা ও সুন্দরবন এলাকায় হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাকহানাদারদের হটিয়ে দিয়ে এই এলাকা মুক্ত করেছেন এ অঞ্চলের বীর মুক্তি সেনারা। পাক সেনাদের তাড়িয়ে উড়ানো হয়েছিল বাংলার লাল সবুজের পতাকা। মোংলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ফকির আবুল কালাম আজাদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ৯ নং সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর এম এ জলিল। সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবঃ) জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ ও কবির আহমেদ মধুর নেতৃত্বে এখানকার মুক্তিযোদ্ধারা সুন্দরবনে ৫টি ক্যাম্প স্থাপন করে।
এসময় সুন্দরবন ইউনিয়নের দামেরখন্ড এলাকায় চলেছিল পাকহানাদারদের নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার নারী নির্যাতন ও গন হত্যা। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই এলাকার কুক্ষ্যাত রাজাকার কমান্ডার রজ্জব আলী ফকিরসহ তার সহযোগীদের নির্দেশে উঠিয়ে নিয়েগেছিল অনেক যুবতী ও গুহবধুকে। তার মধ্যে এলাকার গৃহবধু তরুলতা শীল নামের একজনকে ধরে নিয়ে আটকে রাখে প্রায় সাড়ে ৩ মাস।
এসময়কালে প্রতি দিন রাত তার উপর চলে পাষবীক ও শাররীক নির্যাতন। পরে স্থানীয় এক লোকের সহায়তায় ফিড়ে পায় তার আপনজনদের বলে দাবি করেন অজিৎ কুমার পরামানিকের স্ত্রী তরুলতা শীল। সেই স্মৃতি আর কষ্টের কথা বুকে নিয়ে আজও বেচে সেই বিরঙ্গনা নারী। মুক্তিযোদ্ধাদের গঠন করা ওই ৫টি ক্যাম্প থেকে পাক সেনাদের বিরুদ্ধে শুরু করে সম্মুখ যুদ্ধ। মুক্তিসেনারা ৪ ডিসেম্বার মোংলায় প্রবেশ করলে পাক সেনাদের সাথে পর্যাক্রমে খন্ড খন্ড সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়।
৬ ডিসেম্বার মোংলা,মোড়লগঞ্জ,রামপাল,শরনখোলা উপজেলা থেকে পালিয়ে যায় পাক সেনারা। সেনা কর্মকর্তাদের তত্বাবধয়ানে এই সুন্দরবনের ক্যাম্পগুলোতে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। আর সুবিধা বুঝে আক্রমন করা হতো মোংলা, রামপাল, শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন এলাকার পাকবাহিনীর ক্যাম্পগুলোতে। এছাড়া বিভিন্ন বয়সের লোকজনকে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য উদ্ভুদ্ধ করতো এখানকার বীর সেনারা। আজ ৭ ডিসেম্বার এই দিনে মোংলা ও সুন্দরবনের সর্বত্র মুক্তি যোদ্ধাদের দখলে চলে আসে। এই দিন মুক্ত হয় সুন্দরবন ও মোংলাসহ এর আশপাশ এলাকা।