উদ্ভাবিত উন্নত জাতের ধানের নাম কচুয়ামতি

কচুয়া প্রতিনিধি

আপডেট : ০৪:১৫ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২৩ আগস্ট ২০১৮ | ১৯৭৮

ধান বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য শস্য। আবহমান কাল থেকে এদেশে আউশ, আমন, ও বোরো মৌসুমে ধান উৎপাদন হয়ে আসছে কিন্তু বিগত কয়েক দশকে আউশ মৌসুমে ধান উৎপাদন লক্ষণীয় মাত্রায় কমে গেছে। যেখানে ১৯৮০-৮২ সালে আউশ ধানে উৎপাদন হত প্রায় ৩১ লক্ষ হেক্টর জমিতে। সেখানে ২০১৭ সালে উৎপাদন হয় মাত্র ৯ লক্ষ হেক্টরে। এর ফলে আউশের হরেক রকমের সুসাধু ধান আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। আউশ মৌসুমে ধানের এই অবস্থা লক্ষ করে কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী কৃষি বিজ্ঞানীদের আউশ ধানের গবেষনার প্রতি মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দেন।


কৃষি মন্ত্রীর বক্তব্যে উদ্ধুব্ধ হয়ে গ্রীন বাগেরহাট এগ্রো অর্গানিক লিমিটেড দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে বিলুপ্তি প্রায় কিছু সুগন্ধি ধানের বীজ সংগ্রহ করে। এরপর শেরে বাংলা কৃষি বিশ^ বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ মোঃ ওবাইদুল ইসলাম ও এই প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক হাশেম জামানের নেতৃত্বে বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার দরিচর মালিপটন গ্রামে স¤পূর্ন নতুন এক উৎপাদন পদ্ধতিতে উৎপন্ন করে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাংখিত ফলাফল পেতে সম হন।


তারা সেখানে দুইটা জাতকে “ফর্টোপিরিয়ড ইনসেনসিটিভ” হিসেবে সনাক্ত করেন। এর মধ্য একটি জাতকে তারা “কচুয়ামতি” নামে নামকরণ করেন। যার ফলন প্রায় ২০ মন প্রতি বিঘা যেখানে আমাদের দেশের গড় ফলন মাত্র ৮.৫-৯ মন প্রতি বিঘা। অপর একটি জাত কুশি উৎপাদন এবং ফলনে ওই এলাকার মানুষের মধ্য আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

এ ক্ষেত্রে মাত্র ০১টি ধানের চারা থেকে ২৯৮ থকে ৩৩০ টা পর্যন্ত কুশিউৎপাদন হয়েছে যা রীতিমত বিশ্ব রেকর্ড।


ডঃ ওবায়েদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এেেত্র আমরা সঠিক সময়ে সুষম জৈব সার ও পরিচর্যার দ্বারা একটা ধান বীজের কুশি ও ধান উৎপাদনের সমতা বা পটেনশিয়ালিটি পরীা করতে চেয়েছি যার দ্বারা বিশে^ এযাবৎ কালের সর্বোচ্চ সংখ্যক কুশি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি।


এর আগে নেপালে একটা ধানের চারা থেকে সর্বোচ্চ ১৮৫ পি কুশি উৎপন্ন হয়েছিল। আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই জাতটির নামকরণ করা করা হয়েছে “হৈচৈ” অপরদিকে গ্রীন বাগেরহাট অর্গানিক এগ্রো লিমিটেড প্রধান মন্ত্রীর কোন এক বক্তব্যের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, বঙ্গবন্ধু “লক্ষীদিঘা” নামে একটি ধানের চাষের ভাত খেতে বেশি পছন্দ করতেন। এই ধানটিও আজ বিলুপ্তি প্রায়। এই ধানটি মূলত নিম্ম ভূমিতে হয়। কিন্তু বর্তমানে ওই কোম্পানী ধানটি মধ্যম উচু বা ভূমিতে ফলানো যায় কিনা সে বিষয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই গবেষণা সফল হলে এই ঐতিহাসিক ধানটি সারা দেশব্যাপী উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে বিশ্বাস করেন।


গ্রীন বাগেরহাট অর্গানিক লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী আকবার মিন্টু বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন গত জানুয়ারী মাসে ২৮ তারিখ কৃষি মন্ত্রীর এক অনুষ্ঠানে আউশ ধানের উপর গবেষণা করতে বলেন। তার বক্তব্য পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরে আমরা আমাদের বাগেরহাট-০২ আসনের সংসদ সদস্য স্যার আলহাজ¦ মীর শওকাত আলী বাদশার অনুপ্রেরনায় আউশ এর ক্যালেন্ডার অনুস্বরন করে আমরা আউশ ধানে চাষের সিদ্ধান্ত গ্রহন করি। যাহা জাতীয় পরিসংখ্যান এর চেয়ে উৎপাদন হয় দ্বিগুন।

সম্প্রতি এই ধান চাষের প্রদর্শনী ও চাষের স্থান পরিদর্শন করেন মৎস্য ও প্রানি সম্পদ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ্যাড.মীর শওকাত আলী বাদশা, এসময়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাশ্বতী এদবর,কচুয়া উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক শিকদার কামরুল হাসান কচি,যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আজাদ হোসেন বালি, গ্রীন বাগেরহাট অর্গানিক লিঃ এর চেয়ারম্যান খোন্দকার আকমল উদ্দিন সাখী।

পরিদর্শনকালে অতিথিবৃন্দ সন্তোষ প্রকাশ করেন। এসময়ে এক আলোচনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য উদ্ভাবিত উন্নত জাতের এ ধানের নাম কচুয়ামতি নাম করণের প্রস্তাব করেন। এসময়ে উপস্থিত কৃষি সম্পৃক্ত অতিথিরা এর আঞ্চলিক নাম কচুয়ামতি নাম হবে বলে আশ্বাস দেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত