৫ জনের অবস্থা অশংঙ্কা জনক, উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি

মংলায় দু- দল গ্রামবাসির সংঘর্ষে নারী ও পুরুষসহ ৩০ জন আহত

মংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৪:৪৭ পিএম, সোমবার, ২১ মে ২০১৮ | ১১৯৮

মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় মংলায় আওয়ামীলীগ দলীয় সাবেক ও বর্তমান মেম্বর সমর্থকদের দু’গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে নারী - পুরুষসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। সোমবার সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার চাদঁপাই ইউনিয়নের কানাইনগর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ৫জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

এদিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনলেও গ্রামবাসির মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও গ্রামবাসিরা জানান, কানাইনগড় আবাসন প্রকল্পের একটি বাড়িতে অনুপ্রবেশ ও সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে মাদক (গাঁজা) সেবনে মগ্ন হয় একদল যুবক। এছাড়াও মংলা বন্দরের বানিজ্যিক জাহাজের মালামাল ক্রয়ের ব্যাপার নিয়ে সাগর নামের এক যুবককে মারধর করে আলমগীর ও তার দলবল। এ মারামারীতে আপত্তি ও বাঁধা দিলে ইউপি মেম্বর মোঃ সেলিম ও আওয়ামী নেতা হাসেমের গ্রুপের সাথে সাবেক মেম্বার সুলতান-জাকির গ্রুপের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে কানাইনগর আবাসনের বাড়ির মালিক আলমগীর ও তার লোকজনের উপর হামলা চালায়।


গত রোববার বিকালে এ হামলার ঘটনায় আহতদের হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ৫জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ভর্তি করা হয়। পরদিন সোমবার সকাল ৭টার দিকে বর্তমান মেম্বর সেলিম-হাসেম গ্রুপের লোকজন সুলতান ও জাকিরের লোকজনকে দেখতে পেয়ে তাদের দ্বিতীয় দফায় আবারও হামলা ও সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। আর এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ দলীয় সাবেক মেম্বর সুলতান-জাকির গ্রুপ এবং বর্তমান মেম্বর সেলিম-হাসেম গ্রুপের লোকজন ব্যাপক হামলা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত দু’গ্রুপের সমর্থকরা লাঠি-সোটা ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পরস্পরের উপর মারমুখি হামলায় লিপ্ত হয়। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী এ সংঘর্ষে নারী-পুরুষ ও শিশু সহ অন্তত (৩০) জনকে গুরুত্বর অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় ।

আহতরা হচ্ছে মেম্বার সেলিম গ্রুপের আলমগীর (৩৫), বিলকিস (২৫), পারুল (৩৬), কমলা বেগম (৩৪), আনোয়ার (৩৮), অহিদুল (৩৮), মুনসুর (৫০), খোকন (৪০), মিনু বেগম (৩০), আখি বেগম (২৬)। এছাড়া সুলতান ও জাকির গ্রুপের সুমন (১৫), নয়ন (২৭), নজরুল (৩৫), নোনা (২৬), বেল্লাল খানঁ (৩৬), রাজু (২৬), মোঃ জাকির (২৮), সুলতান হাওলাদার (৬০), রিনা বেগম (২৮), ইয়াছমিন (২৬), ছাহেরা বেগম (৬৭), বেবি বেগম (৪০), রওশনারা (৬৬), নয়ন মুন্সি (৩৫), বাবলু হাওলাদার (৩৮),আফজাল (৩৬), নয়ন (২২), মোঃ নাজিম (৩মাস), তাজমিন (৩) ও সাগর (১৫)।

এ সংঘর্ষে ৫জনের অবস্থা অশংকা জনক। আহতদের মধ্যে আলমগীর,বিলকিস,বাবলু,রিনা ও নয়নকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরী ভিত্তিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ নিয়ে ওই গ্রামটিতে দু’গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ প্রসঙ্গে বর্তমান মেম্বর সেলিম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় সুলতান-জাকির মেম্বর গ্রুপের লোকজন গ্রামের নিরীহ লোকজনের ওপর আতর্কিত হামলা চালায়। এতে অনেক নারী-পুরুষ গুরুত্বর আহত হয়েছে।

তবে পাল্টা অভিযোগ করে সাবেক মেম্বার সুলতান হাওরাদারের ছেলে জাকির বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, কালা মজিদ, মেম্বার সেলিম ও হাসেম গ্রুপের লোকজন পরিকল্পিত ভাবে ওই হামলার ইন্দন জোগায়। তবে মুল ঘটনা জাহাজ কেন্দ্রিক দু’ ফেরিওয়ালার ব্যবসার বিরোধ ও রেশ ধরে সাগরকে মারধর করে আলমগীর। এতে সাগরের মা রিনা বেগম প্রতিবাদ করলে সেলিম গ্রুপের ৩০/৩৫ জন লোক এসে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আমাদের প্রায় ২০/২৫ জন লোক গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়েছে। বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মংলা থানায় পরস্পর বিরোধী অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

মংলা থানার অফিসাস ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, কানাইনগর এলাকায় দু’পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এব্যাপারে এখনও কোন পক্ষ থানায় আসেনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত