মোংলায় চাঁদা না দেয়ায়  কিশোরকে কুঁপিয়ে রক্তাক্ত জখম ও হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা

মাসুদ রানা, মোংলা

আপডেট : ১১:৩৬ পিএম, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | ৩৯২

মোংলায় পুর্ব শত্রুতার জেরে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এক কিশোরকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম ও পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে ওই এলাকার নারী ইউপি সদস্যের নিজেস্ব অফিস থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বিকালে উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের বকুলতলা খেয়া ঘাট নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে থানায় এজাহার দাখিল হয়েছে।



ভুক্তভোগী পিতা মোঃ বিল্লাল কাজী জানায়, গেল জানুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার পরিবারের সদস্যরা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক হিসেবে প্রচার প্রচারনা ও সমর্থন করছিলো। আর আসামীরা নৌকার বিপক্ষে ঈগল প্রতীকের হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছিলো। ওই সময় ঈগলের পক্ষে সমর্থন ও ভোট না দেয়া ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষরা একজোট দলবদ্ধ হয়ে অন্যায়ভাবে আমার পুত্র আঃ কাদের কাজী (১৮) কে বেদমভাবে মারপিট করে এবং কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ ঘটনা নিয়ে আসামীদের নামে মোংলা থানায় মামলাও করা হয়, যা বিচারাধীন আছে। জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের প্রাথী বিজয় লাভ করলে আসামীরা গাঁ ঢাকা দেয়। এ নিয়ে আসামীদের সাথে পুর্ব থেকেই শত্রুতা চলে আসছিলো। কিছুদিন পূর্বে তারা পুনরায় এলাকায় ফিরে আসে এবং তাদের নামে মামলা করার কারণে আমাকে ও আমার পুত্রকে ভয়ভীতি ও জীবন নাশের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে আসছিল। সেই সাথে এলাকায় বসবাস করতে হলে মামলা খরচ বাবদ তাদের (দুই লক্ষ) টাকা চাঁদা দিতে হবে মর্মে শ্বাসাচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করে। জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে সমর্থন করার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ক্ষোভের বশবর্তী ও আক্রোশে গতকাল বিকাল ৫টার দিকে সোনাইলতলা কাটাখালী ২০০ মিটার ব্রিজের পাশে রাস্তার উপর বসে থাকা অবস্থায় আমার ছেলে আঃ কাদের কাজীকে জোর পুর্বক তুলে নিয়ে যায় এবং বকুলতলা খেয়াঘাট নতুন বাজারে এক মহিলা মেম্বরের অফিসের মধ্যে নিয়ে এলোপাথারীভাবে মারধর করতে থাকে। ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামীদের হাতে থাকা রাম দা দিয়ে পুত্রের মাথায় কোপ দিলে রক্তাক্ত জখম হয়। আসামীরা প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা ধরে অফিস ঘরে আটকে হাতুরী, লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়, যা ডাক্তারের পরিক্ষা-নিরিক্ষায় ধরা পরেছে। আসামীদের মারপিটে আমার ছেলে অজ্ঞান হয়ে পরলে মাটিতে ফেলে রাখে এ সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে আমি এবং আমার স্ত্রী ঘটনাস্থলে গেলে আসামীদের হাত থেকে ছেলেকে উদ্ধার করতে না পেরে ৯৯৯ ফোন দিলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ আসলে ছেলেকে অচেতন অবস্থায় রেখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। সেখান থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। উল্লেখ্য, যারা এই কিশোরকে তুলে নিয়ে ঘরে আটকে রক্তাক্ত জখম করেছে তারা আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত বনদস্যু গামা বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হাবি সহ অন্যান্যরা। তাদের নামে মোংলা থানা সহ বিভিন্ন জায়গায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও এজাহরে উল্লেখ করে ভুক্তভোগীরা।


এ ব্যাপারে পিতা বিল্লাল কাজী বাদি হয়ে ইনছান মল্লিকের ছেলে মহিদুল মল্লিক, ইছাহাক মল্লিকের ছেলে ফয়সাল মল্লিক, মোয়াজ্জেম মল্লিক ওরফে সোনা ও শাকিল মল্লিক, নূরমিয়া মল্লিকের ছেলে সাগর মল্লিক, হাসেম মল্লিকের ছেলে সাইফুল্লাহ মল্লিক ও হাবি মল্লিক, মবিন মল্লিকের ছেলে আজিজ মল্লিক সহ আরো ৩-৪ জনকে আসামী করে মোংলা থানায় এজাহার দাখিল করেছে।



মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ কল পেয়ে একদল পুলিশ পাঠিয়ে মারধরের শীকার কিশোর কাদের কাজী (১৮)কে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে মোংলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলেও জানায় থানার এ কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত