সুপেয় পানির সংরক্ষন প্রকল্প পরির্দশনে মোংলায় ডেনমার্ক রাষ্টদুত

মাসুদ রানা, মোংলা

আপডেট : ০৯:৪৯ পিএম, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৪ | ২৭১

সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলীয় লবনাক্ত এলাকায় প্রতিষ্ঠান ভিক্তিক বৃস্টির পানি সংরক্ষন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে আসলেন ডেনমার্ক’র রাস্ট্রদুত এইচ ই মিস্টার ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার সহ ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। বুধবার সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মোংলা উপজেলা ৬টি ইউনিয়নে ডেনমার্ক অর্থায়নে গ্রহন করা প্রকল্পের কাজগুলো পরিদর্শন করেণ তারা। সুন্দর ও সঠিকভাবে এ উপকুলীয় অঞ্চলের মানুষ যদি প্রকল্পের সুফল ভালবাবে পায় তা হলে আগামীতে আরো বড় প্রকল্পের কাজ করার কথা জানালের এ রাষ্ট্রদুত।



ব্র্যাক সুত্রে জানায়, দিন যতই বাড়ছে সুন্দরবন সহ মোংলা পকুলীয় এলাকায় ততই লবনাক্তার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে মিষ্টি পানির অভাবে দিনকে দিন দিশেহারা হয়ে পরেছে মোংলা উপজেলার সাধারণ মানুষ। তাই খাওয়া ও সাংসারিক কাজে ব্যাবহারে জন্য বৃষ্টির সুপেয় পানি সংরক্ষণ করতে ডেনমার্ক অর্থয়নে জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসুচির আওতায় প্রতিষ্ঠান ভিক্তিক বৃষ্টির পানি সংরক্ষন পদ্ধতি নামের একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়। ডেনমার্ক’র অর্থায়নে ২০২২ সালে জুলাই মাসে ৩৮ কোটি টাকা ব্যায় গ্রহন করা এ প্রকল্পটির পরিচালনা ও বাস্তবায়ন করছে ব্র্যাক। প্রকল্পের মধ্যে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ২ হাজার লিটার করে ৫ হাজার ৪০০ পরিবারকে দেয়া হয়েছে পানির ট্যাঙ্ক। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে ২টি পুকুর সংরক্ষন করে মিষ্টি পানি বিশুদ্ধকরণের মাধ্যমে এলাকায় সরবরাহ ও ৬টি ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠান ভিক্তিক বৃষ্টির পানি সংরক্ষন পদ্ধতির ২৭টি স্থানে পানি সংরক্ষন ট্যাংঙ্ক স্থাপন করা হয়েছে। এগুলো চাঁপাই ৭টি, চিলা ৬টি, মিঠাখালী ৪টি, সুন্দরবন ৬টি, বুড়িরডাঙ্গা ৩টি ও সোনাইলতলা ইউনিয়নে ১টি স্থাপন করা হয়। এগুলোতে মোট ১০ লক্ষ ২০ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সুপেয় পানির ট্যাঙ্ক। যার নাম মাত্র প্রতি লিটার ৫০ পয়সা হারে এলাকা ভিক্তিক নির্ধারিত ৪ হাজার ৫৪৮টি পরিবার ছাড়াও অন্যান্যরা খাবারের জন্য এ নিতে পারবেন এ বিশুদ্ধ বৃষ্টির পানি। গত ২০২২ সালে জুনে শুরু হওয়া একাজ বুধবার (২৪ জানুয়ারী) দুপুরে পরিদর্শনে আসেন ডেনমার্ক’র রাস্ট্রদুত এইচ ই মিস্টার ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার ছাড়াও ঢাকার ডেনমার্ক এম্বাসির সিনিয়র এ্যাডভাইজার বিটালী তাসকিন ইসলাম, প্রকল্প পচিালক ড. মোহাম্মাদ লিয়াকত আলী, জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পে প্রকল্প কর্মকর্তা আবু শাদাত মনিরুজ্জামান খানঁ, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাওসিফ আহাম্মোদ কোরাইশী সহ ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এছাড়া প্রোগ্রাম ম্যানেজার উম্মে তানিয়া সুলতানা, প্রকল্প ম্যানেজার মোঃ শফিকুর রহমান স্বপন, এরিয়া ম্যানেজার মোঃ শাহাবুদ্দিন ও তৃপ্তি সরকার সহ আরো অনেকে এসময় উপস্থিত ছিলেন।



তবে বৃস্টির পানি সংরক্ষ প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীরা দীঘদিনের পানির সংকট থেকে মুক্তি পেয়ে খুশি উপকুলীয় এ এলাকার সাধারণ মানুষ।



তারা জানান, মোংলা ও সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় লবন পানির জন্য মানুষ পানি বাহিত সহ বিভিন্ন কঠিন রোগে রোগাক্রান্ত হচ্ছে। নারীরা জরায়ু সংক্রান্ত রোগে ভুগছে, রেহাই পাচ্ছেনা শিশুরাও। তাই এ প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষ কিছুটা হলেও সপল ভোগ করবে। অন্যান্য বিষয় না হলেও খাবার ও সংসারিক কাজে ব্যাবহারের জন্য বৃষ্টির পানি সংরক্ষন করা যাবে।



ডেনমার্ক’র রাস্ট্রদুত এইচ ই মিস্টার ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার বরাত দিয়ে ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ লিয়াকত আলী বলেন, গ্রহন করা প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান রয়েছে। যদি এর সুফল মানুষ সুন্দর ও সঠিক ভাবে ভোগ করতে পারে তা হলে আগামী অর্ত বছরের মধ্যে এক হাজার ৪০০ পানির ট্যাঙ্ক, আরো ৩টি পুকুর ও প্রতিষ্ঠান ভিক্তিক আরো ৫-৬ লক্ষ লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ১৫টি ট্যাঙ্ক স্তাপন করা হবে। এছাড়া লবনাক্ত এ অঞ্চলের মানুষের জন্য লবন সহিষ্নু ফসল উৎপাদনের সহায়তা করা হবে বলেও জানায় প্রকল্প পরিচালক।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত