বাগেরহাটে গ্রাহকদের ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও চলন্তিকা যুব সোসাইটি

শেখ আহসানুল করিম

আপডেট : ০৪:৫৩ পিএম, বুধবার, ১১ এপ্রিল ২০১৮ | ২০৬৮

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামে একটি হায়-হায় এনজিও গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিস বন্ধ করে পালিয়ে গেছে। এতে চরম হতাশায় পড়েছে কয়েক হাজার সাধারন গ্রাহক। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারন লোকজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার কুমার পাল ও রামপাল থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমানকে অবহিত করে টাকা উদ্ধারে সহায়তা চেয়েছে। সাধারন গ্রাহকরা সমবেত হয়ে বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে সমাজকল্যান মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।


ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানায়, রামপাল উপজেলায় ২০০৬ সাল থেকে উপজেলা সদর, ফয়লাহাট বাজার ও গিলাতলা বাজারে তিনটি শাখার মাধ্যমে চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামে একটি এনজিও তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে তিনটি শাখায় ব্যাবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. নওশের আলী, মানসুর ও সন্তোস মিস্ত্রী। এদের মাধ্যমে কিংকর শীল, আতাহার , ইউসুফ নামে চলন্তিকা যুব সোসাইটি কর্মরত একাধিক সহকারী ব্যাবস্থাপক এবং মাঠকর্মী এলাকায় অধিক লাভ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে খুব দ্রুত সাধারন আমানত সংগ্রহ করে। ক্ষুদ্র ঋণ দেয়ার পাশাপশি ৩ বছর ও ৬ বছরের মেয়াদের ডিপিএস কার্যক্রম শুরু করে। গত ৮ এপ্রিল থেকে চলন্তিকা যুব সোসাইটির তিনটি অফিস তালাবদ্ধ করে কর্মকর্তারা পালিয়ে যায়। রামপালের গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, রামপাল থেকে এনজিওটি প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে।

রামপালে যে সমস্ত গ্রাহকগণ বেশী ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে ,তাদের মধ্যে রোমানা পারভিন ২ লাখ ৫ হাজার টাকা, ছফরুল ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পিযুস ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বিউলি আকতার ৪ লাখ টাকা, পিযুস মিস্ত্রী ২ লাখ টাকা, উজ্জল মন্ডলের ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা রয়েছে। রামপাল উপজেলা সদর, ফয়লাহাট বাজার ও গিলাতলা বাজারে তিনটি শাখার মাধ্যমে চলন্তিকা যুব সোসাইটি কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা জামানত নিয়ে পালিয়ে গেছে। গ্রাহকরা আরও জানায়, ফয়লাহাট বাজারে চলন্তিকা এনজিও’র একটি সম্পত্তি রয়েছে। প্রশাসন সম্পত্তিটি নিজেদের জিম্মায় নেয়ার ব্যবস্থা নিলে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ সেখান থেকে ও কিছু টাকা ফেরৎ পেতে পারেন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারন মানুষ এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


চলন্তিকা সোসাইটির চেয়ারম্যান খবিরুজ্জামানের মুঠোফোন (মোবা-০১৯৬৪৫৭০৫৫৬ ) বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার কুমার পাল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, চলন্তিকা যুব সোসাইটিতে জামানত রেখে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তাকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন প্রেরন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত