লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুন জমিতে ফসল উৎপাদন

ফকিরহাটে বারি সরিষা-১৪ এর বাম্ফার ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি

পি কে অলোক,ফকিরহাট

আপডেট : ০৯:১৩ পিএম, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩ | ৬৩৫

ফকিরহাটে বারি সরিষা-১৪ এর বাম্ফার ফলন হওয়ার সম্ভাবনায় কৃষকের মুখে সোনালী হাঁসি ফুটে উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষনিক পরামর্শের কারনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুন জমিতে ভোজ্য তেল জাতীয় এই সরিষার বাম্ফার ফলন চাষ করা সম্ভব হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে কৃষি বান্ধব এ সরকারের তেলের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব হবে।


জানা গেছে, বারি সরিষা-১৪ একটি ভোজ্য তেল জাতীয় ফসল। এটা চাষ করলে অল্প খরচে চাষিরা বেশি লাভবান হয়ে তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। কম খরচে লাভ বেশি একারনেই চাষিরা এটির চাষাবাদ করে থাকেন। চাষাবাদের পর হতে মাত্র ১৭০/১৮০দিনে এই ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। যে কারনে কৃষকরা এই বারি সরিষা চাষে আগের চেয়ে এখন বেশি আগ্রহী হয়ে পড়েছেন।


বেতাগা গ্রামের দ্রব কুমার দাশ বলেন, তিনি উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে মাত্র ৫০শতক জমিতে এবার বারি সরিষার চাষ করেন। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি জমি চাষাবাদ করে বারি সরিষার চাষ করেন। বারি সরিষা চাষে সার ও সেচ পানি কম লাগে যে কারনে তিনি তার জমিতে বারি সরিষার চাষ করেছেন।

একই গ্রামের আব্দুল সামাদ বিশ্বাস বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাদেরক বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরন করেছে। এছাড়াও সামান্য পরিমানে প্রনোদনা স্বরুপ নগদ অর্থও প্রদান করা হয়। যে কারনে তারা উৎসাহী হয়ে এবছরও বারি সরিষার চাষ করেছেন। এছাড়া একই গ্রামের জাকের বিশ্বাস, মনি মোহন দাশ, আব্দুল গফ্ফার শেখ, কাত্তিক কুমার দাশ, প্রকাশ কুমার দাশ, গনেশ কুমার দাশ, অরুন মজুমদার, ধনঞ্জয় দাশ ও তন্ময় দাশ সহ একাধিক চাষিরা এই বারি সরিষার চাষাবাদ করেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এই উপজেলায় সরিষার লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬৮হেক্টর, কিন্তু তার চেয়ে দ্বিগুন জমিতে অর্থাৎ মোট ১১৫হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুন।


উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার মন্ডল ও সোলায়মান মন্ডল বলেন, আমাদের এই বেতাগা ইউনিয়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল মাত্র ২৫হেক্টর, কিন্তু তার চেয়ে অধিক জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ নছরুল মিল্লাত বলেন, বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের ভোজ্য তেলের চাহিদা মিটানোর উদ্দেশ্যে এবার বিপুল সংখ্যাক কৃষককে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে তাদেরকে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া কৃষকদেরকে মনিটরিং করার জন্য স্বঃ স্বঃ ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তারা তাদেরকে নানাধরনের পরামর্শ প্রদান করেছেন। যে কারনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুন জমিতে বারি সরিষার চাষ করা সম্ভব হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে সরকারের যে মহতি উদ্যোগ তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।


উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ স্বপন দাশ বলেন, আমরা অন্যান্য ফসলের মত সরিষা চাষেও বেশ আগ্রহী হয়ে চাষিদের নানা ধরনের পরামর্শ প্রদান করছি। তাদেরকে ভোজ্য তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন করার জন্য উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতা প্রদান করছি। তারা তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজনিজ জমিতে চাষাবাদ শুরু করেছেন। যা ভাল একটা দিক বলেও তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, কৃষকদের নিয়ে সরকারের যে পরিকল্পনা তা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত